Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

দেশি ছেলেপুলে 
চন্দন চক্রবর্তী

ব্যানার্জিবাবু প্রচণ্ড উত্তেজিত! ‘তা বলে আমার ফ্ল্যাটের সামনে?’ আবাসনের পার্কে তখন প্রাতঃভ্রমণকারীরা বসে। কেউ রামদেব, কেউ বা ফড়িং-এর মতো ফড়ফড় করে হাত-পা নাড়ানাড়ি করছেন। ব্যানার্জিবাবু রীতিমতো সুদর্শন। ফর্সা রং, চোখে বিদেশি চশমার ফ্রেমে আঁটা দেশি চশমার লেন্স। কালো টি-শার্ট। বুকে লেখা ক্যালিফোর্নিয়া। বারমুডা টাইপের শর্টস পরা। ক’দিন আগের কলপ করা কালো চুল আজ এলোমেলো।
মণ্ডলবাবুরা একটু আগেও ওঁর কথা আলোচনা করছিলেন। ‘ব্যাপারটা কী? লোকটি তো কখনও দেরি করেন না? এখনও পাত্তা নেই কেন?’
তারপরেই ওঁর মঞ্চে প্রবেশ। কোমরে হাত দিয়ে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন।
বয়স্ক প্রেসিডেন্ট সাহেবের খুবই প্রিয় মানুষ। দু’জনে শলাপরামর্শ করেন রোজ, আবাসনের ভালো-মন্দ এইসব নিয়ে। অথচ আজ রেগে-মেগে একসা!
প্রেসিডেন্ট হতবাক।
‘বলি তোমার ফ্ল্যাটের সামনে কী ফেলেছে? ফেললে, কে ফেলেছে, তা তো বলবে? না বললে বুঝব কী করে?’
মিত্রবাবু বলে উঠলেন, ‘নিশ্চয়ই উল্টোদিকের ফ্ল্যাটের আবর্জনা!’
মণ্ডল অনেক ভেবে বললেন, ‘আপনার কোনও শত্রু আছে কি?’
গায়েনবাবু এতক্ষণ চুপচাপ ছিলেন।
তিনিও প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেন—
‘বলি, মেনটেন্যান্সের টাকা ক্লিয়ার আছে? সেক্রেটারি সাহেব বোর্ডে নোটিস টাঙিয়ে দিয়েছেন। তিন মাস ডিউ হলেই কোনও সার্ভিস পাওয়া যাবে না। তাই হয়তো আপনার গারবেজ কেউ তোলেনি।’
ব্যানার্জিবাবু আরও খেপচুরিয়াস—
‘ফালতু বকবেন না তো? আমার ছেলে আমেরিকায় বিশাল চাকরি করে। বিশাল বাংলো। বছরে মাইনে পঞ্চাশ লক্ষ আর আমি নিজে এক্স-মিলিটারি অফিসার। আমার টাকা কে খায় তার ঠিক নেই। আর আমি মেনটেন্যান্সের টাকা দিইনি!’
প্রেসিডেন্ট মুচকি হেসে বলেন, ‘তোমার বাড়িতে নাকি থরে থরে বিদেশি সিঙ্গল মল্ট স্কচ আছে। রোজই বলো আমাদের খাওয়াবে! কিন্তু...’
‘সে সব পরে হবে’খন। কিন্তু আপনি আমার ব্যাপারটা বিহিত করবেন, প্লিজ? রিয়েলি আই অ্যাম ইন স্যুপ’
মিত্রবাবু মজা করেন, ‘তোমার গিন্নির হাতের গারলিক চিকেন স্যুপের নাকি হেভি টেস্ট! সেটাও জুটল না আমাদের।’
‘আরে বাবা! সেই স্যুপ আর এই স্যুপ এক নয়। রিয়েলি আই অ্যাম ইন বিগ ট্রাবল।’
‘আরে ধুর, সেটা কী তা তো বলবেন।’
‘বলতে দিচ্ছেন কোথায়?... শুনুন কে বা কারা যেন আমার ফ্ল্যাটের সামনে কার্তিক ঠাকুর ফেলে দিয়েছে। আমি তো প্রথমে বুঝতে পারিনি ব্যাপারটা কী? গিন্নি তো আবার ঠাকুর-দেবতা বলতে অজ্ঞান। রোজ পঁচিশটা সন্দেশ লাগে প্রসাদ হিসেবে, পঁচিশটা ঠাকুরের জন্য। গিন্নিকে ডেকে দেখাতেই সে দু’বার প্রণাম করে বলে, আজ কার্তিক পুজো। ইস্‌ কী সুন্দর তাই না? এখন নাকি ওই ঠাকুরকে পুজো করতে হবে। আর এটাই নাকি নিয়ম! যার বাড়ির সামনে ঠাকুর ফেলবে তাকে পুজো করতেই হবে। এবার বলুন মটকা গরম হয় কি না।’
মণ্ডলবাবুর চোখ কপালে। ‘বলেন কী মশাই? শেষে আপনার ফ্ল্যাটে?’
