Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

ভাষা ও ভালোবাসা 
ছন্দা বিশ্বাস

অহর্নিশকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। দুপুরে খাওয়ার পর দোতলার ঘরে শুয়েছিল অহর্নিশ। শুয়ে শুয়ে একটা কমিক্সের বইয়ের পাতা ওল্টাচ্ছিল। অবন্তিকা দেখে এসেছে। ভেবেছে গল্প পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে পড়বে। ছেলের মাথার হাত বুলিয়ে বলে এসেছে, ‘তাড়াতাড়ি একটু ঘুমিয়ে নাও, চারটের সময়ে কিন্তু আমাদের বেরতে হবে। রাত ন’টায় ফ্লাইট।’
কথা বলে অবন্তিকা নীচে নেমে এসেছে। ড্রয়িংরুমে তখন বাবা আর ছেলে লাস্ট মিনিট কিছু কথাবার্তা সেরে নিচ্ছে। এই যেমন দত্তপুকুরে তাদের পৈতৃক ভিটেটা আর জমি জমা পুকুর সমেত কম তো নয়। এতটা দিন উন্মীলনের ভরসাতে রাখা ছিল। উন্মীলন সেই কোন ছেলেবেলা থেকে বলে আসছে ওই জায়গাটা কিছুতেই বিক্রি কোরো না বাবা, আমি ছুটিতে যখন আসব, তখন ওখানে সময় কাটাব। ওই পুকুরটাকে সংস্কার করতে হবে, মাছ চাষ করতে হবে। পুকুরটার পাড় বাঁধিয়ে ওখানে একটা গার্ডেন বানাব। বাবা, রিটায়ার্ড লাইফে ওখানে গেলে খুব ভালো লাগবে। তোমার কত পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হবে। আমারও কত বন্ধু আছে। যদিও তারা অনেকেই এখন ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে, তবে এক সময়ে তারা ঠিক দেশে ফিরে আসবে।
কথাগুলো একবিন্দুও মিথ্যে বলেনি উন্মীলন। বিপুলবাবুরও যে ওই জায়গাটা বিক্রি করবার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে নেই। এখনও দেশের বাড়ির পুরনো দিনের বেশ কয়েকজন বন্ধু-বান্ধব বেঁচে আছেন। উনি এসেছেন শুনলে তাঁরা সকলে চলে আসেন গল্প করতে। শৈশব এসে দাঁড়ায় দরজায়। কৈশোর মেতে ওঠে তাদের হাসিতে। তারুণ্যে মুখরিত হয় গোটা বাড়িটা।
বছর পনেরো হল উন্মীলন কলকাতা ছেড়েছে। সেই যে এইচএসের পরে প্রথমে মাদ্রাজ আইআইটিতে ঢুকল তারপর সেখান থেকে এমটেক করে সোজা ক্যালিফোর্নিয়া। সেখানে পাঁচ বছর হায়ার স্টাডিজ করে বেঙ্গালুরুতে একটা মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানিতে জয়েন করল। তারপর ফের ক্যালিফোর্নিয়া চলে গেল। দুই বছরের মাথায় একবার এসেছিল। এখন নিউ ইয়র্কে থাকে ওরা।
‘এই তোমরা দেখেছ কেউ ওমকে?’
অবন্তিকার গলায় উদ্বেগ।
