আর্থিক উন্নতি ও গৃহসুখ বৃদ্ধি। বস্ত্রাদি ও বিবিধ অলঙ্কারাদি ব্যবসার গতি বৃদ্ধি ও মানসিক তৃপ্তি। ... বিশদ
ওই চার বিজ্ঞানী হাজার হাজার জিন নিয়ে গবেষণা করেছেন। তাতে দেখা গিয়েছে এক অদ্ভুত বিষয়—অন্তত ২৭ শতাংশ ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ একই জিন পুরুষ এবং নারী শরীরে বিপরীতমুখী কাজ করছে। পুরুষ ও নারীদেহের মোট ১২টি বৈশিষ্ট্য নিয়ে তাঁরা কাজ করেছেন। গবেষণায় ৬৬ জোড়া মিল ও অমিল ধরা পড়েছে। এর মধ্যে সুনির্দিষ্টভাবে ১৮ জোড়া ক্ষেত্রে একই জিনের সম্পূর্ণ বিপরীত প্রকাশ দেখা গিয়েছে দুই লিঙ্গের মানবশরীরে। এপ্রসঙ্গে গবেষণার প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর অনসূয়াদেবী এবং সহযোগী গবেষক সৈকতবাবু বলেন, ‘এতদিন ধরে একই রোগে মহিলা এবং পুরুষ অভিন্ন চিকিৎসা পেয়ে আসছে। কিন্তু আমাদের গবেষণালব্ধ ফল বুঝিয়ে দিল, এটা সঠিক কাজ নয়। বেশিরভাগ রোগেরই জিনগত প্রবণতা থাকে। দুই লিঙ্গের মধ্যে ফারাক, রোগপ্রকাশে তফাৎ এনে দেবে। ফলে চিকিৎসাও পাল্টে যেতে পারে। দিতে হতে পারে পৃথক ওষুধ। না হলে প্রকৃত চিকিৎসা অধরা থেকে যাবে। আর সবথেকে বেশি বঞ্চিত হবেন মেয়েরা।’
বিজ্ঞানীদের দাবি, সম্ভবত বহু বহু বছর আগে একই জিন পুরুষ এবং মহিলার শরীরে অভিন্নভাবে কাজ করত। টিকে থাকার প্রয়োজনে, অভিব্যক্তির ফলে কোনও না কোনও প্রজন্মে তার বদল হতে শুরু করে। যেমন ময়ূরের পেখম থাকে। ময়ূরীর থাকে না। নিজের প্রতি আকর্ষণ বাড়াতে কোনও প্রজন্মে হয়তো ময়ূরের পেখমের সূত্রপাত। তারপর থেকে পরবর্তী প্রত্যেক প্রজন্মই তা বয়ে নিয়ে চলেছে। কিন্তু ময়ূরীর ক্ষেত্রে তেমনটা হয়নি। অনসূয়াদেবী বিষয়টি আরও স্পষ্ট করেছেন। তিনি বলেন, ‘অনেক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, যে সব জিন মহিলাদের দেহে টেস্টোস্টেরন হরমোনের ক্ষরণ বাড়ায়, সেগুলি পুরুষদেরও ওজন, বিএমআই ইত্যাদি বৃদ্ধির পক্ষে সহায়ক। আবার যে সব জিন পুরুষদের শরীরে টেস্টোস্টেরনের পরিমাণ বৃদ্ধি করে, সেগুলি মহিলাদের ওজন, বিএমআই ইত্যাদি কমিয়ে দিচ্ছে। জিনের এই খেলা পরবর্তী প্রজন্মের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক হতে পারে। একজন পুরুষ স্বাভাবিক নিয়মে তাঁর মেয়ের মধ্যে জিনের বৈশিষ্ট্যটা পাঠিয়ে দেয়। ফলে বাবার কাছ থেকে পাওয়া টেস্টোস্টেরন বাড়ানোর জিন চলে যায় মেয়ের দেহে। টেস্টোস্টেরন মেল (পুরুষ) হরমোন। এটি অতিরিক্ত পরিমাণে থাকা মহিলাদের পক্ষে ক্ষতিকারক।’ কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ রানা ভট্টাচার্য গবেষণাটিকে ‘যুগান্তকারী’ আখ্যা দিয়েছেন।