‘এখন আপনার বয়স কত? এই বয়েসে—’
‘হ্যাঁ, সবে সাতান্নতে রিটায়ার করেছি। বাড়িতে থেকে থেকে একটু কুঁড়েও হয়ে গিয়েছি। আর এই বয়েসে এখন পুরুতের খোঁজ করতে হবে নাকি?’
‘কথাটা তা না। আপনার তো সোনার টুকরো ছেলে রয়েছে। তা সত্ত্বেও আপনার ফ্ল্যাটে কার্তিক ফেলল? ডেঁপোমির একটা লিমিট থাকা উচিত প্রেসিডেন্ট সাহেব। সত্যি এর একটা বিহিত করতে হবে। সাধারণত বিয়ের পর যাদের বাচ্চা-কাচ্চা না হয় তাদের বাড়িতে কার্তিক ফেলে। ব্যানার্জিবাবু তো আর তা নয়। তবে?’
প্রেসিডেন্ট সাহেব বললেন, ‘তবে আর কী ঠাকুরটি জলে ভাসিয়ে দাও। ল্যাটা চুকে যাবে। আমারও একই কেস হয়েছিল। বহুবছর আগে। বিয়ে করার ঠিক এক বছরের মাথায় পাড়ার ছোঁড়াগুলো দরজার সামনে কার্তিক ফেলে পালায়। আমার বাবা ছিলেন প্রচণ্ড রাসভারী লোক। বাবা তো খেপে লাল। শেষে বাড়ির কাজের লোককে দিয়ে পুকুরে ডুবিয়ে দিতে বললেন। মা দৌড়ে এসে বাধা দিলেন। এসব করলে নাকি পাপ হবে। শেষমেশ, পাড়ায় নাথবুড়িকে দিয়ে দিলেন। সঙ্গে টাকা। সে-ই পুজো আচ্চা যা করার করল। আর ছোঁড়াগুলো সাতজনের লিস্ট দিয়ে ঠাকুরটার গায়ে লটকে দিয়েছিল। এখনও নামগুলো মনে আছে ফচে, বাটুল, ভোম, কালু...। কি না তাদের পেটপুরে খাওয়াতে হবে! তারা আর ভয়ে বাবার সামনে আসেনি! পরে একদিন আমি অফিস থেকে ফিরছিলাম। তারা প্রায় কেঁদে ফেলে। দাদা, কার্তিক কেনার দামটা অন্তত দিয়ে দিন। আমরা বেকার। কোনরকমে টাকাটা জোগাড় করেছিলাম। উদ্দেশ্য ছিল পাতপেড়ে খাওয়া। বুঝলে, ব্যানার্জি ওঁদের সেই করুণ মুখ দেখে কেমন মায়া হয়েছিল। কিছু টাকা দিয়ে বলেছিলাম, যা একদিন মাংসভাত খেয়ে নিবি। সেই খুশি খুশি মুখগুলো কী আনন্দই না পেয়েছিল। তারাও হয়তো কত বুড়ো হয়ে গিয়েছে। পুরনো পাড়া ছেড়ে আসার পর আর যাওয়া হয়নি।’
মিত্রবাবু শুনে বললেন, ‘তা আপনাকে কোনও লিস্ট দিয়েছে?’
‘উহু! দিলে তো হয়েই যেত।’
‘কাউকে সন্দেহ করেন?’
