Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

পিশাচ সাধু

 

জয়ন্ত দে : হঠাৎ বর্ণিনীর সঙ্গে রাস্তায় দেখা হয়ে যায় সহজের। বনির গন্তব্য বিচিত্রদার বাড়ি। সহজকে সঙ্গী করে বনি। জনগণের স্বার্থে লড়াই করতে গিয়ে বহুবার পেটানি খাওয়া বিচিত্র ঘোষাল বিশ্বাস করে, এ দেশে একদিন বিপ্লব হবেই। কথায় কথায় বিচিত্রদাও সহজকে সাবধান করে দেয়, সে যেন পিশাচ সাধুর পাল্লায় না পড়ে। তারপর...
 সহজ মিত্র হতে পারে বড্ড সোজা। সোজাসাপ্টা।  সহজপাঠ! কিন্তু সে ভেড়া নয়। পরমেশ্বর ব্যানার্জি ভেড়া হয়েছে। তাকে ভেড়া বানিয়েছে পিশাচ সাধু।
শনিবারের বারবেলায় পরমেশ্বরের অফিসে ঢুকে সহজ বলল, ‘পরমেশ্বরদা তোমাদের ক্যাপ্টেনের কথা কিন্তু মিলল না।’
শনি আর রবিবার পরমেশ্বরের অফিসে ফালতু কেউ থাকে না। এদিন যারা তার অফিসে থাকে তারা সবাই ভালো ভালো মুখ। মুখ না বলে তাদের পরমেশ্বরের মুখোশ বলা যায়। পরমেশ্বরের বারণ আছে, শনি-রবি কোনও কানকাটা, গালে ক্ষুরটানা, অ্যালকোহলে তেলা মুখ— কেউ তার অফিসে আসবে না। আর একটা কথা সবাই জানে, এটা পার্টি অফিস নয়। শনি-রবিবার কোনও পার্টি পলিটিক্স চলবে না এখানে। এদিন পরমেশ্বর সাদা জামা পরে, দু’হাতের দশ আঙুলে ছ’টা সোনার আংটি পরে— লাল নীল সবুজ পাথরের। কারণ, এই দু’দিন পার্টি আসে। ফ্ল্যাট কেনার পার্টি। ব্যাঙ্কের লোক আসে। এই দুটো দিন বিজনেসের। এছাড়াও যাদের জমি আছে, দালালরা শনিবার-রবিবারই তাদের সঙ্গে মিটিং সেট করে। তারাও আসে। তারা যদি এসে পরমেশ্বরকে সোনাহীন দেখে, তারা কী করে বিশ্বাস করবে— এই লোকটা এত টাকার প্রজেক্ট শেষ করবে! এর পকেটে টাকা আছে! নাকি মাছের তেলে মাছ ভাজবে? সবার বিশ্বাস জোগানোর জন্যই পরমেশ্বর এদিন আর্থিকসঙ্গতিপূর্ণ সাউন্ড বিজনেসম্যান সাজে। অফিসের টেবিলে ইংরেজি, বাংলা মিলিয়ে তিনটে খবরের কাগজ রাখে। এদিন সে পরম বা ঈশ্বর নয়, পুরোপুরি পরমেশ্বর ব্যানার্জি। একজন সফল প্রোমোটার অ্যান্ড ল্যান্ড ডেভলপার। মাথার পিছনে লেনিন, মার্কস আছেন তো কী হয়েছে, দু’হাতে ছ’টা নানা রঙের আংটিও তো আছে!
পরমেশ্বর মন দিয়ে খবরের কাগজ পড়ছিল। ঘরে ছিল ল’ইয়ার তরুণবাবু।  তিনি কোর্টের কাগজ সাজাচ্ছিলেন। পরশু দুটো ফ্ল্যাটের রেজিস্ট্রেশন আছে। তবে এই দু’দিন সহজের আসায় বাধা নেই। বরং এদিন সহজ থাকলে পরমেশ্বর বেশ খুশি হয়। অনেক সময়ই পার্টিদের সঙ্গে সহজের পরিচয় করিয়ে দেয়, এ ম্যাথমেটিক্সের স্কলার। এর বাবা খুব নামী ইনকাম ট্যাক্স ল’ইয়ার। সহজ সে সবদিনগুলোয় গম্ভীর হয়ে বসে থাকে। আর মনে মনে গালাগাল দেয়— স্কলার, না ছাই —!
