বিদ্যার্থীদের ক্ষেত্রে ভাবনা-চিন্তা করে বিষয় নির্বাচন করলে ভালো হবে। প্রেম-প্রণয়ে বাধাবিঘ্ন থাকবে। কারও সঙ্গে মতবিরোধ ... বিশদ
সাগর ব্লকের ৯টি পঞ্চায়েতে জনসংখ্যা প্রায় আড়াই লক্ষের বেশি। মুড়িগঙ্গা পেরিয়েই সরকারি-বেসরকারি দফতর থেকে শুরু করে বাজার, আদালত, পুলিশ স্টেশনে যেতে হয়। সাগরদ্বীপের মূল আকর্ষণ কপিলমুনির মন্দির। সেখানে যেতে গেলেও ওই নদী পেরোতে হয়। ফি বছর মেলার সময়ে লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগম হয়। পুণ্যার্থীদের মুড়িগঙ্গা নদী পারাপার হয়েই ওই মন্দিরে যান। কাকদ্বীপের লট ৮ ঘাট থেকে সাগরের কচুবেড়িয়া ঘাট পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার চওড়া মুড়িগঙ্গা নদী। বহু বছর আগে ভুটভুটি চলত। ১৯৯১ সাল থেকে ভূতল পরিবহণ দফতরের ভেসেলে যাত্রী পারাপার শুরু হয়। ভোর ৬টা থেকে প্রায় রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত আধ ঘণ্টা অন্তর ভেসেল পারাপার হয়। প্রতিদিন প্রায় ৭ হাজার মানুষ পারাপার করেন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কাকদ্বীপের সঙ্গে সরসারি সাগরকে যুক্ত করা হবে। মানুষকে আর জোয়ার-ভাঁটার উপরে নির্ভর করতে হবে না। যা শুনে দর্শকাসনে বসে থাকা গ্রামের বাসিন্দারা উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন। এদিন মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের আগে রাজ্যের মন্ত্রী তথা কাকদ্বীপের বিধায়ক মন্টুরাম পাখিরা, সাগরের বিধায়ক বঙ্কিম হাজরা বক্তব্য রাখেন। শাসকদলের এক বিধায়কের কথায়, বছর দশেক ধরে নদীতে পলি পড়তে থাকায় ভেসেল চলাচলও সমস্যার হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভাটার সময়ে নদীতে জল কমে যাওয়ার কারণে কয়েক ঘণ্টা ভেসেল চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে লট ৮ ও কচুবেড়িয়া দুই ঘাটে যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয়। বেশি সমস্যায় পড়েন সাগরদ্বীপের বাসিন্দারা। রাজ্য সরকার ১০০ কোটি টাকা দিয়েছে পলি উত্তোলনের জন্য। কিন্তু সংস্কারের কাজ ঢিমেতালে হওয়ায় জটিলতা তৈরি হয়েছে।
এদিন ইন্দিরা ময়দানের জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে ফের ‘ভোট সাগর’ ও ‘রূপ সাগর’ তৈরি করা নিয়ে কেন্দ্র যেভাবে বঞ্চনা করেছে, তার ব্যাখ্যা করেন। বলেন, সুন্দরবন, সাগরদ্বীপকে সাজানোর জন্য তিনি পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। সংশ্লিষ্ট নামগুলিও তিনিই দেন। কেন্দ্রের তরফে বলা হয়েছিল, সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সাহায্য করা হবে। কিন্তু সেখানেই শেষ। তিন বছর কেটে গেলেও কিছুই করেনি। মথুরাপুরের নামখানা-সাগর ব্লকগুলি দীর্ঘদিন ধরেই শাসকদলের হাতে। সেই গড় যে এখনও অটুট, তা এদিনের ভিড় দেখেই প্রমাণিত। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সাগরে যখন আগে তিনি আসতেন, তখন কী ছিল? কিছুই না। অন্ধকার। গঙ্গাসাগরে আসা পুণ্যার্থীরা বলতেন, সব তীর্থস্থান বারবার, গঙ্গাসাগর একবার। কিন্তু এখন দেখুন, গঙ্গাসাগরকে নতুন করে তৈরি করা হয়েছে। থাকার জায়গা, প্রশাসনিক জায়গা, মন্দিরের সৌন্দর্যায়ন, আলোয় ভরে গিয়েঠে গোটা এলাকা। সরকারের তরফে এটা এখানকার মানুষকে উপহার।
গত কয়েক বছরে নামখানা, কাকদ্বীপ এবং সাগর এলাকায় নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে আধুনিক হাসপাতাল, যা যা তৈরি হয়েছে, সেই উন্নয়নের তালিকা মানুষের সামনে তুলে ধরেন তৃণমূল সুপ্রিমো। বলেন, হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি যেটা প্রয়োজন ছিল, তা হচ্ছে মাছ সংরক্ষণের হিমঘর। নামখানায় সাত কোটি টাকা ব্যয়ে ২০০ মেট্রিক টনের মাছ সংরক্ষণের জন্য হিমঘর তৈরি করা হয়েছে। এছাড়াও কোটি কোটি টাকা বয়ে আনুষঙ্গিক পরিকাঠামো তৈরি করা হচ্ছে। আমি চাই, বকখালি সুন্দর করে সেজে উঠুক। নামখানা, পাথরপ্রতিমা, গঙ্গাসাগর আরও সুন্দর হোক। আর সুন্দরবন আমার সবথেকে প্রিয় জায়গা সেই জায়গাটি নিয়েও আমার অনেক পরিকল্পনা রয়েছে।