সংবাদদাতা, করিমপুর: মুরুটিয়ার সেতুতে ‘হাইট বার’ লাগানোয় বছর তিনেক ধরে চরম সমস্যায় এলাকার মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে সমস্যার সমাধান না হওয়ায় ক্ষুব্ধ মুরুটিয়া ও দীঘলকান্দি গ্রাম পঞ্চায়েতের কয়েক হাজার মানুষ। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়ে ভারতীয় সেনাবাহিনী মুরুটিয়ার খড়ে নদীর উপরে এই সেতুটি নির্মাণ করেছিল। তারপর থেকে এই সেতুই দুই পারের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, কয়েক বছর আগে কলকাতার একটি সেতু ভেঙে পড়ার পর এলাকার বিধায়ক দুর্বল সেতুর তালিকায় এই সেতুর নাম দেওয়ায় রাজ্য সরকার এই সেতুটিকে পিডব্লুডির হাতে তুলে দেয়। প্রায় তিন বছর আগে এই সেতু সংস্কারের জন্য সরকার এক কোটি আশি লক্ষ টাকা অনুমোদনও করে। ওই টাকা ব্যয়ে সেতুর সংস্কারও হয়। অথচ তারপর থেকে সেতুর উপর দিয়ে ভারী যানবাহন আটকাতে ‘হাইট বার’ লাগানো হয়েছে। যে কারণে চরম ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন বিশেষত চাষি ও ব্যবসায়ীরা। মুরুটিয়া বাজারের এক সার ব্যবসায়ী বলেন, প্রতিদিন আমার দোকানে একটি করে অর্থাৎ বছরে প্রায় সাড়ে তিনশো ট্রাক ভর্তি সার আসে। কিন্তু এই সেতু বন্ধ থাকায় বাজিতপুর, বালিয়াডাঙা ঘোরা পথে আসার জন্য প্রতি ট্রাকের ভাড়া বাবদ সাড়ে চারশো টাকা বেশি দিতে হয়। ফলে গত দুই বছরে প্রায় ছয় লক্ষ টাকা বেশি গুনতে হয়েছে। প্রশাসনের খুব শীঘ্র এই সমস্যার সমাধান করা উচিত। বন্দন দত্তের অভিযোগ, যদি সেতু বন্ধই রাখতে হয় তাহলে ওই সংস্কারের কোনও প্রয়োজন ছিল না। সংস্কারের নামে যে টাকা অনুমোদন হয়েছিল তার সামান্য টাকা কোনওরকমে খরচ করেছে। যান চলাচল কতদিন বন্ধ তাও কারও জানা নেই।
এতদিন মুরুটিয়া থেকে বিভিন্ন রুটে বেশ কয়েকটি বাস চলত। এই সমস্যায় সেগুলোও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এছাড়াও চাষিদের পাট, ধান কিংবা জমির আনাজ মহিষবাথান বাজারে নিয়ে যেতে হয়। গাড়ি ঘুরপথে নিয়ে যাওয়ায় খরচ বেশি হচ্ছে। করিমপুর ২ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সহ সভাপতি কার্তিক মণ্ডল বলেন, এই সেতু বন্ধ থাকায় মানুষ ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সেতুটি চালু করার বিষয়ে আমরা বারবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। খুব শীঘ্র একটি নতুন সেতু প্র্যজন। করিমপুর ২ বিডিও সুপ্রতীক মজুমদার বলেন, বহু পুরনো ওই সেতুটির অবস্থা খুব খারাপ। ভারী যান চালানো সম্ভব নয়। ওখানে বিকল্প একটি সেতু নির্মাণের জন্য প্রাথমিক ভাবে পরিকল্পনা করা হচ্ছে।