কোনও কিছুতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভাববেন। শত্রুতার অবসান হবে। গুরুজনদের কথা মানা দরকার। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সুফল ... বিশদ
তবে সম্ভবত আর তাঁদের অপেক্ষা করতে হবে না। সক্রিয় রাজনীতি করার মতো শারীরিক হাল না থাকলেও মনের জোরে আবার তিনি বই লেখায় মনোনিবেশ করেছেন। তবে চোখের কারণে তিনি স্বহস্তে লিখছেন না। ডিকটেশন তথা অনুলিখনের সাহায্য নিচ্ছেন এবার। বইয়ের বিষয় এবারও প্রিয় চীন। কমিউনিস্ট শাসিত চীনের বর্তমান সমাজব্যবস্থা এবং আর্থিক বিবর্তনের ইতিহাস নিয়েই মূলত তিনি চর্চা করবেন তাঁর এই নতুন বইয়ে। প্রসঙ্গক্রমে তাতে রাজনীতিও উঠে আসার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে বলে দলীয় সূত্রে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। এখন চীনের প্রসঙ্গে বই লিখতে গিয়ে তিনি কোনওভাবে দেশের রাজনৈতিক বা আর্থিক পরিস্থিতির তুলনা টানেন কি না শেষ পর্যন্ত, তা এখনও নিশ্চিত নয়। তবে সেই সম্ভাবনা কম বলেই বলছেন বুদ্ধদেববাবুর ঘনিষ্ঠজনেরা। উল্লেখ্য, পার্টির প্রকাশনা সংস্থা এনবিএ থেকেই এই বইটি প্রকাশিত হওয়ার কথা।
আলিমুদ্দিন সূত্রের খবর, কিছু দিন আগে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর শরীর বেশ খারাপ হয়েছিল। আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে শ্বাসকষ্টের সমস্যা দারুণভাবে বেড়েছিল। তবে চিকিৎসকদের পরামর্শমতো সাবধানে থাকার পর সেই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসেন বুদ্ধদেববাবু। তারপরই বই লেখার কাজে হাত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। অনুলিখনকারীকে তলব করে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন। তার আগে অবশ্য চীন নিয়ে অনেক পড়াশোনা করেন। মার্কসবাদী শাসনকালে চীনের আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি কীভাবে বিবর্তিত হয়েছে, তার বিস্তারিত খোঁজখবর নেন। সেই সঙ্গে ইতিহাসও ঝালিয়ে নেন নতুন করে। তারপরই হাত দেন বই লেখার কাজে। কমিউনিস্ট শাসিত চীন আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে সাড়া দিয়ে বাঁধা ধরা বামপন্থী সাবেকিয়ানার ছকের বাইরে হেঁটে কীভাবে দেশের উন্নয়ন করতে সক্ষম হয়েছে, তা নিয়ে বাম দুনিয়া বরাবরই আগ্রহ দেখিয়েছে। বুদ্ধদেববাবু সেই আঙ্গিকে এবার তাঁর নতুন বইটি লেখেন কি না, তা নিয়ে দলের অন্দরে জল্পনাও ছড়িয়েছে ইতিমধ্যে।
অসুস্থ হওয়ার পর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে তাঁর বাড়িতে গিয়ে বারকয়েক সৌজন্য সাক্ষাৎ করে এসেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার নির্দেশে বুদ্ধদেববাবুর পাম অ্যাভিনিউয়ের সরকারি আবাসনের সংস্কারও করেছে সরকার। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্যকে নিজের মোবাইল নম্বর দিয়ে দরকারে যে কোনও সময় যোগাযোগ করার অনুরোধও জানিয়েছেন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী। প্রাক্তনের জন্মদিনে আস্থাভাজন মন্ত্রীকে দিয়ে ফুল, মিষ্টি, পাজামা-ফতুয়াও নিয়ম করে পাঠান বর্তমান। নিজের দলের তরফেও খোঁজখবর রাখা হয় বুদ্ধদেববাবুর সঙ্গে। তবে দলের নেতা-কর্মীদের অনেকেই চান, দেশ ও রাজ্যের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির কথা চিন্তা করে প্রাক্তন এই পলিটব্যুরো নেতা লেখালেখি করুন মাঝেমধ্যে। যেহেতু দলীয় কোনও কর্মসূচি বা সভায় তিনি এখন আর উপস্থিত থেকে ভাষণ দিতে পারেন না, তাই জাতীয় ও রাজ্য-রাজনীতি নিয়ে বিজেপি-তৃণমূল বিরোধী তাঁর লেখা প্রবন্ধ মাঝেমধ্যে দলীয় মুখপত্রে প্রকাশিত হলে তা কর্মী-সমর্থকদের উৎসাহিত করবে।