আর্থিক উন্নতি ও গৃহসুখ বৃদ্ধি। বস্ত্রাদি ও বিবিধ অলঙ্কারাদি ব্যবসার গতি বৃদ্ধি ও মানসিক তৃপ্তি। ... বিশদ
কিন্তু এই বিশাল কারবার সামলাতে গেলে রাজনৈতিক প্রশ্রয়টা যে সমানে জরুরি, তা সুবোধকে বুঝিয়েছেন ‘ছোটা সরকার’। বিশেষ করে রাজস্থানের দৌসার এক প্রভাবশালী বিজেপি নেতার ছেলেকে খতম করার ‘সুপারি’ দিয়ে বিপাকে পড়ার পর উপলব্ধিটা আরও বেড়েছিল জুয়েল থিফের। অন্ধকার সাম্রাজ্য টিকিয়ে রাখতে তাই ছোটা সরকারর মধ্যস্থতায় ‘লণ্ঠন’-এর আলো নিভিয়ে ‘তির’ দিয়েই লক্ষ্যভেদ করতে নেমেছে সুবোধ। সিং কোম্পানির প্রাক্তন কর্মী আতিক রহমানের (নাম পরিবর্তিত) কথায়, দু’পক্ষই একে অপরকে যে শর্ত দিয়েছে, তা পালন করতে সহমতও হয়েছে। কী সেই শর্ত? বিহারে আর কোনও সোনা লুট নয়। বেউর জেল থেকে সরবে না সুবোধ। কোষাগার ভরাতে সুবোধ সিংয়ের নজরে এখন তাই ‘বাংলা’। টিটাগড় থেকে এ রাজ্যে ব্যাঙ্ক ডাকাতি এবং ব্যবসায়ীর বাড়িতে হানা দিয়ে কয়েক লক্ষ টাকা লুটের মধ্যে দিয়ে যে অপরাধ যাত্রার ‘শুরুয়াত’ করেছিল সুবোধ, তাতে সহযোগীও পেয়েছিল এখান থেকেই। বিটি রোডে বেলঘরিয়ার রথতলার শ্যুটআউটের পর বারাকপুর কমিশনারেট এখন সুবোধ-সঙ্গী খোঁজার কাজ শুরু করেছে।
বিহার এসটিএফের এক প্রাক্তন কর্তার কথায়, রাজস্থানের দৌসার প্রাক্তন বিধায়ক তথা প্রভাবশালী নেতার ছেলে কুণাল শর্মার জন্য সুপারি না দিলে হয়তো ‘তির’ হাতে নিতে পারত না সুবোধ সিং। ঘটনাটি ২০২০ সালের জুলাই মাসে। ওই বিজেপি নেতার ছেলে কুণাল তখন সাইবার অপরাধে জেল খাটতে বেউর পৌঁছেছে। ‘রংদারি ট্যাক্স’ চাওয়ার পাশাপাশি নেতা-পুত্রকে নিজের সেলে ডেকে কান ধরে ‘ওঠবোস’ও করায় জুয়েল থিফ। খেপে যান দৌসার বিজেপি নেতা। প্রভাব খাটিয়ে বেউরে ছেলের বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করান। তাতেও অবশ্য থামেনি সুবোধ। এই পর্বে উত্তর কলকাতার এক থানায় সাইবার অপরাধে নাম জড়ায় নেতা-পুত্রের। আদালতের নির্দেশে ঠিক হয়, ‘২১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি শিয়ালদহ আদালতে হাজির করাতে হবে কুণাল শর্মাকে।’ বেউর থেকে যাওয়ার সময় সুবোধের হুমকি ছিল, ‘আজ রাস্তে মে তুঝে খতম করুঙ্গা’। হাওড়া-দেরাদুন সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসের একটি সাধারণ কামরায় পুলিস পাহারায় রওনা দেয় কুণাল। রাত ১০টা নাগাদ মোকামা স্টেশনে ট্রেন পৌঁছনোর পর কামরার বাইরে থেকে গুলি বর্ষণ শুরু হয়। সিটের নীচে লুকিয়ে প্রাণ বাঁচায় নেতা-পুত্র ও পুলিস কর্মীরা। তাহলে ছোটা সরকার কে? কী তার ভূমিকা? মোকামার প্রাক্তন বাহুবলী বিধায়ক অনন্ত সিং, গোটা বিহার তাঁকে চেনে ‘ছোটা সরকার’ নামে। বাড়িতে একে-৪৭ রাইফেল আর গ্রেনেড রেখে ১০ বছরের জন্য বেউরে জেল খাটছেন। মাঝে প্যারোলে ১৫ দিনের জন্য ছাড়া পেয়ে এক সময়ের ‘শত্রু’ রাজীবরঞ্জন সিং ওরফে লালনের হয়ে ভোট প্রচার করেছেন। আর সিং কোম্পানি ভোটটা করিয়েছে। এটাই সন্ত্রাস। সুবোধের।
‘তির’ শিবিরের সেকেন্ড ইন কমান্ড এখন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায়। আর ছোটা সরকার ও সুবোধ সিং? বেউর জেলে। নির্বিঘ্নে।