ভানুদা থাকলে, পরিচয় হয় রিটায়ার্ড ব্যাঙ্ক ম্যানেজার। ভানুদা নড়ে না, চড়ে না। হয়তো মনে মনে বলে— ধরণী দ্বিধা হও। তিনি ব্যাঙ্ক কর্মচারী ছিলেন, ম্যানেজার নন। প্রতিবাদ করে কোনও লাভ নেই। চুপচাপ বসে থাকো। আর সত্যিকারের ঈশ্বরকে ডাকে— কেউ যেন চেনা না বেরিয়ে পড়ে, সে যেন না বলে বসে— দুর মশাই, ভানুবাবু আবার কবে অফিসার হলেন!
সহজের কথায় খুব যেন মজা পেল পরমেশ্বর। বলল, ‘তোর সেই তেত্রিশ দিন হয়ে গেল এরমধ্যে! ক্যাপ্টেনের কথা মিলল না তাহলে?’
‘না, একটি পাতাও খসেনি, ঝড় ওঠা তো দূরের কথা।’
‘তুইও তাহলে ক্যাপ্টেনের পাল্লায় পড়েছিলি— একটা একটা করে তেত্রিশ দিন গুনছিলি!’
‘হ্যাঁ, উনি তো তেত্রিশ দিনই বলেছিলেন সেদিন।’
‘ক্যাপ্টেন তোকে দিন বেঁধে দিয়েই ফ্লপ করল। সাদা পাতায় কালো অক্ষর— এই পর্যন্ত ঠিক ছিল। নে অনন্তকাল ভাব, ভেবে যা। কিন্তু তেত্রিশ দিন! মালটাকে ফোন করবি নাকি? ফোন করে বল— তোর তেত্রিশ দিন কেটে গিয়েছে। কোনও সুসংবাদের দেখা মেলেনি, ভাগ্য ফেরা তো দূরের কথা। এবার কী করব?’
সহজ হাসল, বলল, ‘বেচারা ক্যাপ্টেন! উনি যা ইনফরমেশন পেয়েছিলেন তাই বলেছেন। কিন্তু ওই তেত্রিশ দিনটা একটু বেশি হয়ে গিয়েছে। ওভারডোজ!  নাহলে ধরা পড়তেন না।’
‘ফোন কর, ফোন কর। ফোন করে বল তোমার ভবিষ্যদ্বাণী মায়ের ভোগে গিয়েছে। খিস্তি দে মাতালটাকে। নাতনির বয়সি মেয়েকে বিয়ে করলে সব অলৌকিক ক্ষমতাই ভোগে যায়।’
‘মেয়েটার কী দোষ! তোমাদের মতো ওই মেয়েটাও হয়তো ফাঁদে পড়েছে। আমার কাছে ওর ফোন নম্বর নেই।’
‘আমার কাছে আছে ওর নম্বর। ওখানে নম্বর লাগা। বল, ক্যাপ্টেনকে ডেকে দিতে, দশ মিনিট বাদে ফোন করছি।’
‘কার নম্বর?’
‘ক্যাপ্টেনের বাড়ির পাশেই একটা টালির গোলা আছে, তাদের ফোন।’
‘কেন ওর বউয়ের তো মোবাইল আছে। নম্বর জানো না তুমি?’
‘তুই কি আমাকে শঙ্কর পেয়েছিস— অন্যের বউয়ের ফোন নম্বর টুকে রাখব। এই নে টালির গোলার নম্বর।’
পরমেশ্বর তার সামনে থাকা ডায়েরি এগিয়ে দেয়। সহজ নম্বর মিলিয়ে ফোন করে। বলে, দশ মিনিট পরে ফোন করছি। ক্যাপ্টেনকে চা‌ই।
