গৃহে শুভকর্মের আয়োজনে ব্যস্ততা। বন্ধুসঙ্গ ও সাহিত্যচর্চায় মানসিক প্রফুল্লতা। উপার্জন বাড়বে। ... বিশদ
উনিশ শতকের বঙ্গীয় নবজাগরণের অন্যতম পুরোধা রামমোহন রায়। আধুনিক ভারতের সূচনা তাঁর হাত ধরেই হয়েছিল। বঙ্কিমচন্দ্র, বিদ্যাসাগর, রবীন্দ্রনাথ, বিবেকানন্দ প্রমুখর নিরলস প্রচেষ্টায় সেই পথ আরও প্রসারিত হয়। বর্তমান ভারতে রামমোহনের প্রাসঙ্গিকতা এদিন বিশিষ্টজনেরা তুলে ধরেন। একই সঙ্গে ধর্মীয় উন্মাদনা ও অন্ধ সংস্কারের আচারের ব্যাপ্তি নতুন করে বেড়ে চলায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন। প্রাক্তন অধ্যাপক ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ফাল্গুনী গুপ্ত মজুমদার বলেন, উনিশ শতকের প্রথম লগ্নে রামমোহন রায় প্রথম দেখালেন চিন্তার স্বাধীনতার দর্শন। সনাতনী বদ্ধচিন্তা এখনও সমাজ জীবনে সক্রিয়। বর্তমান সময় যেদিকে যাচ্ছে সুযোগ পেলেই অন্ধ সংস্কার আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। তিনি স্বাধীন চিন্তার যে পথ দেখিয়েছিলেন তা হারিয়ে যাচ্ছে। কেউ চিন্তা করে দিলে সেটাই আমরা অনুসরণ করবো কেন? এই সময় তাঁর যুক্তিবাদী মতামত আমাদের খুবই প্রয়োজন। আরামবাগ মহকুমার প্রাক্তন গ্রন্থাগারিক বিভাংশু দত্ত বলেন, যুক্তিবাদ, বক্তব্যের সর্বজনীনতা, সহনশীলতা এবং সমন্বয়ের ক্ষমতা— এই চারটি ছিল হিন্দু ধর্মকে সংস্কারমুক্ত করার ক্ষেত্রে তাঁর অস্ত্র। এই চারটি গুণের সমন্বয়ে তিনি কালক্রমে এমন এক ব্যক্তিত্বে পরিণত হন, যাতে তাঁকে আমরা প্রথম আধুনিক ভারতীয় হিসেবে চিহ্নিত করতে পারি।
ব্রিস্টলের জাদুঘরে থাকা ইংরেজ শিল্পীর হাতে আঁকা তাঁর প্রতিকৃতিতে রামমোহন রায়ের পিছনে দেখা যায় একটি মন্দির এবং একটি মসজিদ। তাঁর হাতে ধরা বাইবেল ধর্মগ্রন্থ। এই ছবি তাঁর সমন্বয়বাদী মানসিকতার পরিচায়ক। রামন গবেষক দেবাশীষ শেঠ বলেন, রামমোহনের জন্মভিটে রাধানগরে শ্রদ্ধার সঙ্গে দিনটি স্মরণ করা হয়েছে। কর্মজীবন ও তার যুক্তিবাদী দর্শন নিয়ে এদিন বিশিষ্টজনেরা আলোচনা করেছেন। আরামবাগ হাই স্কুলের তরফে রাজা রামমোহনের জন্মদিনে অভিনব উদ্যোগ নেওয়া হয়। চব্বিশ সালের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের কৃতি ছাত্রদের ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে শহর পরিক্রমণ করা হয়। প্রধান শিক্ষক বিকাশ চন্দ্র রায় বলেন, রাজা রামমোহন রায় আমাদের আলোর পথ দেখিয়েছিলেন। আমরা আশাবাদী কৃতী ছাত্ররাও সামনের দিনে সমাজ জীবনকে আলোর পথ দেখাবে।