অহর্নিশকে সকলে ওম বলেই ডাকে। এটি ওর মায়ের দেওয়া নাম। আর বার্থ সার্টিফিকেটে দাদাইয়ের দেওয়া নাম— অহর্নিশ মুখার্জি।
‘কেন, ওম কোথায়?’
উন্মীলন ঘাড় ঘুরিয়ে জিজ্ঞাসা করে। পিছনে অবন্তিকা দাঁড়িয়ে। বেশ একটু টেন্সড হয়ে আছে মনে হচ্ছে।
‘আমি তো সেই একই কথা জানতে চাইছি। ঘড়ির দিকে খেয়াল আছে? ক’টা বাজে বলো তো?’
‘ক’টা বাজে?’
উন্মীলন সামনের দেওয়ালে টাঙানো ঘড়িটার দিকে তাকিয়ে বলে, ‘সবে মাত্র তিনটে বাজে। এত তাড়াহুড়োর কী আছে, এইটুকু তো মাত্র পথ। বড়জোর আধ ঘণ্টা লাগবে।’
‘বিকেলের দিকে কেমন জ্যাম থাকে জানোই তো যশোর রোডে। সেবার তো পাক্কা দেড় ঘণ্টা লেগে গিয়েছিল। ভুলে গেলে?’
‘না, ভুলিনি। সেদিনের কথা আলাদা। সেদিন সম্ভবত পিএম আসার কথা ছিল তাই অনেক রাস্তাই বন্ধ ছিল। আজ তো আর তেমন কিছু নেই। কিন্তু ওম কোথায় গেল? ছাদে যাইনি তো? তিনতলার সব ঘর দেখেছ? কোথাও আবার ঘুমিয়ে পড়েনি তো? ও তো ভাত খেয়ে উপরে গেল দেখলাম।’
‘সব দেখা হয়ে গিয়েছে। কোত্থাও নেই।’
‘মা কোথায়? পাশের বাড়িতে দেখেছ? সামনের রাস্তায় আবার ঘুরছে না তো? ওকে তো কয়েকবার বলতে শুনেছি, বাবা, এই রাস্তাটা কি সুন্দর না? এখানে ছুটির দিনে সবাই কেমন রাস্তায় ক্রিকেট খেলে, আমার খুব ভালো লাগে ওদের সঙ্গে খেলতে।’
বিপুলবাবুকেও বেশ চিন্তিত দেখাচ্ছে। ‘তাই তো দাদুভাই কোথায় যেতে পারে, কিছুই তো বুঝতে পারছি না। আমি কি একবার দেখব?’
‘কোথায় দেখবে বলো তো? আমি তো সামনের রাস্তায় দেখে এলাম। আশপাশের বাড়িতেও খোঁজ নিলাম। কোথাও নেই।’
‘তোমাদের মা কোথায় গেলেন?’
‘মা রুপুদির বাড়িতে গিয়েছেন।’
‘রুপুর বাড়িতে! কেন? এখন আবার রুপুর বাড়িতে কী দরকার? সে তো কাজকর্ম সব করে দিয়ে সেই দুপুরবেলায় চলে গিয়েছে।’
‘কী জানি বাবা, ওম আবার রুপুদির বাড়িতে চলে গেল না তো? এই ক’দিন রুপুদির ছেলের সঙ্গে তো ভালোই খেলাধুলো করছিল।’
ওম সেদিন রুপুদের বাড়িতে ঘুরে এসে অবন্তিকার কাছে জিজ্ঞাসা করে, ‘মা, রুপু পিসিরা অমন ভাঙা চোরা বাড়িতে থাকে কেন? মা জানো, আমি দেখলাম, রুপু পিসি যা খাবার নিয়ে গেল, তাই ওরা তিনজন মিলে খেল। মা, একজনের খাবারে তিনজনের পেট ভরেছে?’ ইত্যাদি কত প্রশ্ন।