দশ মিনিট পরে ফোন করতেই ক্যাপ্টেন ধরে। সহজ খুব ঠান্ডা গলায় বলে— ‘আমি সহজ বলছি, চিনতে পারছেন। সেই সুজিদার সাধে—’
‘হ্যাঁ, হ্যাঁ কেন চিনতে পারব না। স্মৃতিশক্তি দুর্বল হোক তোর। অ্যালঝা‌ইমার্স, ডিমেনসিয়া হোক তোর বাপের। আমি এখনও টাটকা তাজা, মজাদার!’
সহজ হাসল, বলল, ‘সে হোক। তাহলে চিনতে পারছেন? কিন্তু তেত্রিশ দিন হয়ে গেল, আপনার ভবিষ্যদ্বাণী যে মিলল না।’
ক্যাপ্টেন বললেন, ‘এর মধ্যে তেত্রিশ দিন হয়ে গেল! কী আশ্চর্য! কীভাবে দিন যায়!’
‘আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। প্রতিদিন সূর্য ওঠে, অস্ত যায়— একটা করে দিন শেষ হয়। এভাবেই তেত্রিশ দিন হয়েছে। আমার কিছু হয়নি— নো সুসংবাদ!’
ফোনের ওপারে চুপ! চুপ করে আছে ক্যাপ্টেন। সহজ সেই শুকনো মুখটা যেন দেখতে পাচ্ছিল। বলল, ‘আপনি ফ্লপ! আপনার ভবিষ্যদ্বাণী ফ্লপ!’
পিছন দিক থেকে পরমেশ্বর চিৎকার করে, ‘ক্যাপ্টেন, তুমি মায়ের ভোগে।’ 
নীরবতা ভেঙে ক্যাপ্টেন বলল, ‘আমি হাত গুনি না, কোষ্ঠী বিচার করি না রে ভাই, আমার যা মনে হয়েছিল তাই বলেছিলাম। মেলেনি তো মেলেনি, আমি কী করব?’
‘হ্যাঁ আপনি তো বলেছিলেন লাগে তুক, না-লাগে তাক! পুরো ঢপ!’ সহজের গলায় তীব্র শ্লেষ!
 ‘হ্যাঁ, পুরো ঢপ, তবু বলব, ওই কালো মানুষজন, প্রমোটার, ভাঙোয়ার, দালালগুলোর সঙ্গে থাকিস না। হুল্লোড়ে মাতিস না। এটা আমি ঠিক বলছি। নিজেকে খরচা করে ফেলিস না।’
সহজ বুঝল ধরা পড়ে লোকটা এবার জ্ঞান দিচ্ছে। এসব কথা বলার জন্য পিশাচ সাধু হতে হয় না। তার বাবা সম্বুদ্ধ মিত্র হলেও হয়। বনি হলেও হয়। সহজ বলল, ‘আপনি যে কথা বলছেন, তা আমার বাবা সম্বুদ্ধ মিত্রও বলেন, আমার এক বন্ধু আছে সে-ও বলে। আপনি নতুন কিছু বলছেন না।’
ক্যাপ্টেন বিষণ্ণ গলায় বলল, ‘বুঝতে পেরেছি, তুই বলছিস আমি তোকে জ্ঞান দিচ্ছি।’ কথাটা বলে চুপ করে গেলেন। বেশ কিছুক্ষণ চুপচাপ। সহজের মনে হল লোকটা ফোন ছেড়ে দিয়েছে, সে বলল, ‘হ্যালো—।’
‘একটা কথা ভাবছিলাম, সারা জীবন ধরে আমি অনেক অনেক খারাপ কথা বলেছি। নতুন কাউকে দেখলে আমার খারাপ কথাগুলোই ভেসে ওঠে।   কিন্তু সেটা খারাপ কথা, ভালো কথা নয়। আমি স্পষ্ট কালো ছোপ দাগ দেখতে পাই। আমি ভালো দেখতে পাই না। আমার জীবনে দু-একজন মানুষকে দেখে ভালো ভালো কথা বলতে ইচ্ছে করেছিল। তার মধ্যে তুই একজন। মনে হয়েছিল, আমি ভালো বলতে পারি। ভালো কিছুও দেখতে পারি। আমি শুধু পিশাচ নই, মানুষের হাড় মাংস ছাই ভস্ম শুধু নই। ভুল হয়ে গেল। না রে আমার ভালো দেখার ক্ষমতা নেই। পরি ঠিক চিৎকারই করছে, আমার ক্ষমতা নেই। ভালো বলার ক্ষমতা নেই।  পরিকে বলে দে— ক্যাপ্টেন ইজ ডেথ!’
