বিদ্যার্থীদের ক্ষেত্রে ভাবনা-চিন্তা করে বিষয় নির্বাচন করলে ভালো হবে। প্রেম-প্রণয়ে বাধাবিঘ্ন থাকবে। কারও সঙ্গে মতবিরোধ ... বিশদ
মালদহ জেলা কংগ্রেসের সভাপতি মোস্তাক আলম বলেন, হবিবপুর আমাদের দুর্বলতার জায়গা আজকের নয়, বহুদিনের। এই সাংগঠনিক ত্রুটি কাটিয়ে ওঠার নতুন করে একটি প্রয়াস আমরা শুরু করেছি। পাশাপাশি আমি তো বরং বলব এবারই আমরা খুব ভালোভাবে হবিবপুর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি। আমাদের প্রার্থীর ওই এলাকায় আলাদা জনপ্রিয়তা আছে। দীর্ঘদিন ধরে তিনি স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ছিলেন। তাই তাঁর জনসংযোগ এলাকায় খুব ভালো রয়েছে। মাঠেময়দানে প্রচার করতে গিয়ে আমরা প্রচুর নতুন কর্মী পাচ্ছি, তাঁদের উৎসাহ দেখছি। এতে আমরা খুবই আশাবাদী যে এই আসনটিতে আমরা উল্লেখযোগ্য ফল করব।
যদিও এবারের এই বিধানসভা উপনির্বাচনে কংগ্রেসের প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি, তৃণমূল কংগ্রেস, সিপিএম নেতৃত্ব কংগ্রেসকে ধর্তব্যের মধ্যেই আনছে না। বিজেপির মালদহ জেলার প্রবক্তা অজয় গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ওখানে বিজেপির প্রতিদ্বন্দী বিজেপি নিজেই। কংগ্রেস চতুর্থ অথবা পঞ্চম স্থানের লড়াইতে থাকতে পারে।
মালদহ জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের নির্বাচনী কমিটির চেয়ারম্যান উজ্জ্বল মিশ্র বলেন, আমাদের লড়াই বিজেপির বিভাজনের রাজনীতির সঙ্গে হচ্ছে। কংগ্রেসকে কোথাও দেখাই তো যাচ্ছে না! আমাদের ধারণা প্রথম তিনের লড়াইতে কংগ্রেসের কোনও জায়গা নেই।
২০১৬ সালে দলের জোটসঙ্গী প্রসঙ্গে সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র বলেন, হবিবপুর চিরকালই লালদুর্গ। এবারও প্রথম দল হিসেবে আমরাই শীর্ষে থাকব। কংগ্রেস এখানে সাংগঠনিকভাবে কখনই সক্রিয় ছিল না। এবার প্রার্থী দিয়েছে বটে, কিন্তু উপস্থিতি বা প্রতিদ্বন্দ্বিতার নিরিখে তারা গণনায় নেই।
মালদহে কংগ্রেসের রাজনীতি বহু বছর ধরে লোকসভা কেন্দ্রিক। ফলে প্রয়াত প্রবাদপ্রতিম নেতা বরকত গনি খান চৌধুরীর জীবদ্দশাতেও হবিবপুর নিয়ে সেভাবে ওই দল মাথা ঘামায়নি। একদিকে দলীয় সংগঠন ও অন্যদিকে প্রধান বিরোধী দলের উদাসীনতার জেরে প্রায় ৫০ বছর ধরে সিপিএম হবিবপুর বিধানসভায় রাজত্ব করেছে। সময় যত এগিয়েছে হবিবপুরে ক্ষয়িষ্ণু হয়েছে কংগ্রেস দল। এই জায়গাটিকে ধরে ২০১১ সাল থেকে এখানে তৃণমূলের উত্থান শুরু হয়। আরও পরে বিজেপি উঠে আসে। কিন্তু জেলা তথা দেশের প্রাচীনতম দল নিজেদের তৈরি করতে পারেনি। এমনকী ঠিক পাশের বিধানসভাতে গত প্রায় আট বছর ধরে কংগ্রেসের বিধায়ক থাকলেও হবিবপুরে মজবুত সংগঠন গড়ে ওঠেনি।
তারপরে সদ্য জেলা কংগ্রেস সভাপতি মৌসম বেনজির নুর কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে চলে যাওয়ায় হবিবপুরের দীর্ঘদিনের সংগঠক হেমন্ত শর্মাও দল ছাড়েন। হবিবপুরের সংগঠনের অনেকটাই মৌসমঘনিষ্ঠ এই তরুণ নেতার নিয়ন্ত্রণে ছিল। এমনকী ২০১৩ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে হবিবপুরে মিলিজুলি পঞ্চায়েত সমিতি গড়ে সেখানকার সভাপতি পদ কংগ্রেস পেয়েছিল। একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েত মূলত ওই নেতার কৌশলে তারা দখল নিয়েছিল। কিন্তু ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে কংগ্রেস দাগ কাটতে পারেনি। দাপুটে নেতাদের দলত্যাগের সঙ্গে নিচুতলার ক্ষয়িষ্ণু চেহারা আরও প্রকট হয়ে ওঠে। এবারের নির্বাচনে ময়দানে সেই কর্মী সংকটের কারণে কংগ্রেস তাই থেকেও নেই। নেতৃত্ব একান্ত আলোচনায় তা স্বীকার করলেও রাজনৈতিক কারণেই প্রকাশ্যে তারা বাস্তবতা মানতে নারাজ।