কোনও কিছুতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভাববেন। শত্রুতার অবসান হবে। গুরুজনদের কথা মানা দরকার। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সুফল ... বিশদ
২০১১ সালে বামেরা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে সুশান্তবাবুর সঙ্গে নেতৃত্বের সম্পর্কে শীতলতা তৈরি হয়। বাম আমলে পশ্চিম মেদিনীপুরে তৃণমূল কর্মী খুন সহ নানা অভিযোগে তাঁর নাম জড়িয়ে পড়ার মাশুল দলকে দিতে হয়েছে বলে নেতৃত্বের একাংশ সরব হয়। তৃণমূল জমানায় তিনি গ্রেপ্তার হলেও দলের এই অংশ সেভাবে সুশান্তবাবুর পাশে দাঁড়াননি। তবে তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলের অভিযোগ, ক্ষমতায় থাকাকালীনই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সহ নেতৃত্বের এই অংশ সুশান্তবাবুর প্রতি বিরূপ ছিলেন। তাই প্রতি পদে তাঁকে মন্ত্রী হিসেবে অসহযোগিতা সহ্য করতে হয়েছে। এ নিয়ে নিজের ক্ষোভ ও বক্তব্য দলের ভিতরে তুলে ধরলেও কোনও সুবিচার পাননি তিনি। ফলে একপ্রকার বাধ্য হয়েই জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর গত বছর সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে লেখালেখি করেন। সেই সব লেখাতেই তিনি বুদ্ধদেববাবু ছাড়াও সূর্যকান্ত মিশ্র, বিমান বসুদের মতো শীর্ষ নেতাদের সমালোচনা করেন বলে অভিযোগ। মৌখিকভাবে সতর্কিত হওয়ার পরও তিনি নিজের অবস্থান থেকে সরে না এসে সেই সব লেখা পরে আবার বই আকারে প্রকাশ করেন।
দলীয় সূত্রের খবর, তখন থেকেই নেতৃত্বের কাছে চক্ষুশূল হয়ে ওঠেন সুশান্তবাবু। তবে লোকসভা নির্বাচনের আগে বেশ কয়েকটি জেলা থেকে তাঁর ডাক আসে বক্তা হিসেবে। ভোটের আগে রাজনৈতিক পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে এ নিয়ে সরাসরি নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারেনি আলিমুদ্দিন। ফলে অন্তত ২৫টি জনসভায় অন্যতম বক্তা হিসেবে হাজির থাকেন তিনি। এমনকী, তাঁর ভাষণের জনপ্রিয়তার কারণে কয়েকটি সভায় দলের পলিটব্যুরো সদস্যদের পরে তাঁকে বক্তৃতা দিতে হয়। জেলা সিপিএম নেতৃত্বের একাংশ তখন থেকেই ক্ষোভে ফুঁসছিলেন সুশান্তবাবুর উপর। এর মধ্যে জেলায় দলের অনুগামী কিছু নেতা-কর্মীকে নিয়ে তিনি বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে একটি গোপন বৈঠক করেন বলে খবর পায় নেতৃত্ব। সেই বৈঠকের তথ্যপ্রমাণ হাতে পেয়ে তারা নালিশ জানায় রাজ্য নেতৃত্বকে। বিষয়টি উপদলীয় কাজের সমান এবং কঠোর শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে মনে করেন আলিমুদ্দিনের ম্যানেজাররা। তবে রাজ্য কমিটির বৈঠকে বিষয়টি উল্লেখ করে এ নিয়ে জেলা নেতৃত্বকেই সিদ্ধান্ত গ্রহণের দায়িত্ব দেন সূর্যবাবুরা। সেই মতো গত ৩-৪ আগস্ট অনুষ্ঠিত বৈঠকে জেলা নেতৃত্ব সুশান্তবাবুকে এ ব্যাপারে শোকজ করার সিদ্ধান্ত নেয়। সেইমতো তাঁকে চিঠি পাঠিয়ে লিখিত জবাবও তলব করেছে তারা। তবে জেলা পার্টিতে সুশান্তবাবুর প্রভাব বা জনপ্রিয়তার কারণে শেষ পর্যন্ত তাঁকে শাস্তি দেওয়ার ব্যাপারে কতটা এগতে পারে তারা, সেটাই দেখার।