রুপুর দুই ছেলে— রুই আর কাতলা। রুইয়ের সঙ্গে ভারী ভাব হয়েছে ওমের। ওমকে অনেক খেলা শিখিয়ে দিয়েছে রুই। নিউ ইয়র্কের বাড়িতে ওম ছুটিতে একা একাই কম্পিউটারে নানা গেম খেলে সময় কাটায়। এখানে এসে এক বিন্দু কম্পিউটারের সামনে বসেনি। সারাটাদিন আশপাশের বাচ্চাদের সঙ্গে না হলে রুই আর কাতলার সঙ্গে খেলেছে। একদিন নাকি ওদের স্কুলেও গিয়েছে। রুপুদের বাড়ির পাশেই একটা সরকারি ইস্কুল আছে। প্রাইমারি স্কুল। আশপাশের ছেলেমেয়েরা সেখানে পড়াশোনা করে।
‘আমাদের ছোটো নদী চলে বাঁকে বাঁকে
বৈশাখ মাসে তার হাঁটু জল থাকে...’
এ কয়েক দিনে সহজপাঠের বেশ কিছু কবিতা নিমেষে মুখস্থ করে ফেলেছে অহর্নিশ ।
রাতে দাদু ঠাম্মির কাছে শুয়ে শুয়ে কত যে গল্প শুনেছে। কত নাম জেনেছে লেখকদের। উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, সুকুমার রায়, সত্যজিৎ রায়, লীলা মজুমদারের বই পড়ে শুনিয়েছে ঠাম্মি। বাবার ছেলেবেলার কতরকম মজার মজার গল্পের বই। কমিক্স, অঙ্কের ধাঁধা, কেমিক্যাল ম্যাজিকের বই। ভাবতেই কেমন যেন রোমাঞ্চ জেগেছে ওমের। সকালে উঠেই ওদের লাইব্রেরিতে গিয়ে দাদুকে বলে বইগুলো বের করেছে। তারপর অন্ধের মতো সেই বই এর প্রতিটা লেখার উপরে হাত বুলিয়েছে।
অবন্তিকাকে গিয়ে বলেছে, ‘মা, আমি বাংলাতে কথা বলি, কিন্তু বাংলা লিখতে বা পড়তে পারি না কেন? এই যে আলমারি ভর্তি এত এত বই, দাদুর নিজের লেখা কত বই— অথচ আমি একটা বইও পড়তে পারছি না? তোমরা আমাকে বাংলা পড়তে শেখাওনি কেন? আমার খুব কষ্ট হচ্ছে আমি এই বইগুলো পড়তে পারছি না বলে।’
সেদিন বাড়িতে না বলে রুই, কাতলাদের স্কুলে গিয়েছিল ওম। টিচারদের সঙ্গেও পরিচয় হয়েছে ওমের। বাড়িতে ফিরে বলেছে, বাচ্চারা কী সুন্দর সকলে একসঙ্গে মিলে মিড ডে মিল খায়। ওমও সেদিন ওদের সঙ্গে ডিম-ভাত খেয়েছে।
রাতে ডিনার করার সময়ে মিড ডে মিলের কথাটা যখন সকলকে বলেছে তখন সে কি হাসি অবন্তিকা আর উন্মীলনের। তার সঙ্গে যোগ দিয়েছেন বিপুলবাবু ও বিশাখাদেবীও।
উন্মীলন বলল,‘সাবাশ বেটা, তুই তো দেখছি ছুটিটা ষোলোআনা উশুল করে নিলি? আর কিছু বাদ থাকল?’
উন্মীলন আসছে ওর বউ ছেলেকে নিয়ে।
যেদিন থেকে শুনেছে সেদিন থেকে দিন গুনছেন বিশাখা। সেই কোন ছোটোবেলায় দেখেছিল নাতিকে। কত বছর বাদে আসছে উন্মীলন।
এই ফ্ল্যাটটা উন্মীলনের জন্যই কেনা হয়েছিল। বিপুলবাবু সেই সময়ে বীরভূমের একটা কলেজে অধ্যাপনা করতেন। উন্মীলন ওখানেই হয়েছিল। তারপর একটু বড় হলে বিশাখাই একদিন বলল, ‘চলো, এবারে আমরা কলকাতায় ফিরে যাই।’