কট করে ফোন কেটে গেল। 
সহজ ফোনটা রেখে চেয়ার টেনে বসল। পরমেশ্বর উঠে জানলার সামনে দাঁড়াল। ওর মনটা হঠাৎ অস্থির অস্থির লাগছে। এই হাঁটুর বয়সি ছেলেটা ক্যাপ্টেনকে ধাপ্পাবাজ বানিয়ে দিল। অথচ এত বছর ধরে সে ক্যাপ্টেনকে ফলো করে এসেছে। এলাকায় থাকেনি। এটা নিয়ে অনেক হাসি-ঠাট্টা শুনেছে। ক্যাপ্টেন তো তার পিঠে হাত দিয়ে বলেছিল— পিঠ বাঁচা। তার পিঠ বেঁচেছিল অজিতের প্রাণের বিনিময়ে।
সহজ বলল, ‘তোমার ক্যাপ্টেন যে এত সহজে হার মেনে নেবে ভাবিনি। তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল।’
মাথা নাড়ল পরমেশ্বর। ‘লোকটার ক্ষমতা চলে গিয়েছে— ফুল ফর্মে থাকা ক্যাপ্টেনকে দেখিসনি। ও! কী দাপট, তোকে আঙুল গুনিয়ে তেত্রিশ দিন গোনাত,  মেনে নিত না। অনেক তর্ক করত, ঝামেলা করত। দেখ আমি রঞ্জন মুখার্জির মতো একজন সিনিয়র লিডারকে দেখেছি, সন্দেহজনক মানুষ ধরে ধরে ক্যাপ্টেনের বাড়ি নিয়ে যেতেন। তার সম্পর্কে কী বলে শুনতেন। শোন তোকে একটা গল্প বলি। এই গল্পটা আমাকে ক্যাপ্টেনই বলেছিল। বিম্বিসার আর অজাতশত্রুর গল্প। অজাতশত্রুকে দেখে বুদ্ধ বুঝেছিল— এই ছেলে পিতা বিম্বিসারের দুঃখের কারণ হবে।  বুদ্ধের কথা মিলে যায়। বিম্বিসার ও বুদ্ধকে হত্যা করতে যান অজাতশত্রু। ব্যর্থ হন। বিম্বিসার তাঁকে ক্ষমা করেন। কিন্তু অজাতশত্রু পরে আবার বিম্বিসার আর তাঁর পারিষদদের বন্দি করে মগধের সিংহাসনে বসেন। গৃহবন্দি অবস্থায় বিম্বিসারের মৃত্যু ঘটে। বুদ্ধকেও হত্যা করতে যান। কিন্তু পিতার মৃত্যুর পরে অজাতশত্রুর অনুশোচনা হয়। তিনি বুদ্ধের শরণ নেন।
এই ঘটনাটা আমার জীবনেও ঘটেছে।
কমরেড রঞ্জন মুখার্জির কাজ ছিল, বা খেলা বলতে পারিস— মাঝে মাঝে একে তাকে ধরে নিয়ে যেতেন ক্যাপ্টেনের বাড়ি। দেখতেন ক্যাপ্টেন তার সম্পর্কে কী বলে— একবার একটা খুব কাছের ছেলেকে ধরে নিয়ে গেল ক্যাপ্টেনের কাছে। ওই ছেলেটাকে দেখে ক্যাপ্টেন সাবধান করে দিয়েছিল রঞ্জনদাকে। বলেছিল— এ ছেলে তোমার দুঃখের কারণ হবে। রঞ্জনদা এটা অনেক সময়ই হাসতে হাসতে গল্প করত। বলত,  ক্যাপ্টেনের এটা ফলস হয়ে গিয়েছে। কিন্তু কিছুদিন পরে, সেই