কোনও কিছুতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভাববেন। শত্রুতার অবসান হবে। গুরুজনদের কথা মানা দরকার। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সুফল ... বিশদ
মোয়াজ্জেন ও ইমামদের মাসিক ভাতা চালু করেছিল তৃণমূল সরকার। মূলত বিজেপি সহ বিভিন্ন হিন্দু সংগঠনের পক্ষ থেকে পুরোহিত ভাতার দাবি তোলা হয়। ইমাম ভাতার আইনি বৈধতা নিয়ে বিজেপি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সনাতন ব্রাহ্মণ ট্রাস্ট বেশ কিছু দিন যাবৎ ভাতা সহ বিভিন্ন দাবি নিয়ে আন্দোলন শুরু করেছিল। জেলাভিত্তিক তাদের সেই সংগঠনের ভিত্তিতে এদিন জমায়েত করেছিল ট্রাস্ট। কলকাতার বুকে শুধুমাত্র পুরোহিত পেশাজীবীদের এত বড় সমাবেশ সাম্প্রতিক ইতিহাসে বিরল। সংগঠনের সভাপতি শ্রীধর মিশ্রের দাবি, গোটা রাজ্যে তাঁদের ১ লক্ষ ৮৬ হাজার সদস্য রয়েছেন। এদিন শুধু পুরুষ পুরোহিত নন, অনেকেই সপরিবারে এসেছিলেন এই জমায়েতে। সভায় হলুদ রঙের ঝান্ডা লাগানো হয়েছিল। উদ্যোক্তাদের তরফে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সদস্য জানান, গেরুয়া ব্যবহারে রাজনীতির রং লাগতে পারে। তাই সচেতনভাবেই মঞ্চে জাতীয় পতাকার তিন রং ছাড়া কোথাও আলাদা করে গেরুয়া ব্যবহার করা হয়নি।
রাজ্যের মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যেও পরোক্ষে গেরুয়া রাজনীতির সাম্প্রতিক প্রসঙ্গ উঠে এল। তিনি বলেন, রামকে পুজো করা হয়। কিন্তু যারা রাজনীতির স্বার্থে শ্রীরামকেও নির্বাচনের এজেন্ট করে দিয়েছে, তাদের সম্পর্কে সজাগ থাকুন। সরাসরি বিজেপির নাম নেননি মন্ত্রী। তাঁর দাবি, যারা ধর্মের ভালো চায় না, শুধু নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধিতে তাকে কাজে লাগায়, তাদের সম্পর্কে সতর্ক থাকা উচিত। রাজ্যে একাধিক ব্রাহ্মণ সংগঠন রয়েছে। রাজীব বলেন, বিভিন্ন ছাতার তলায় নয়, এই সভার আয়োজক ট্রাস্টের তলায় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে সমস্ত পুরোহিত সমাজকে। অর্থাৎ রাজ্য সনাতন ব্রাহ্মণ ট্রাস্টকেই কার্যত স্বীকৃতি দিলেন মন্ত্রী। মোট নয় দফা দাবি নিয়ে এদিন সমাবেশ করেন ব্রাহ্মণ সংগঠনের সদস্যরা। পুরোহিতদের ভাতার দাবি ছিল পাঁচ নম্বরে। কিন্তু সভার মেজাজের নিরিখে ওই দাবিটিই ছিল আকর্ষণীয় বিষয়। রাজ্য সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে রাজীবের ভাষণেও অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে আগাগোড়া গুরুত্ব পেয়েছিল ভাতা প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, অন্য সম্প্রদায়ের মানুষ ভাতা পাচ্ছেন, তাতে কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু যে ব্রাহ্মণরা মানুষের মঙ্গল কামনা করেন, তাঁদের অনেকের মাথার উপর ছাদ নেই। আর্থিক অনটন রয়েছে। তাই ভাতার যে দাবি তোলা হয়েছে, তা ন্যায্য বলে মনে করেন তিনি। রাজীব বলেন, আমি দায়িত্ব নিচ্ছি, মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এই বিষয়টি নিয়ে যাব। তবে, সব দাবির সঙ্গে একমত হলেও তা একসঙ্গে সমাধান সম্ভব নাও হতে পারে। ট্রাস্টের তরফে প্রতি জেলায় ব্রাহ্মণ সন্তানদের জন্য সংস্কৃত কলেজ করা বা পঞ্চায়েত এলাকায় একটি করে টোল তৈরির দাবিও তোলা হয়েছে। যা নিয়ে মন্ত্রী বলেন, তিনি বিষয়টি নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করবেন। পুরোহিতদের স্বাস্থ্য বিমার আওতায় আনার দাবি তোলা হয়েছিল। মন্ত্রীর আশ্বাস, রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে পুরোহিতদের আনার বিষয়টি নিয়ে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দরবার করবেন। ব্রাহ্মণসমাজকে বিধানসভা ভিত্তিক সংগঠন গড়ার পরামর্শও দিয়েছেন মন্ত্রী।- নিজস্ব চিত্র