উন্মীলনে পড়াশোনার কথা ভেবেই বিপুলবাবু কলকাতায় চলে এলেন । আর গোরা বাজারে একটা ফ্ল্যাট কিনে নিলেন।
উন্মীলন সেন্ট স্টিফেন্সে পড়ত। খুব মেধাবী ছাত্র ছিল। সকলের চোখ ছিল ওর দিকে। উন্মীলন বলার মতোই রেজাল্ট করেছিল বোর্ড এগজ্যামে। ওয়েস্ট বেঙ্গল টপার তো বটেই ইন্ডিয়াতে প্রথম দশের ভিতরে ওর নাম ছিল। তারপর আইআইটি-তেও টুয়েলফথ পজিশান পায় ও। ইচ্ছা করেই মুম্বই বাদ দিয়ে চেন্নাই আইআইটিতে নিজের পছন্দের সাবজেক্ট নিয়ে ভর্তি হল। তখনও পর্যন্ত বিপুলবাবু আর বিশাখা দেবী ছেলের চিন্তাতেই বিভোর হয়ে থাকতেন। একটু একটু করে দিন কেটে গেল। ছেলে হায়ার স্টাডিজ করতে ইউএসএ চলে গেল। তারপর পড়াশোনা শেষ করতেই একটা ভালো চাকরির অফার পেয়ে গেল। সেই থেকে ওখানেই জব করা শুরু করল।
বিশাখা দেবী নিজের হাতে বাড়ির মধ্যে একটু একটু করে গড়ে তোলা লাইব্রেরিটার সামনে মাঝেমধ্যে এসে দাঁড়ান। আর মনে মনে বলেন, কী হবে এই বইগুলোর ভবিষ্যৎ? আমরা যতদিন আছি, ততদিনই এদের যত্ন করতে পারব। তারপর তো সব হারিয়ে যাবে। কে আর এদের দেখভাল করবে? বাবুরা দুই-তিন বছরে একবার আসবে তখন কী এই বইগুলোর দিকে তাকানোর সময় পাবে? আর আমরা চলে গেলে ওরা আর কীসের টানে এ দেশে আসবে?
আমাদের সাধের তিল তিল করে গড়ে তোলা এই লাইব্রেরিটা একদিন আমাদের মতোই হারিয়ে যাবে। কালে কালে বই হাতে নিয়ে পড়াটাও বুঝি আর থাকবে না। সবই তো ইন্টারনেটে পাওয়া যাচ্ছে। গ্রন্থাগার, বইয়ের আলমারি ইত্যাদি কথাগুলি আস্তে আস্তে অবলুপ্ত হয়ে যাবে।
বিশাখা দেবী কলেজ স্ট্রিটের ফুটপাতে কত নামী-দামি পুরনো বই বিক্রি হতে দেখেছেন। এর মধ্যে কত বই একেবারে নতুনের মতো। তখন ভাবতেন, কারা এইসব ভালো ভালো দুর্মূল্য বই বিক্রি করে দেন? কতদিন কত পুরনো বই হাতে নিয়ে পড়েছেন, পছন্দ হলে কিনেও এনেছেন। এমন অনেক বই আছে যেগুলো আর ছাপা হয় না। ওদের আলমারিতে সেই সব বই পরম নিশ্চিন্তে বিরাজ করছে। ওরা চলে গেলে এই বইগুলোর আবার সেরকম হাল হবে না তো? হয়তো রাস্তায় পড়ে থাকবে নিতান্ত অবহেলায়। হয়তো কারও অপেক্ষায় থাকবে। আবার অন্য কেউ একজন হয়তো ওদের পরম মমতায় হাতে তুলে নেবেন।
হাঁটতে হাঁটতে বিপুলবাবু আর উন্মীলন রুই-কাতলাদের বাড়িতে চলে এসেছে। হাতে আর খুব বেশি সময় নেই।
এখানে এসে শোনে রুই আর কাতলার সঙ্গে ওম ওদের হেড স্যারের বাড়িতে গিয়েছে।