ছেলে ওই রঞ্জন মুখার্জিকেই উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। জানাজানি হয়ে যায়। তার বাবাও পার্টি মেম্বার। তিনি গিয়ে ক্ষমা চান। রঞ্জনদা ক্ষমা করে দেন। সেবারও ক্যাপ্টেন গিয়ে রঞ্জনদাকে বলেছিল— ক্ষমা করে ভুল করলে রঞ্জন। ও তোমাকে আবার ছোবল দেবে। ক্যাপ্টেনের কথা কিন্তু মিলে গিয়েছিল। ছেলেটা সত্যি এবার ছোবল দিল। বাণপ্রস্থে পাঠিয়ে দিয়েছিল রঞ্জন মুখার্জিকে। পরে তার অনুশোচনা হয়। ততদিনে দেরি হয়ে গিয়েছে। সে সেই অনুশোচনা নিয়ে ক্যাপ্টেনের কাছে যায়। ক্যাপ্টেন হাসেন, বলেন— তুমিই এখন মগধের সিংহাসনে বসো। সেই ছেলেটা আমি। তখনই ক্যাপ্টেন আমাকে গল্পটা বলেছিল। যা আমার আজও মনে আছে। আমি ক্যাপ্টেনকে বিশ্বাস করি কি না বলতে পারব না, কিন্তু চেষ্টা করি অবিশ্বাস করার, পারি না। তুই পারলি ওর মায়াজাল কেটে বেরিয়ে যেতে।’
হ্যাঁ, সহজ পারল, পিশাচ সাধুর তেত্রিশ দিনের মায়াজাল কেটে বেরিয়ে যেতে।
সহজ আজ সারাদিন ধরে হাসছে, রাস্তায় বসা জ্যোতিষীদের টিয়াপাখিগুলোর মতো মনে হচ্ছে ক্যাপ্টেনকে। খাঁচা থেকে বেরিয়ে এসে একটা কাগজের টুকরো টেনে দিয়ে চলে গিয়েছে। সে কাগজের টুকরোয় লেখা সহজের ভবিষ্যদ্বাণী!
সন্ধেবেলায় পড়াতে গেলে সৃজনী বলল, ‘স্যার আপনার সেই গুড নিউজটার কী হল?’
‘হলে বলব।’
‘এখনও কি সময় হয়নি? গুড নিউজগুলো এত দেরি করে কেন?’
সৃজনীকে পড়িয়ে সহজ গিয়েছিল নচের ঠেকে। নচে বলল, ‘পাখি তো আজ বিকেলে ফুরুত। দাদা এলাকায় নেই, পাহাড়ে। কাল থেকে কোম্পানির মালিক সাজবে সুজিদা।’
খানাপিনা সেরে বাড়ি ফিরতে একটু রাত হয়ে গিয়েছিল। সাধারণত এসময়ে ঠাকুমা, বাবা, মা কারও সঙ্গে দেখা হয় না সহজের। বা বলা যায় দেখতে চায় না। অচলদা দরজা খুলে দিতেই সোজা ওপরে চলে যায়। খাবার ওপরেই দেওয়া থাকে। আজও দরজা খুলে ওপরে চলে যাচ্ছিল সহজ। হঠাৎই বাবার  গলার আওয়াজে থমকে দাঁড়াল—  ‘শোনো, আজ তোমার একটা চিঠি এসেছে। আমার কাগজের তাড়ার মধ্যে পড়েছিল— এই নাও।’
‘আমার চিঠি?’
‘হ্যাঁ, তোমার নামই তো লেখা। অফিসিয়াল চিঠি, কিন্তু খোলা চিঠি—  চিঠিটা আমি পড়েছি। পড়ে খুশি হয়েছি। তাই অন্যের চিঠি পড়ার জন্য  দুঃখিত হয়ে সরি জানাতে পারছি না।’
চিঠিটা দু’আঙুলে নিয়ে সম্বুদ্ধ মিত্র হাসছেন।
(চলবে)                       
18th  April, 2021
মিষ্টু
উৎপল দাস

