বিদ্যার্থীদের ক্ষেত্রে ভাবনা-চিন্তা করে বিষয় নির্বাচন করলে ভালো হবে। প্রেম-প্রণয়ে বাধাবিঘ্ন থাকবে। কারও সঙ্গে মতবিরোধ ... বিশদ
আট বছর আগে রাজ্যে বাম শাসনের অবসানে যেসব বিশিষ্টজন পরিবর্তনের ডাক দিয়ে রাস্তায় নেমেছিলেন, তাঁদেরই একাংশ এবার সপ্তদশ লোকসভা ভোটে তৃণমূলের হয়ে ভোট চাইলেন। এদিন শুভাপ্রসন্ন, জয় গোস্বামী, অভিরূপ সরকার, শাঁওলি মিত্র, অরিন্দম শীল, কবীর সুমন প্রসূন ভৌমিক প্রমুখ সাবেক পরিবর্তনপন্থীরা যেমন ছিলেন, তেমনই হোসনুর রহমান, সুবোধ সরকার, নলিনী বেরা, ইন্দ্রাণী ভট্টাচার্য, আবুল বাসারের মতো বিশিষ্টজনও একযোগে মোদিকে বিদায় দিতে মমতার পাশে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার করলেন। সভায় যোগ না দিলেও শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, গৌতম ঘোষ প্রমুখ ‘লুণ্ঠনকারী ও সাম্প্রদায়িক হানাদারদের রুখে দিন’ শীর্ষক যৌথ আবেদনে সই করেছেন।
এই আবেদন যে করতে হচ্ছে, এটাই লজ্জার— এমনই মনে করেন বিশিষ্ট নাট্য ব্যক্তিত্ব শাঁওলি মিত্র। স্বাধীনতার ৭৩ বছর পরে দেশের অখণ্ডতা ও স্বাধীনতা এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় এই জমায়েত করার প্রয়োজন হচ্ছে, এটাই অত্যন্ত দুঃখের বলে শাঁওলির সঙ্গেই সুর মিলিয়ে আক্ষেপ করলেন সিনেমা পরিচালক, অভিনেতা অরিন্দম শীল। কবি জয় গোস্বামীর মতে, দেশবাসীর মধ্যে বিভেদের বীজ ছড়িয়ে দিচ্ছে বিজেপি। মার্কিনী ম্যাগাজিনকে উদ্ধৃত করে কবি সুবোধ সরকারের দাবি, ভারতকে মোদি দ্বিখণ্ডিত করতে চাইছেন। বক্তাদের মতে, বাংলার সংস্কৃতির সঙ্গে বিন্দুমাত্র সম্পর্ক নেই, এমন একদল (পড়ুন বিজেপি) এরাজ্যকে অপমান করছে। বিজেপির নির্বাচনী সভায় এসে মোদি-শাহরা বাংলায় দুর্গাপুজোয় বাধা দেওয়া হয় বলে দাবি করেছেন। বিশিষ্টজনেদের প্রচারপত্রে পাল্টা দাবি, বাংলায় পুজো কমিটিগুলিকে দশ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়ায় আদালতে গিয়েছে বিজেপি। শাসকের নির্দেশে হাজার ক্লাবকে ইডি সমন ধরিয়েছে। অন্যদিকে বিজেপি শাসিত রাজ্য অসমে প্রাচীন দুর্গামন্দির ভেঙে দিয়েছে বিজেপি। উন্নয়নের নামে বারাণসীতে শত শত প্রাচীন মন্দির ধ্বংস করা হয়েছে। বিশিষ্টদের মতে, যে কোনও ফ্যাসিস্ট শাসক চায় জনগণের উপর তীক্ষ্ণ নজরদারি চালাতে। হিটলার, স্টালিন, মুসোলিনি, পল পট, ইদি আমিন প্রমুখ শাসক এই কাজ সুকৌশলে করেছে। তারা চায় শুধু স্তাবকতা। কোনও বিরোধী স্বরকে তারা বরদাস্ত করে না। মুক্তচিন্তার বাহকেরা খুন হয়েছেন— বিচারপতি লোয়া, কালবুর্গি, দাভোলকর, পানসারে, গৌরী লঙ্কেশ। এই ভয়াবহ প্রেক্ষাপটে প্রতিবাদ ব্যক্ত করছি বলে জানান বিশিষ্টজনেরা।
বাংলার তথা দেশের এই অবস্থার প্রেক্ষিতে একমাত্র প্রতিবাদী মমতা—এই বিষয়ে সবাই সরব। শুভাপ্রসন্ন বলেন, মমতা একজন অসামান্য নারী। যাঁকে মোদি ভয় পাচ্ছেন। তাই বারে বারে বাংলায় আসছেন মমতার বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করতে। এমনকী কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানোর কোনও প্রয়োজন ছিল না বলে মমতার সুরেই প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছেন এই বর্ষীয়ান চিত্রশিল্পী। এই প্রসঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করেন একদা তৃণমূলের টিকিটে জেতা লোকসভার সদস্য কবীর সুমন। নিজেকে মার্কসবাদী বলে দাবি করে তিনি স্পষ্ট করে দেন, আমি তৃণমূলপন্থী বুদ্ধিজীবী নই। তবে, মোদির বিরুদ্ধে লড়াইতে একমাত্র মমতার পাশে দাঁড়াতে হবে। বামপন্থীরা বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলকেও যে সমালোচনা করে, তার নিন্দা করেছেন সুমন।