আর্থিক উন্নতি ও গৃহসুখ বৃদ্ধি। বস্ত্রাদি ও বিবিধ অলঙ্কারাদি ব্যবসার গতি বৃদ্ধি ও মানসিক তৃপ্তি। ... বিশদ
সন্তোষপুরের বাসিন্দা অনিন্দ্য বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ‘বৃষ্টি দেখে শেষ কবে এত আনন্দ পেয়েছি মনে করতে পারছি না। ভাবতেই পারিনি যে, মেট্রো থেকে বেরিয়ে বৃষ্টি পাব। আরও হোক বৃষ্টি।’ গত ক’দিনের মতো রোদ আটকানোর জন্য অনেকে ছাতা নিয়ে বেরিয়েছিলেন। বৃষ্টি পড়তে সেই ছাতা বন্ধ করে রাখলেন ব্যাগে। সন্তানের হাত ধরে স্কুল থেকে ফিরছিলেন মা। ছাতা সরিয়ে বললেন, ‘বৃষ্টির জল একটু গায়ে পড়ুক। যা অসহ্য গরম পড়েছে।’ বাচ্চাটিও ভিজতে পেরে আহ্লাদে আটখানা। গম্ভীর মাকে এই ভূমিকায় আগে কখনও দেখেনি সে। অপ্রত্যাশিত বৃষ্টি ঘিরে এরকম ভালোলাগার টুকরো ছবি ধরা পড়ল শহরের রাস্তাগুলিতে।
তারমধ্যে দুপুরে স্কুল ছুটি হল। ছাত্র-ছাত্রীরাও দেদার উপভোগ করল জলের ধারা। জামা ভিজিয়ে তবে উঠল বাসে। কিন্তু দুপুরের পর শহরবাসীর মুখ খানিক বেজার। কারণ দীর্ঘস্থায়ী হল না বর্ষণ। মানুষ ভিজলেও মন ভরল না যেন। গড়িয়াহাট মোড়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে এক জামাকাপড় বিক্রেতা বললেন, ‘হয়ে গেল! চার ফোঁটা বৃষ্টি পড়েই সব শেষ। রাস্তাঘাটও সেভাবে ভিজল না তো।’ তবে সেই যে রোদ বিদায় নিয়েছিল বৃহস্পতিবার সারাদিন সেই রোদের তেজ আর ফিরে আসেনি। সন্ধ্যা নামার আগেই অবশ্য বৃষ্টি ফের দাপট বাড়ায়। বিকেলের পর থেকেই শিয়ালদহ, মৌলালিতে ঝিরঝির করে শুরু হয়। কখনও তা বেড়েছে কখনও কমেছে। মানুষের মধ্যে কিন্তু এমন ঘ্যানঘ্যানে বৃষ্টিতেও কোনও বিরক্তি দেখা যায়নি। দক্ষিণ কলকাতার গড়িয়াতেও অঝোর বৃষ্টি। পাড়ার মাঠগুলিতে ফুটবল নিয়ে বৃষ্টি ভেজা ম্যাচ চলল চুটিয়ে। ঝিরঝিরে বৃষ্টিতে রাস্তাঘাট কাদা কাদা। শিয়ালদহ স্টেশনের বাইরে অটো স্ট্যান্ড কাদা প্যাচপ্যাচ করছে। মানুষের তবু যেন বিরক্তি নেই। অঙ্কিতা ঘোষ নামে সোনারপুরের এক বাসিন্দা বলেন, ‘গরমে প্রচণ্ড কষ্ট পেয়েছি। কাদা হোক, গরম বিদায় নিক।’ পাশ থেকে আর মধ্যবয়স্ক এক ব্যক্তি বলে গেলেন, ‘বৃষ্টি নামতেই অফিস থেকে বেরিয়ে ভিজেছি। ভেজা জামাকাপড় থেকে শরীর খারাপ হলে হবে।’
নব ধারাজলে স্নান করে এতদিনের গরম ধুয়ে ফেলল শহর-শহরতলি। এবার প্রতীক্ষা বর্ষার।