রিমা ভিতরে ভিতরে জ্বলে পুড়ে মরে। এ পৃথিবীতে কেউ নেই যে তার অবস্থা বোঝে। মিষ্টুকে বিদায় না করতে পারলে যেন ওর শান্তি নেই।  বিশদ

11th  April, 2021
পিশাচ সাধু
জয়ন্ত দে
ধারাবাহিক উপন্যাস, পর্ব   ৮

সহজের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার সময় পরমেশ্বর শান্ত গলায় বলেছিল— বিচিত্রদা সেই বিরল মানুষ যারা এখনও মনে করে বিপ্লব হবে। কখন হবে, কীভাবে হবে কেউ জানে না, শুধুমাত্র একটা স্ফুলিঙ্গ। সেই স্ফুলিঙ্গ থেকে দাবানল হয়ে যাবে। বিশদ

11th  April, 2021
বিদিশা কি ভানুমতী?
আশিস ঘোষ

বেশি কথা বা শব্দ, আলো এখন ভালো লাগছে না। বিদিশাকে বলতেই, ও টিউব লাইট নিভিয়ে জিরো পাওয়ারের নীল আলো জ্বালিয়ে দিল। জানলার পর্দা হাওয়ায় উড়ছে। বাইরের রাস্তায় গাড়ির শব্দ। বিদিশা আমার দিকে চেয়ে আছে। কিছুই বলছে না। বিশদ

04th  April, 2021
পিশাচ সাধু
ধারাবাহিক উপন্যাস, পর্ব   ৭
জয়ন্ত দে

দারোগা বাড়ির নিমন্ত্রণে ক্যাপ্টেন হঠাৎ উদয় হল কেন? এ প্রশ্ন সহজের মনে অবিরাম ঘুরপাক খাচ্ছে। নচের সঙ্গে কথা বলে মনে হল, ক্যাপ্টেনকে সেদিন দারোগা বাড়িতে পাঠিয়েছিল পরমেশ্বরের পার্টনার শঙ্কর। সহজের কাছে আস্তে আস্তে পরিষ্কার হতে থাকে পুরো স্কিমটা। এদিকে, ক্যাপ্টেনের ভবিষ্যদ্বাণীর আতঙ্ক থেকে কিছুতেই বেরিয়ে আসতে পারছে না নচে। তারপর... বিশদ

04th  April, 2021
দহ
হামিরউদ্দিন মিদ্যা

ঘুম-জড়ানো চোখেই ধড়ফড় করে উঠে দাঁড়াল নুরু। মাটি থেকে গামছাটা তুলে, ধুলো ঝেড়ে কোমরে বাঁধল। বাঁ-হাতে নিল পাচন লাঠিটা। গোরু-মোষের দলটা সামনেই চড়ছে। মোষগুলোর দিকে চেয়ে দেখল, নিবারণ ঘোষের লেজকাটা মোষটা নেই। বুকটা ছ্যাঁৎ করে উঠল নুরুর। পাগলের মতো ছুটতে লাগল দহের দিকে। বিশদ

28th  March, 2021
পিশাচ সাধু
ধারাবাহিক উপন্যাস  পর্ব   ৬
জয়ন্ত দে

সহজের একটিমাত্র টিউশন টিকে আছে। মনোতোষ স্যারের কোচিং ক্লাস সে ছেড়ে দিয়েছে। সৃজনীকে পড়ানোর সময় মুখ ফস্কে সহজ বলে ফেলে, তার ভাগ্য খুলতে আর ঊনত্রিশ দিন বাকি। অথচ, প্রেমিকা বর্ণিনীকেও সে ক্যাপ্টেনের ভবিষ্যদ্বাণী নিয়ে কিছু বলেনি। এদিকে, সহজকে পরমেশ্বর সাবধান করে, ‘পিশাচের ফাঁদের পড়িসনি।’ তারপর... বিশদ

28th  March, 2021
ভুল ফোন
কৌশানী মিত্র

ছেলেটি নরম। মেয়েটি কঠিন। ছেলেটির চোখে সারাক্ষণ জল টলটল করছে। আসলে জন্মানোর পর শুধু লড়াই করতে করতে দু-দণ্ড বসে কাঁদতে পারেনি কোনওদিন। এখন যেটুকু যা আছে তাইই ইমনের সামনে উপুড় করে দিতে পারলে যেন বেঁচে যায়। বিশদ

21st  March, 2021
পিশাচ সাধু
ধারাবাহিক উপন্যাস, পর্ব   ৫
জয়ন্ত দে

নচে রেগে গিয়ে ক্যাপ্টেনকে রিকশসুদ্ধু খালে ফেলে দেওয়ার সুপারি দিল নেত্রকে। স্ত্রীকে নিয়ে নেত্রর রিকশয় উঠলেন ক্যাপ্টেন। রিকশ এগতে থাকে আর স্বামীকে একের পর এক অনুযোগ করতে থাকে বঁড়শি। তারপর... বিশদ

