সংবাদদাতা, লালবাগ: সেচদপ্তরের বাঁধ কেটে ভরাট করা হচ্ছে জমি। ফলে দুই শতাধিক বছরের প্রাচীন বাঁধ দুর্বল ও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অভিযোগ, স্থানীয় নার্সিংহোমের কর্ণধার ডাঃ মেহেবুব হোসেনের বিরুদ্ধে। প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকালে ভগবানগোলা থানার কানাপুকুর বাঁধপুল এলাকায় জিয়াগঞ্জ-লালগোলা রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভে শামিল হন স্থানীয়রা। অবরোধ বিক্ষোভে রাজ্য সড়ক অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। যান চলাচল ব্যাহত হয়। খবর পেয়ে ভগবানগোলা থানার পুলিস ছুটে আসে। পুলিসের সামনেই অবরোধ বিক্ষোভ চলতে থাকে। পুলিস বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার আশ্বাস দিলে প্রায় আধ ঘণ্টা পর বিক্ষোভ উঠলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। জানা গিয়েছে, ভগবানগোলার বাসিন্দা ডাঃ মেহেবুব হোসেনের কানাপুকুরে একটি নার্সিংহোম রয়েছে। সম্প্রতি তিনি কানাপুকুরে একটি নার্সিং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন। সেইমতো কানাপুকুর বাঁধপুল এলাকায় সেচদপ্তরের বাঁধের পিছনে তিন বিঘা একটি জমি ক্রয় করেন। অভিযোগ, ওই চিকিৎসক গত কয়েকদিন ধরে বাঁধের কেটে ওই নিচু জমি ভরাট করছেন। অবরোধ বিক্ষোভে শামিল হয়েছিলেন সত্তরোর্ধ্ব মুস্তাক শেখ। তিনি বলেন, আগে বর্ষাকালে অতিবৃষ্টি বা ভাগীরথীতে জলস্ফীতি  হলে ভগবানগোলা, রানিতলা এবং লালগোলার বিস্তীর্ণ এলাকা ও চাষের জমি প্লাবিত হতো। ফলে হাজার হাজার পরিবার চরম দুর্ভোগের শিকার হতো। সেই কারণে প্রায় দুশো বছর আগে ভগবানগোলার কালুখালি থেকে জঙ্গিপুরের ময়া-পণ্ডিতপুর পর্যন্ত প্রায় ৬০ কিলোমিটার মাটির বাঁধ দেওয়া হয়। এই বাঁধ ভগবানগোলা, লালগোলার মানুষকে বছরের পর বছর রক্ষা করে এসেছে। নিজের ব্যবসায়িক স্বার্থে ওই চিকিৎসক বাঁধ কেটে জমি ভরাট করছেন। এর ফলে ওঁর লাভ হলেও আমাদের মতো সাধারণ মানুষের ক্ষতি হবে। অপর প্রবীণ বাসিন্দা জিন্দাল শেখ বলেন, এই বাঁধ আমাদের আমাদের রক্ষাকবচ। অথচ সেচদপ্তরের নজরদারির অভাবে বাঁধ দখল হয়ে যাচ্ছে। বসতি, দোকানপাট গড়ে উঠেছে। অনেক জায়গায় বাঁধ কেটে রাস্তা তৈরি হয়েছে। যার ফল ভোগ করতে হয়েছিল ২০০০ সালের বন্যায়। বাঁধপুল এলাকায় বাঁধের একটা অংশ ভেঙ্গে ভগবানগোলার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। এলাকাবাসীকে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। কোটি কোটি টাকার ফসল নষ্ট হয়। যদিও ডাঃ: মেহেবুব হোসেন বলেন, অভিযোগ ঠিক নয়। বাঁধ কেটে নয়, অন্য জায়গা থেকে মাটি এনে ভরাট করা হচ্ছে। এলাকার কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষ ভালো কাজকে আটকে দিতে গ্রামবাসীদের ভুল বুঝিয়ে পথে নামিয়েছিল।