‘সর্বনাশ! এখন কোথায় খুঁজতে যাব?’
উন্মীলন ঘড়ি দেখে। উত্তেজনায় টেনশনে এই শীতেও দরদর করে ঘামছে।
টেন্সড হয়ে আছেন বিপুলবাবু আর বিশাখাদেবীও। আর কিছুক্ষণের মধ্যে যে করেই হোক ওদের বেরিয়ে পড়তে হবে। অথচ ছেলের দেখা নেই।
উন্মীলন কাঁদো কাঁদো হয়ে বলে, ‘মা, তোমরাই বলো আমি এখন কী করব। আমার পরশু একটা মিটিং আছে। এখান থেকে গিয়ে সেই মিটিংয়ে থাকতেই হবে। খুব গুরুত্বপূর্ণ মিটিং।’
‘তাই তো, আমি তো কিছুই ভাবতে পারছি না।’
এর ভিতরে অবন্তিকা ঘন ঘন ফোন করছে, ‘কী গো, খোঁজ পেলে?’
ফোনের ভিতরে কাঁদছে অবন্তিকা। সেই কান্নার অভিঘাত এসে পড়ছে উন্মীলনের বুকে।
ছেলেকে না নিয়ে ফিরতেও পারবে না উন্মীলন।
ঘড়িতে তখন সাড়ে পাঁচটা বাজতে চলেছে। হঠাৎ দূর থেকে ওমকে দেখতে পেল ওরা।
ভাগ্যিস একটা রানিং ট্যাক্সি পেয়ে গেলে ওরা অর্জুনপুর বাজারে। সেটাকেই পাকড়াও করে বাড়ির সামনে দাঁড় করানো হল।
সকলে দেখল ওমের হাতে একটা প্যাকেট।
ও দৌড়ে এসে মায়ের হাতে দিয়ে বলল, ‘এটা ব্যাগের ভিতরে যত্ন করে ঢুকিয়ে রাখো।’
শেষ মুহূর্তটা যে কি টেনশনে কাটল। একটু আদর পর্যন্ত করতে পারলেন না নাতিকে বিশাখা দেবী। বিপুলবাবু আর বিশাখাদেবী এয়ারপোর্টে এসেছিলেন।
সিকিওরিটি চেকিংয়ের আগে পর্যন্ত যতটা সময় দেখা যায় জল ভরা চোখে দাঁড়িয়েছিলেন বাইরে। কাচের ভিতর দিয়ে দেখছিলেন ছেলে বউমা আর নাতি এগিয়ে যাচ্ছে।
ঘরে ফিরে এলেন এক বুক শূন্যতা নিয়ে। চোখের জল বাঁধ মানছে না। আবার কবে দেখা হবে!
হঠাৎ মোবাইল বেজে উঠল।
ওম ফোন করেছে।
বিশাখা দেবী কানে দিতেই শুনতে পেলেন ওমের গলা ,‘ঠাম্মি, এবারে আমি যখন আসব, তখন দেখবে আমি নিজেই সব বাংলা বই পড়তে পারব। রুই-কাতলাদের স্কুলের হেড স্যার আমাকে ক্লাস ওয়ান আর টু-এর সমস্ত বাংলা বই দিয়েছেন। তোমায় তো তখন বলতে পারিনি। একদিন দেখবে আমি আলমারির সমস্ত বই পড়ে ফেলব। তুমি আলমারির বইগুলোকে যত্নে করে রেখো কিন্তু।’
বিশাখা দেবী উঠে এসে দাঁড়ালেন বইয়ের আলমারির সামনে। তারপর পরম মমতায় হাত বোলাতে লাগলেন দেওয়াল জোড়া আলমারির গায়ে। পাখির মতো দুই হাত প্রসারিত করে ছুঁয়ে থাকলেন আলমারিটা, আর বিড়বিড় করে বললেন, ‘আমি বলেছিলাম না, তোমাদের যত্ন করার লোক এসে গিয়েছে, এবারে বিশ্বাস হল তো?’
অলঙ্করণ : সোমনাথ পাল 
21st  February, 2021
পিশাচ সাধু