21st  March, 2021
পিশাচ সাধু
জয়ন্ত দে

পিশাচ সাধু ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন সহজের। নচেও তার ভবিষ্যৎ জানতে চায়। সাধু বলেন, ‘তুই অপঘাতে মরবি।’ শুনে প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত নচে। তারপর... বিশদ

14th  March, 2021
তন্ত্রমন্ত্র
সৌমিত্র চৌধুরী

ঠক ঠক ঠক। অন্ধকার ঘর। মিনিট পাঁচেক হল কারেন্ট চলে গিয়েছে। নিজের বিছানায় চাদর মুড়ি দিয়ে বসে আছি। তবুও মশার কামড়। স্বস্তিতে বসতেও পারছি না। তার মধ্যে দরজায় টোকা।  বিশদ

14th  March, 2021
পিশাচ সাধু
জয়ন্ত দে 

দারোগাবাড়ির ঠেকে সহজকে দেখে হঠাৎই ক্যাপ্টেন বেমক্কা বলে বসলেন— ‘তুই ভুল করেছিস পরি! এ ছেলে সহজ নয়, এ ছেলে কেন তোর এখানে? বড্ড ভুল করছিস!’ পরমেশ্বর অবাক হয়ে জানতে চাইল, ‘কেন, কী ভুল করলাম ক্যাপ্টেন?’ তারপর... 
বিশদ

07th  March, 2021
পিশাচ সাধু 
জয়ন্ত দে

পরমেশ্বরের সঙ্গে দারোগা বাড়ির ভূতুড়ে ঠেকে এসেছিল সহজ। হুল্লোড়ের মাঝে সেখানে হঠাৎই হাজির হলেন ক্যাপ্টেন। যিনি নিজেকে পিশাচ সাধু বলেন। তিনি সহজকে দেখে বললেন, তুই এখানে কেন? তারপর... 
বিশদ

28th  February, 2021
দেশি ছেলেপুলে 
চন্দন চক্রবর্তী

ব্যানার্জিবাবু প্রচণ্ড উত্তেজিত! ‘তা বলে আমার ফ্ল্যাটের সামনে?’ আবাসনের পার্কে তখন প্রাতঃভ্রমণকারীরা বসে। কেউ রামদেব, কেউ বা ফড়িং-এর মতো ফড়ফড় করে হাত-পা নাড়ানাড়ি করছেন। ব্যানার্জিবাবু রীতিমতো সুদর্শন। ফর্সা রং, চোখে বিদেশি চশমার ফ্রেমে আঁটা দেশি চশমার লেন্স।  
বিশদ

28th  February, 2021
ভাষা ও ভালোবাসা 
ছন্দা বিশ্বাস

অহর্নিশকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। দুপুরে খাওয়ার পর দোতলার ঘরে শুয়েছিল অহর্নিশ। শুয়ে শুয়ে একটা কমিক্সের বইয়ের পাতা ওল্টাচ্ছিল। অবন্তিকা দেখে এসেছে। ভেবেছে গল্প পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে পড়বে। ছেলের মাথার হাত বুলিয়ে বলে এসেছে, ‘তাড়াতাড়ি একটু ঘুমিয়ে নাও, চারটের সময়ে কিন্তু আমাদের বেরতে হবে।  
বিশদ

21st  February, 2021
একনজরে
বারবার প্রস্তাব ছিল স্বয়ং পিনারাই বিজয়নের বিরুদ্ধে লড়ার। কিন্তু জাতীয় রাজনীতিতে বিজেপির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের মঞ্চে এক সঙ্গে কাঁধে কাঁধ দিয়ে চলার কারণে সেই প্রস্তাবে ...

শনিবার বিকেলে রানিগঞ্জ ব্লকের তিরাট পঞ্চায়েতে প্রচার ছিল সায়নী ঘোষের। পূর্ব কর্মসূচি মতোই তিরাট পঞ্চায়েতের সবচেয়ে বড় বাজার চেলোদে এসে তাঁর গাড়ি থামে। স্বাভাবিকভাবেই তাঁকে ...

ষষ্ঠ দফার নির্বাচনের প্রচারের শেষ দিনে আজ, সোমবার উত্তর দিনাজপুর জেলায় তিনটি সভা করছেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা ...

