বিদ্যার্থীদের ক্ষেত্রে ভাবনা-চিন্তা করে বিষয় নির্বাচন করলে ভালো হবে। প্রেম-প্রণয়ে বাধাবিঘ্ন থাকবে। কারও সঙ্গে মতবিরোধ ... বিশদ
সোমবার দুপুর থেকেই আকাশে মেঘ জমতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা নাগাদ দমকা ঝড় জেলায় আছড়ে পড়ে। কান্দি মহকুমা এলাকায় ঝড়ের দাপট তুলনামূলকভাবে কম হলেও ওই এলাকায় বৃষ্টির দাপট বেশি ছিল। বহরমপুর ও লালবাগ মহকুমায় ঝড়ের দাপট বেশি ছিল। ফণী ঘূর্ণিঝড়ের জেরে বৃষ্টিতে ক্ষতির পর ফের কালবৈশাখীর দাপটে মুষড়ে পড়েছেন জেলার চাষিরা। মাত্র দশ দিনের ব্যবধানে জোড়া ধাক্কায় কার্যত বেসামাল অবস্থা তাঁদের। ওইদিন সন্ধ্যায় আধ ঘণ্টার ঝড় সব উলটপালট করে দিয়েছে বলে দাবি জেলার মানুষের। কালবৈশাখীর দাপটে বহু জায়গায় গাছ ও ডালপালা ভেঙে পড়ে। ভরতপুর এলাকায় দুশোর বেশি মাটির বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে সেখানকার বাসিন্দাদের দাবি। কান্দির মহকুমা শাসক অভীককুমার দাস বলেন, ক্ষয়ক্ষতি হওয়া এলাকার বিডিওদের ত্রিপল সহ প্রাথমিক সাহায্যের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঘরবাড়ির ক্ষতিতে সরকারি সাহায্যের আশ্বাস মিললেও ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা হতাশায় ভুগছেন। চাষিদের দাবি, ঝড়ে সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে আম ও লিচু বাগানে। জেলা কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত মাত্র ৩৫ শতাংশ বোরোধান চাষিরা ঘরে তুলতে পেরেছেন। বাকি ধান জমিতেই রয়েছে। বহু জায়গায় শ্রমিকের অভাবে চাষিরা পাকা ধান ঘরে তুলতে পারছেন না। জীবন্তি, হাটপাড়া, গোকর্ণ এলাকায় বিস্তর জমিতে ধান রয়েছে। সোমবারের ঝড়ে সেইসব জমির ধান জমিতেই লুটিয়ে পড়েছে। বহু জমির পাকা ধানের শিষ ভেঙে গিয়েছে।। জীবন্তি হল্টের বাসিন্দা রাকিবুল শেখ বলেন, আমার সাড়ে তিন বিঘা জমির ধান এখনও মাঠেই পড়ে রয়েছে। এদিন সকালে মাঠে গিয়ে মাথায় হাত পড়েছে। প্রায় ৩০ শতাংশ ধান জমিতেই ঝরে পড়েছে। একই বক্তব্য হাটপাড়ার বাসিন্দা সরিফ শেখের। সরিফ সাহেব বলেন, ফণীর পর কালবৈশাখীর দাপটে যেভাবে ধানের ক্ষতি হয়েছে, সরকারি অনুদান কিছু না মিললে ঋণ পরিশোধ করা দায় হবে। ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা সরকারি অনুদানের ঘোষণার দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন। ধানের পাশাপাশি ফুল আসার সময়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে তিল চাষেও। চাষিদের দাবি, ফুল সহ তিলের ডগা ভেঙে যাওয়ায় এবার তিলের ফলন কমবে।
জেলার একটা বড় অংশ আম ও লিচু চাষের উপর নির্ভরশীল। লালবাগ, জিয়াগঞ্জ, ধুলিয়ান, জঙ্গিপুর এলাকার আম ও লিচু চাষিরা মারাত্মক ধাক্কা খেয়েছেন বলে দাবি। লালবাগ মহকুমার রায়চাঁদপুরের আমচাষি বিশ্বনাথ মণ্ডল বলেন, ১৬ বিঘা বাগানে এবার আম চাষ করেছি। দু’তিন দিনের মধ্যেই গাছ থেকে আম পাড়া যেত। তার আগে ঝড়ে গাছের প্রায় ৩০-৩৫ শতাংশ আম ঝরে গিয়েছে। জিয়াগঞ্জের পরিতোষ দাস বলেন, এবার আমের ভালো ফলন ছিল। কিন্তু পরপর দুই ধাক্কায় এবার আম থেকে লাভের আশা ছাড়তে হচ্ছে। লিচু ঝরে না পড়লেও ডাল ভেঙে লিচু চাষে ক্ষতি হয়েছে বলে চাষিদের দাবি।