 

হঠাৎ বর্ণিনীর সঙ্গে রাস্তায় দেখা হয়ে যায় সহজের। বনির গন্তব্য বিচিত্রদার বাড়ি। সহজকে সঙ্গী করে বনি। জনগণের স্বার্থে লড়াই করতে গিয়ে বহুবার পেটানি খাওয়া বিচিত্র ঘোষাল বিশ্বাস করে, এ দেশে একদিন বিপ্লব হবেই। কথায় কথায় বিচিত্রদাও সহজকে সাবধান করে দেয়, সে যেন পিশাচ সাধুর পাল্লায় না পড়ে। বিশদ

18th  April, 2021
মিষ্টু
উৎপল দাস

রিমা ভিতরে ভিতরে জ্বলে পুড়ে মরে। এ পৃথিবীতে কেউ নেই যে তার অবস্থা বোঝে। মিষ্টুকে বিদায় না করতে পারলে যেন ওর শান্তি নেই।  বিশদ

11th  April, 2021
পিশাচ সাধু
জয়ন্ত দে
ধারাবাহিক উপন্যাস, পর্ব   ৮

সহজের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার সময় পরমেশ্বর শান্ত গলায় বলেছিল— বিচিত্রদা সেই বিরল মানুষ যারা এখনও মনে করে বিপ্লব হবে। কখন হবে, কীভাবে হবে কেউ জানে না, শুধুমাত্র একটা স্ফুলিঙ্গ। সেই স্ফুলিঙ্গ থেকে দাবানল হয়ে যাবে। বিশদ

11th  April, 2021
বিদিশা কি ভানুমতী?
আশিস ঘোষ

বেশি কথা বা শব্দ, আলো এখন ভালো লাগছে না। বিদিশাকে বলতেই, ও টিউব লাইট নিভিয়ে জিরো পাওয়ারের নীল আলো জ্বালিয়ে দিল। জানলার পর্দা হাওয়ায় উড়ছে। বাইরের রাস্তায় গাড়ির শব্দ। বিদিশা আমার দিকে চেয়ে আছে। কিছুই বলছে না। বিশদ

04th  April, 2021
পিশাচ সাধু
ধারাবাহিক উপন্যাস, পর্ব   ৭
জয়ন্ত দে

দারোগা বাড়ির নিমন্ত্রণে ক্যাপ্টেন হঠাৎ উদয় হল কেন? এ প্রশ্ন সহজের মনে অবিরাম ঘুরপাক খাচ্ছে। নচের সঙ্গে কথা বলে মনে হল, ক্যাপ্টেনকে সেদিন দারোগা বাড়িতে পাঠিয়েছিল পরমেশ্বরের পার্টনার শঙ্কর। সহজের কাছে আস্তে আস্তে পরিষ্কার হতে থাকে পুরো স্কিমটা। এদিকে, ক্যাপ্টেনের ভবিষ্যদ্বাণীর আতঙ্ক থেকে কিছুতেই বেরিয়ে আসতে পারছে না নচে। তারপর... বিশদ

04th  April, 2021
দহ
হামিরউদ্দিন মিদ্যা

ঘুম-জড়ানো চোখেই ধড়ফড় করে উঠে দাঁড়াল নুরু। মাটি থেকে গামছাটা তুলে, ধুলো ঝেড়ে কোমরে বাঁধল। বাঁ-হাতে নিল পাচন লাঠিটা। গোরু-মোষের দলটা সামনেই চড়ছে। মোষগুলোর দিকে চেয়ে দেখল, নিবারণ ঘোষের লেজকাটা মোষটা নেই। বুকটা ছ্যাঁৎ করে উঠল নুরুর। পাগলের মতো ছুটতে লাগল দহের দিকে। বিশদ

28th  March, 2021
পিশাচ সাধু
ধারাবাহিক উপন্যাস  পর্ব   ৬
জয়ন্ত দে

সহজের একটিমাত্র টিউশন টিকে আছে। মনোতোষ স্যারের কোচিং ক্লাস সে ছেড়ে দিয়েছে। সৃজনীকে পড়ানোর সময় মুখ ফস্কে সহজ বলে ফেলে, তার ভাগ্য খুলতে আর ঊনত্রিশ দিন বাকি। অথচ, প্রেমিকা বর্ণিনীকেও সে ক্যাপ্টেনের ভবিষ্যদ্বাণী নিয়ে কিছু বলেনি। এদিকে, সহজকে পরমেশ্বর সাবধান করে, ‘পিশাচের ফাঁদের পড়িসনি।’ তারপর... বিশদ

28th  March, 2021
ভুল ফোন
কৌশানী মিত্র

ছেলেটি নরম। মেয়েটি কঠিন। ছেলেটির চোখে সারাক্ষণ জল টলটল করছে। আসলে জন্মানোর পর শুধু লড়াই করতে করতে দু-দণ্ড বসে কাঁদতে পারেনি কোনওদিন। এখন যেটুকু যা আছে তাইই ইমনের সামনে উপুড় করে দিতে পারলে যেন বেঁচে যায়। বিশদ

