নয়াদিল্লি: রাজধানীর রাজৌরি গার্ডেনে বার্গার কিংয়ের সামনে হত্যার ঘটনায় সামনে এল নয়া তথ্য। জানা গিয়েছে, এই ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে হিমাংশু বাউ ওরফে ছোটা ডন। এক সহযোগীর খুনের বদলা নিতেই আমন জুনকে খুন করেছে সে। জানা গিয়েছে, মাত্র ২১ বছর বয়সেই কার্যত অপরাধ জগতের বেতাজ বাদশা হয়ে উঠেছে হিমাংশু। দেশের সীমা পেরিয়ে বিদেশের মাটিতেও খুনোখুনি, তোলাবাজিতে তার নাম জড়িয়েছে। ইতিমধ্যেই রেড কর্নার নোটিস জারি করেছে ইন্টারপোলও। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, হরিয়ানার রোহতাকের রাতাউলি গ্রামের এই বাসিন্দা বর্তমানে বিদেশে গা-ঢাকা দিয়েছে। শেষবার তাকে পর্তুগালে দেখা গিয়েছিল। তদন্তকারীদের ধারনা, সেখানে থেকেই গ্যাংয়ের সদস্যদের দিয়ে বার্গার কিং আউটলেটে ২৬ বছরের তরুণ আমন জুনকে খুন করিয়েছে ‘ছোটা ডন’। মঙ্গলবার রাতে বেশ কয়েকজন দুষ্কৃতী দু’টি স্কুটারে এসে ওই যুবককে লক্ষ্য করে ৩৮ রাউন্ড গুলি চালায়। দোকানের বিলিং কাউন্টারের পিছন থেকে আমনের দেহ উদ্ধার হয়। জনবহুল এলাকায় এই ঘটনার পরই রাজধানী দিল্লির আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এদিকে, আমন খুনে হিমাংশুর এক মহিলা সহযোগী অনুকে খুঁজছে পুলিস। তদন্তকারীদের দাবি, এই মহিলাকে হানিট্র্যাপ হিসেব ব্যবহার করে খুনের ছক কষেছিল গ্যাংস্টার। হত্যাকাণ্ডের পরই গা ঢাকা দিয়েছে অনু। যদিও তাঁর পরিবারের দাবি, বেশ কয়েক মাস ধরেই মেয়ের খোঁজ মিলছে না। রোহতাকের একটি থানায় নিখোঁজ ডায়েরিও দায়ের করা হয়েছে।
কিন্তু, কী কারণেই আমনকে খুন করল হিমাংশু? সোশ্যাল মিডিয়ায়পোস্ট করে হত্যার দায় স্বীকার করেছে সে। পাশাপাশি হত্যার কারণও উল্লেখ করেছে। কীভাবে অপরাধ জগতে জড়িয়ে পড়ল হরিয়ানার ছোট্ট গ্রামের বাসিন্দা? তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, মাত্র ১৭ বছরে এলাকারই ঝামেলায় জড়িয়ে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছিল হিমাংশুর বিরুদ্ধে। এর জন্য তাকে জুভেনাইল কারেকশন হোমেও পাঠানো হয়। কিন্তু, সেখানে আটকে রাখা যায়নি। হোম থেকে পালিয়ে রোহতক, ঝাঝরে একের পর এক অপরাধমূলক কাজকর্মে জড়িয়ে পড়ে সে। এই দুই জায়গাতে তার নামে ১৭টি ফৌজদারি মামলা রয়েছে। এই অপরাধ-মনস্কতার জন্য দিল্লি ও সংলগ্ন এলাকায় ছোটা ডন হিসেবে পরিচিত পায় ওই গ্যাংস্টার। শুধু খুন নয়, দিল্লি, হরিয়ানা, পাঞ্জাব ও রাজস্থানের ব্যবসায়ীদের থেকে তোলাবাজির অভিযোগ রয়েছে। উত্তর ভারতে অপরাধ জগতে দাপট বজায় রাখতে লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাংয়ের সঙ্গেও হাত মিলিয়েছে সে। এমনকী আর এক জেলবন্দি গ্যাংস্টার নীরজ বাওয়ানার সঙ্গেও ‘বন্ধুত্ব’ রয়েছে ‘ছোটা ডনের’।