বিদ্যার্থীদের ক্ষেত্রে ভাবনা-চিন্তা করে বিষয় নির্বাচন করলে ভালো হবে। প্রেম-প্রণয়ে বাধাবিঘ্ন থাকবে। কারও সঙ্গে মতবিরোধ ... বিশদ
জেলার পুলিস সুপার আভারু রবীন্দ্রনাথ বলেন, বড়রায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। দশজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কালোর বাড়ি থেকে অস্ত্র, গুলি, বোমা উদ্ধার করা হয়েছে। কোনও ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে আমাদের নজরে নেই। ঘটনা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তদন্ত চলছে।
তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল বলেন, পুলিসকে বলেছি তদন্ত করে দু’পক্ষের বিরুদ্ধেই উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে। তবে গ্রামটি ঝাড়খণ্ডের অদূরে, তাই বিজেপি দুষ্কৃতী এনে এসব উস্কানি দিচ্ছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা দরকার।
পঞ্চায়েতের কাজের ভাগ বাঁটোয়ারা ও এলাকার দখলদারি দিয়ে বড়রায় দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ বহুদিনের। লোকসভা ভোটে দলের নির্দেশে বিষয়টি ধামাচাপা পড়লেও ভোট মিটতেই দু’পক্ষের মধ্যে রেষারেষি শুরু হয়। পঞ্চায়েতের বিভিন্ন কাজ নিয়ে বড়রা পঞ্চায়েতের সদস্য শেখ আব্বাসের সঙ্গে পঞ্চায়েতের অন্য সদস্য শেখ মহিবুল, স্থানীয় নেতা শেখ কালোর মধ্যে বিবাদ চরমে ওঠে। প্রয়াত ব্লক সভাপতি দীপক ঘোষের সঙ্গী কালোর দলেই প্রথমে ছিলেন আব্বাস, কিন্তু সম্প্রতি দল পরিবর্তন করে তিনি উজ্জ্বল গোষ্ঠীতে নাম লেখান। ভোটের পর গ্রামে উত্তেজনা চরমে পৌঁছলে দু’পক্ষই বোমা-অস্ত্র সহ বাইরে থেকে লোক এনে প্রস্তুতি শুরু করে দেয়। এরই মধ্যে রবিবার শেখ আব্বাসের অনুপস্থিতিতে তাঁর স্ত্রীকে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে কালো ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে মারধর ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ ওঠে। থানায় অভিযোগও দায়ের হয়। এই ঘটনাই বারুদের স্তূপে অগ্নিসংযোগ করে। কালোর অনুগামীদের অভিযোগ, এদিন ভোর তিনটে নাগাদ উজ্জ্বল অনুগামীরা বোমাবাজি করতে করতে কালোর বাড়ির দিকে এগতে থাকে। যথেচ্ছ গুলিবর্ষণও হতে থাকে। পাল্টা বাড়ির ছাদ থেকে বোমা ও গুলি নিয়ে আক্রমণ শুরু করে কালো, তাঁর ভাই ও অনুগামীরা। এলাকা রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। ঘণ্টা দু’য়েক তুমুল বোমা-গুলির লড়াইয়ের পর কালোর ঘর ঘিরে ধরে নাগাড়ে বোমা মারতে শুরু করে অন্য গোষ্ঠী। বোমার আঘাতে জানালার কাচ ভেঙে যায়। জানালার গ্রিলের একাংশ ভেঙে গেলে কেরোসিন ছিটিয়ে বোমা মেরে বাড়িতে আগুন লাগানো হয়। রীতিমতো বাড়ি তছনছ হয়ে গেলেও বাড়ির দরজা ভাঙতে না পারায় প্রাণে বেঁচে যান কালো, তাঁর পরিবার ও অনুগামীরা। অন্যদিকে, দীর্ঘক্ষণ তাণ্ডব চলার পর ডিএসপি (হেডকোয়ার্টার) কাশীনাথ মিস্ত্রির নেতৃত্বে দুবরাজপুর, ইলামবাজার, কাঁকরতলা, লোকপুর, খয়রাশোল থানার পুলিস গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। কালোদের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে। তখনই ৫টি আগ্নেয়াস্ত্র, ২২টি গুলি, ৮টি বোমা উদ্ধার করে পুলিস। শেখ কালোও তাঁর অনুগামীদের গ্রেপ্তার করে পুলিস। কালোর স্ত্রী খাইরুন্নেশা বিবি বলেন, উজ্জ্বল কাদেরির লোকজন এই হামলা চালিয়েছে। যদিও উজ্জ্বল কাদেরির দাবি, আমি সিউড়িতে ছিলাম। কিন্তু আমাকে আর পঞ্চায়েত সদস্য শেখ আব্বাসকে মারার জন্য বাড়িতে অস্ত্র ও ঝাড়খণ্ড থেকে লোক এনেছিল কালো। মঙ্গলবার ভোরেও প্রথমে তারাই শেখ আব্বাসের বাড়িতে বোমা মারে। আমাদের এক কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়। পরে স্থানীয় মানুষজন কালোর বাড়িতে গিয়ে ক্ষোভ উগরে দেয়। যদিও দীপক ঘোষ অনুগামী ব্লক কমিটির সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, শেখ কালো আমাদের স্থানীয় নেতা। দুষ্কৃতীরা ওর বাড়িতে হামলা চালিয়েছে। আমরা দলকে পুরো বিষয়টি জানিয়েছি।