গৃহে শুভকর্মের আয়োজনে ব্যস্ততা। বন্ধুসঙ্গ ও সাহিত্যচর্চায় মানসিক প্রফুল্লতা। উপার্জন বাড়বে। ... বিশদ
একক গরিষ্ঠতা যে মিলছে না, সে ব্যাপারে প্রতি দফার ভোটের সঙ্গে সঙ্গেই কি নরেন্দ্র মোদির সংশয় আরও বাড়ছে? না হলে ম্যাজিকের মতো তাঁর ভাষণ থেকে আমিত্ব, বিজেপি, ৪০০ পারের স্লোগান উধাও হয়ে যাচ্ছে কেন? আর কেনই বা এনডিএকে আচমকা বাড়তি গুরুত্ব দিতে শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী?
ম্যাজিক ফিগার ২৭২। গত দু’টি লোকসভা নির্বাচনে এই অঙ্ক হেলায় পার করা মোদি কি তাহলে সত্যিই টেনশনে? কয়েক মাস আগে পর্যন্ত জেডিইউ এবং তেলুগু দেশম ছাড়া যে কয়েকটি দল এনডিএতে ছিল, তাদের কারও ঝুলিতে তিনজন এমপিও নেই। আপনা দল ছাড়া প্রত্যেকেই এক এমপির পার্টি। ২০১৯ সালে বিজেপি এককভাবে ৩০৩ আসন পেয়েছিল। আর এনডিএ শরিকদের নিয়ে হয়েছিল ৩৫৩। শিরোমণি অকালি দলকে বারবার বিজেপি জোটে ফিরে পেতে চাইলেও, তারা আসেনি। আর তার পরিণতি? এবার পাঞ্জাবে বিজেপি একটি আসনেও জয় পাবে কি না, সন্দেহ। তাই বিহারে নীতীশ কুমার এবং অন্ধ্রপ্রদেশের চন্দ্রবাবু নাইডু এখন নরেন্দ্র মোদির প্রধান ভরসা। এই দুই দল যদি ভোটে ফ্লপ করে, তাহলে বিজেপির বিপদ বাড়বে। সেটা মোদিও বিলক্ষণ বুঝছেন। আর তাই মঙ্গলবার সাতসকালে পঞ্চম দফার ভোটের জন্য দেশবাসীর প্রতি বার্তায় প্রধানমন্ত্রী কিন্তু এনডিএ’র জয়গানেই জোর দিয়েছেন। বিজেপি সরকার নয়, এখন নরেন্দ্র মোদির এনডিএ নির্ভরতা নজর করার মতো। বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ‘সোমবার পঞ্চম দফার ভোট হয়ে গেল। সেখানেও প্রমাণিত হচ্ছে যে, এনডিএ ক্রমে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছে। ভারতবাসী সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন যে, কেন্দ্রে তারা শক্তিশালী এনডিএ সরকার দেখতে চায়।’ মোদি বিরোধীদের জোটকে ‘ইন্ডিয়া’ বলা থেকে বিরত থাকেন। এদিনও সেই রীতি অনুযায়ী বলেছেন, বিরোধীদের ইন্ডি জোট যতই ভোটব্যাঙ্ক রাজনীতি করুক, মানুষ তাদের বিশ্বাস করে না। মোদির ভাষ্যে বিজেপিকে ভোট দেওয়ার জন্য দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানানো নেই। বিজেপি সরকারের কাজে মানুষের আস্থা রয়েছে বলেই ভোটাররা বিজেপি কিংবা তাঁকে সমর্থন করছে—এই দাবিও নেই। গোটা বিবৃতি এনডিএ কেন্দ্রিক। স্বয়ং সেনাপতির এই সতর্ক মনোভাব এবং প্রতিক্রিয়া দেখে বিজেপির মধ্যেও শঙ্কা তৈরি হয়েছে। প্রথমত, ভোটদানে বিগত দফাগুলির পুনরাবৃত্তি। অর্থাৎ আবার ২০১৯ সালের তুলনায় পঞ্চম দফায় কম ভোট পড়ল। বিশেষ করে উদ্বেগ মহারাষ্ট্র নিয়ে। এই রাজ্যের অনিশ্চয়তাই বিজেপিকে সবথেকে বেশি টেনশনে রাখছে। এনডিএ শরিকদের মধ্যে আপনা দল, জিতন রাম মাঝি, উপেন্দ্র কুশওয়া, চিরাগ পাসোয়ান, অজিত পাওয়ার, একনাথ সিন্ধেদের নিয়ে বিরাট কোনও প্রত্যাশা নেই বিজেপির। কারণ এই প্রতিটি দলই খুব বেশি হলে ১ থেকে ৩টি করে আসন পাবে, যা ২০১৯ সালেও পেয়েছিল। অখণ্ড শিবসেনা নেই এবার বিজেপির পাশে। এবং ‘শক্তিশালী’ নীতীশ কুমারও নেই। নীতীশের শক্তিক্ষয়ের জন্যই বিহারে আসন কমার আশঙ্কায় ভুগছে বিজেপি। শীর্ষ নেতৃত্ব উত্তর ও মধ্য ভারতের প্রায় সর্বত্র আসন কমার সম্ভাবনাই দেখছে। আর সেই ক্ষতিপূরণের আশা করছে পূর্ব ও দক্ষিণ থেকে। পূর্ব ও দক্ষিণে আশা-ভরসা জোট শরিক। তাই মোদির মুখে আগেভাগেই এনডিএ বন্দনা!