রবিবার সকাল থেকে ভোট-পরবর্তী হিংসায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে চাকদহ থানার রাউতাড়ী পঞ্চায়েতের উত্তর এনায়েতপুরের মণ্ডলপাড়া। বাড়ির সামনে থেকে দেহ উদ্ধার হয় এক বিজেপি কর্মীর। মৃতের নাম দিলীপ কীর্তনীয়া (৩১)।   ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

অত্যধিক পরিশ্রমে শারীরিক দুর্বলতা। বাহন বিষয়ে সতর্কতা প্রয়োজন। সন্তানের বিদ্যা-শিক্ষায় অগ্রগতি বিষয়ে সংশয় বৃদ্ধি। আধ্যাত্মিক ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৮৮২: বিবর্তনবাদের স্রষ্টা চার্লস ডারউইনের মৃত্যু
১৯৫৫: শিকারি ও লেখক জিম করবেটের মৃত্যু
১৯৫৭: শিল্পপতি মুকেশ আম্বানির জন্ম
১৯৫৮: সাহিত্যিক অনুরূপা দেবীর মৃত্যু
১৯৮৭: রুশ টেনিস খেলোয়াড় মারিয়া শারাপোভার জন্ম  



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৭৩.৬৯ টাকা ৭৫.৪১ টাকা
পাউন্ড ১০১.৩৬ টাকা ১০৪.৯০ টাকা
ইউরো ৮৭.৭৬ টাকা ৯০.৯৪ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
18th  April, 2021
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৪৮,০৫০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৪৫,৬০০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৪৬,৩০০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৬৯,২০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৬৯,৩০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]
18th  April, 2021

দিন পঞ্জিকা

৫ বৈশাখ ১৪২৮, সোমবার, ১৯ এপ্রিল ২০২১। সপ্তমী ৪৬/৫২ রাত্রি ১২/২। পুনর্বসু নক্ষত্র অহোরাত্র। সূর্যোদয় ৫/১৭/৭, সূর্যাস্ত ৫/৫৪/৩৫। অমৃতযোগ দিবা ৬/৫৯ মধ্যে পুনঃ ১০/২০ গতে ১২/৫২ মধ্যে। রাত্রি ৬/৪০ গতে ৮/৫৬ মধ্যে পুনঃ ১১/১২ গতে ২/১৬ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ দিবা ৩/২৩ গতে ৫/৪ মধ্যে। বারবেলা ৬/৫১ গতে ৮/২৬ মধ্যে পুনঃ ২/৪৫ গতে ৪/২০ মধ্যে। কালরাত্রি ১০/১০ গতে ১১/৩৫ মধ্যে।  
৫ বৈশাখ ১৪২৮, সোমবার, ১৯ এপ্রিল ২০২১। সপ্তমী রাত্রি ৬/৫৭। পুনর্বসু নক্ষত্র রাত্রি ২/১৬। সূর্যোদয় ৫/১৭, সূর্যাস্ত ৫/৫৬। অমৃতযোগ দিবা ৬/৫৮ মধ্যে ও ১০/১৫ গতে ১২/৫১ মধ্যে এবং রাত্রি ৬/৪৬ গতে ৯/০ মধ্যে ও ১১/১১ গতে ২/৭ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ দিবা ৩/২৭ গতে ৫/১০ মধ্যে। কালবেলা ৬/৫২ গতে ৮/২৭ মধ্যে ও ২/৪৬ গতে ৪/২১ মধ্যে। কালরাত্রি ১০/১২ গতে ১১/৩৭ মধ্যে।  
৬ রমজান। 

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
আইপিএল: রাজস্থান রয়্যালস-এর বিরুদ্ধে ৪৫ রানে জিতল চেন্নাই সুপার কিংস 

11:29:00 PM

আইপিএল: রাজস্থান ৯৭/৭(১৫ ওভার)

11:00:41 PM

আইপিএল: রাজস্থান ৮১/২(১০ ওভার)

10:32:46 PM

আইপিএল: রাজস্থানকে ১৮৯ রানের টার্গেট দিল চেন্নাই

09:37:20 PM

আইপিএল: চেন্নাই ১৩৩/৫ (১৬ ওভার) 

09:02:32 PM

আইপিএল: চেন্নাই ৯৮/৩ (১১ ওভার) 

08:34:07 PM