‘মনে হচ্ছে মর্নিংওয়াক করা ছোকরাগুলো।’
‘যারা পুকুরপাড়ে বসে আড্ডা মারে?’
‘হুম! কিন্তু প্রমাণ তো কিছু নেই।’
গায়েনবাবু রামদেবের ফোঁস ফোঁস করা বন্ধ করে বললেন, ‘যান আগে সামনের মন্দিরে গিয়ে দেবু পুরোহিতকে খুঁজুন। ফস্কে গেলে সমস্যায় পড়ে যাবেন। বিশ্বকর্মা আর সরস্বতী পুজোর মতো আজও কিন্তু কার্তিক পুজোর ডিমান্ড আছে! এখন কোভিডের জন্য সব ব্যাটার ওয়ার্ক ফর্ম হোম। অফুরন্ত সময় হাতে। তাই বদমাইশি করে বেড়াচ্ছে। কানাঘুষো শুনছি, এবারে নাকি টার্গেট বয়স্করা।’
ব্যানার্জি হন হন করে হাঁটা লাগালেন। আঙুল তুলে বলে গেলেন, ‘তবে আমি কিন্তু খুঁজে বের করবই। যে লোক শত্রুপক্ষের বিভিন্ন স্পট খুঁজে বের করে মিসাইল চালাবার প্ল্যান করে দিতে পারত তার কাছে এসব জলভাত।’
‘তা ওদের ক্ষেত্রেও কি মিসাইল চালাবেন না কি?’
‘হ্যা...হ্যা করবেন না! নিজের হলে বুঝতেন। এখন পুরুত পাওয়া দুষ্কর।’
দুই
এদিকে দেবু পুরোহিত তো হাঁ হয়ে গেল। ‘বলেন কি স্যার আপনার ফ্ল্যাটে!’ ব্যানার্জিবাবু একটু ধাক্কা খেলেন যেন।
‘হ্যাঁ। আসলে দেখেছে আমার গিন্নি একটু ঠাকুর ভক্ত। তাই কেউ এইসব বদমাইশি করেছে।’
‘তা ঠিক। ম্যাডাম তো প্রতি শনি, মঙ্গলবার পুজো দিতে আসেন। দুঃখ করে বলেন, বুঝলে দেবু, ছেলেটা আর দেশে ফিরবে না! ছেলে থেকেও নেই।’
‘এইসব বলে বুঝি। এখন তুমি বল দিকি, ওই ঠাকুরের দায়িত্ব নিয়ে যা করার করে জলে ভাসিয়ে দিতে পারবে কি না! গিন্নিকে যে করে হোক তোমাকেই বোঝাতে হবে...’
ঠিক তখনই ভাস্কর, তমাল, সৌরভদের দেওয়া কড়কড়ে দু’শো টাকার নোটটা ওর পকেটে চারাপোনার মতো ছরছর করে উঠল। বেচারা এখন কোনদিকে যাবে? ছোঁড়াগুলো পই পই করে বলে গিয়েছে। তুমি কেবল বাড়ি গিয়ে পুজো করতে যাবে। পুজো যেন ওই ফ্ল্যাটেই হয়! অন্য কোনও কিছুতে রাজি হবে না। দায়িত্ব তোমার। বুঝতে পারছ, ফ্ল্যাটে পুজো হলেই ভালো-মন্দ খাওয়া জুটবে। ব্যাটা, হাড় কিপটে, শুধু ডলারের গল্প।
একটু বাজিয়ে দেখার জন্য দেবু পুরোহিত জিজ্ঞেস করল। কিন্তু স্যার কাজটা কারা করল, কিছু আন্দাজ করতে পারছেন?
‘ও নিয়ে ভেবো না। সে আমি বুঝে নেব, মিলিটারির লোক আমি। বাড়িতে লাইসেন্সপ্রাপ্ত পিস্তল আছে। মাথার খুলি যদি না উড়িয়ে দিয়েছি তো আমার নাম কর্নেল ব্যানার্জি নয়। শালা, কর্নেলের বাড়িতে কার্তিক!’
‘কী সাহস!’