21st  March, 2021
পিশাচ সাধু
ধারাবাহিক উপন্যাস, পর্ব   ৫
জয়ন্ত দে

নচে রেগে গিয়ে ক্যাপ্টেনকে রিকশসুদ্ধু খালে ফেলে দেওয়ার সুপারি দিল নেত্রকে। স্ত্রীকে নিয়ে নেত্রর রিকশয় উঠলেন ক্যাপ্টেন। রিকশ এগতে থাকে আর স্বামীকে একের পর এক অনুযোগ করতে থাকে বঁড়শি। তারপর... বিশদ

21st  March, 2021
পিশাচ সাধু
জয়ন্ত দে

পিশাচ সাধু ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন সহজের। নচেও তার ভবিষ্যৎ জানতে চায়। সাধু বলেন, ‘তুই অপঘাতে মরবি।’ শুনে প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত নচে। তারপর... বিশদ

14th  March, 2021
তন্ত্রমন্ত্র
সৌমিত্র চৌধুরী

ঠক ঠক ঠক। অন্ধকার ঘর। মিনিট পাঁচেক হল কারেন্ট চলে গিয়েছে। নিজের বিছানায় চাদর মুড়ি দিয়ে বসে আছি। তবুও মশার কামড়। স্বস্তিতে বসতেও পারছি না। তার মধ্যে দরজায় টোকা।  বিশদ

14th  March, 2021
পিশাচ সাধু
জয়ন্ত দে 

দারোগাবাড়ির ঠেকে সহজকে দেখে হঠাৎই ক্যাপ্টেন বেমক্কা বলে বসলেন— ‘তুই ভুল করেছিস পরি! এ ছেলে সহজ নয়, এ ছেলে কেন তোর এখানে? বড্ড ভুল করছিস!’ পরমেশ্বর অবাক হয়ে জানতে চাইল, ‘কেন, কী ভুল করলাম ক্যাপ্টেন?’ তারপর... 
বিশদ

07th  March, 2021
পিশাচ সাধু 
জয়ন্ত দে

পরমেশ্বরের সঙ্গে দারোগা বাড়ির ভূতুড়ে ঠেকে এসেছিল সহজ। হুল্লোড়ের মাঝে সেখানে হঠাৎই হাজির হলেন ক্যাপ্টেন। যিনি নিজেকে পিশাচ সাধু বলেন। তিনি সহজকে দেখে বললেন, তুই এখানে কেন? তারপর... 
বিশদ

28th  February, 2021
দেশি ছেলেপুলে 
চন্দন চক্রবর্তী

ব্যানার্জিবাবু প্রচণ্ড উত্তেজিত! ‘তা বলে আমার ফ্ল্যাটের সামনে?’ আবাসনের পার্কে তখন প্রাতঃভ্রমণকারীরা বসে। কেউ রামদেব, কেউ বা ফড়িং-এর মতো ফড়ফড় করে হাত-পা নাড়ানাড়ি করছেন। ব্যানার্জিবাবু রীতিমতো সুদর্শন। ফর্সা রং, চোখে বিদেশি চশমার ফ্রেমে আঁটা দেশি চশমার লেন্স।  
বিশদ

28th  February, 2021
একনজরে
কাজ পাগল কাজল! শ্যামসুন্দর-নিত্যানন্দের পুণ্যভূমিতে কাজল সিনহাকে চিনতে ‘রাজনৈতিক পরিচয়’ লাগে না। কর্মেই তিনি বেশি পরিচিত। তাঁর অতিবড় নিন্দুকেরাও নাকি এমন কথা বলে থাকেন!  ...

ষষ্ঠ দফার নির্বাচনের প্রচারের শেষ দিনে আজ, সোমবার উত্তর দিনাজপুর জেলায় তিনটি সভা করছেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা ...

সেঞ্চুরি পাননি ঠিকই। তবে শিখর ধাওয়ানের আক্রমণাত্মক ইনিংসই পাঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে ৬ উইকেটে জেতাল দিল্লি  ক্যাপিটালসকে। রবিবার জয়ের লক্ষ্যে ১৯৬ রান তাড়া করতে নেমে ১০ ...

শনিবার বিকেলে রানিগঞ্জ ব্লকের তিরাট পঞ্চায়েতে প্রচার ছিল সায়নী ঘোষের। পূর্ব কর্মসূচি মতোই তিরাট পঞ্চায়েতের সবচেয়ে বড় বাজার চেলোদে এসে তাঁর গাড়ি থামে। স্বাভাবিকভাবেই তাঁকে ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

অত্যধিক পরিশ্রমে শারীরিক দুর্বলতা। বাহন বিষয়ে সতর্কতা প্রয়োজন। সন্তানের বিদ্যা-শিক্ষায় অগ্রগতি বিষয়ে সংশয় বৃদ্ধি। আধ্যাত্মিক ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৮৮২: বিবর্তনবাদের স্রষ্টা চার্লস ডারউইনের মৃত্যু
১৯৫৫: শিকারি ও লেখক জিম করবেটের মৃত্যু
১৯৫৭: শিল্পপতি মুকেশ আম্বানির জন্ম
১৯৫৮: সাহিত্যিক অনুরূপা দেবীর মৃত্যু
১৯৮৭: রুশ টেনিস খেলোয়াড় মারিয়া শারাপোভার জন্ম  



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৭৩.৬৯ টাকা ৭৫.৪১ টাকা
পাউন্ড ১০১.৩৬ টাকা ১০৪.৯০ টাকা
ইউরো ৮৭.৭৬ টাকা ৯০.৯৪ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
18th  April, 2021
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৪৮,০৫০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৪৫,৬০০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৪৬,৩০০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৬৯,২০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৬৯,৩০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]
18th  April, 2021

দিন পঞ্জিকা

৫ বৈশাখ ১৪২৮, সোমবার, ১৯ এপ্রিল ২০২১। সপ্তমী ৪৬/৫২ রাত্রি ১২/২। পুনর্বসু নক্ষত্র অহোরাত্র। সূর্যোদয় ৫/১৭/৭, সূর্যাস্ত ৫/৫৪/৩৫। অমৃতযোগ দিবা ৬/৫৯ মধ্যে পুনঃ ১০/২০ গতে ১২/৫২ মধ্যে। রাত্রি ৬/৪০ গতে ৮/৫৬ মধ্যে পুনঃ ১১/১২ গতে ২/১৬ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ দিবা ৩/২৩ গতে ৫/৪ মধ্যে। বারবেলা ৬/৫১ গতে ৮/২৬ মধ্যে পুনঃ ২/৪৫ গতে ৪/২০ মধ্যে। কালরাত্রি ১০/১০ গতে ১১/৩৫ মধ্যে।  
৫ বৈশাখ ১৪২৮, সোমবার, ১৯ এপ্রিল ২০২১। সপ্তমী রাত্রি ৬/৫৭। পুনর্বসু নক্ষত্র রাত্রি ২/১৬। সূর্যোদয় ৫/১৭, সূর্যাস্ত ৫/৫৬। অমৃতযোগ দিবা ৬/৫৮ মধ্যে ও ১০/১৫ গতে ১২/৫১ মধ্যে এবং রাত্রি ৬/৪৬ গতে ৯/০ মধ্যে ও ১১/১১ গতে ২/৭ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ দিবা ৩/২৭ গতে ৫/১০ মধ্যে। কালবেলা ৬/৫২ গতে ৮/২৭ মধ্যে ও ২/৪৬ গতে ৪/২১ মধ্যে। কালরাত্রি ১০/১২ গতে ১১/৩৭ মধ্যে।  
৬ রমজান। 

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
আইপিএল: রাজস্থান রয়্যালস-এর বিরুদ্ধে ৪৫ রানে জিতল চেন্নাই সুপার কিংস 

11:29:00 PM

আইপিএল: রাজস্থান ৯৭/৭(১৫ ওভার)

11:00:41 PM

আইপিএল: রাজস্থান ৮১/২(১০ ওভার)

10:32:46 PM

আইপিএল: রাজস্থানকে ১৮৯ রানের টার্গেট দিল চেন্নাই

09:37:20 PM

আইপিএল: চেন্নাই ১৩৩/৫ (১৬ ওভার) 

09:02:32 PM

আইপিএল: চেন্নাই ৯৮/৩ (১১ ওভার) 

08:34:07 PM