ব্যস, পিস্তলের নাম শুনে দেবুর আত্মারাম খাঁচা ছাড়া। যদি একবার দানা পুরে দেয়। খেল খতম, পয়সা হজম। কিন্তু এদিকে ছেলেগুলো সব জিম করা জিমজিমে চেহারা। একটা মারও বাইরে পড়বে না। এই প্রথম তার পুরুত জীবনের প্রতি রাগ হতে থাকে। ধুস, বাপের লাইনে না এলেই ভালো হতো। গ্র্যাজুয়েট হয়ে চাকরি নেই। বাড়িতে অভাব বাড়তে থাকে। ভাইবোনেদের পড়াশোনা চালানো মুশকিল হল। তখন ওর বাবা বলেছিল, দেখ, বামুনের গলায় পইতে আর ফসলি জমি এক। পইতে ঝুলিয়ে সংস্কৃত মন্ত্র শিখে লাইনে নেমে পড়। যজমানি করে সারা বছর যা টাকা পাবি, চলে যাবে। ব্যস, তারপর থেকে দেবু পুরোহিত!
কর্নেল গম্ভীর গলায় বলে। ‘হলটা কী? কিছু তো বল?’
‘স্যার, শাস্ত্রে কিন্তু আছে এসব ক্ষেত্রে বাড়িতেই পুজো করতে হয়। না হলে কার্তিক ঠাকুর রুষ্ট হবেন, তিনি আপনার মতো কর্নেল নন ঠিক কথা, কিন্তু তিনি স্বয়ং ইন্দ্রের সেনাপতি। বিশাল যোদ্ধা! তাছাড়া, ম্যাডাম শাস্ত্রের বাইরে গিয়েছি জানলে, আমাকে আস্ত রাখবেন না। আপনাকেও ছাড়বেন না।’
‘ইস্‌, ঩কি বেইজ্জতি ব্যাপার বুঝতে পারছ? আমার আমেরিকান ছেলে জানতে পারলে কী ভাববে বল দিকি।’
‘বলবেন, ঠাকুর দেবতার ব্যাপার কিছু করার ছিল না। আর ম্যাডাম তো বলেছেন ছেলের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই।’
ব্যানার্জি একটু উদাসীন হলেন, আকাশের উড়ন্ত কালো মেঘটা যেন মুখ ঢাকা দিল।
একটু থতমত খেয়ে বললেন, ‘যাকগে একটা ফর্দটর্দ দাও। বাজারে যেতে হবে তো।’
‘তা দিচ্ছি। পুজোর ফর্দ জেরক্স করাই আছে। তবে যে বা যারা ফেলেছে তাদের অবশ্যই প্রসাদ সমেত পেটপুরে খাওয়াবেন। এটাও শাস্ত্রে লেখা আছে। জানাবার কথা তাই জানালাম। পরে ম্যাডাম হয়তো বলে বসবেন, দেবু তুমি জানাওনি কেন?’
‘নিকুচি করেছে শাস্ত্রের! একজন কর্নেলকে এসব বুজরুকি দিচ্ছো?’
‘না স্যার! যা সত্যি তাই বললাম। এটা আমার কর্তব্য। ম্যাডাম পরে জানতে পারলে কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে।’
একটু বোমকে গেলেন কর্নেল ব্যানার্জি। ‘তাদের জানলে তো!’
‘ঠিক জেনে যাবেন স্যার।’
যাইহোক ব্যানার্জিবাবু, যতই মিসাইল ম্যান হোন না কেন গিন্নির কাছে একেবারে কেঁচো। ওই একটা ডোজেই উনি ব্যাগ নিয়ে বাজারে ছুটলেন।

মিসেস ব্যানার্জি পুজো করতে ভালোবাসেন। ফুলের গন্ধ, ধূপধুনোর সুবাস, শাঁখের শব্দ ওঁকে টানে। তাই আবাসনের যত পুজো হয় সবটাতেই ব্যানার্জি আন্টি বা কাকিমা আবাসনের সবার প্রিয়। উনি কার্তিক ঠাকুরের বেদি রঙিন কাগজ দিয়ে সাজাচ্ছিলেন। বারবার চোখ ঝাপসা হয়ে আসছিল। উনি বাঁ-হাত দিয়ে মুচ্ছিলেন। কিন্তু কেন? এই ক’দিন আগেও বারান্দায় ব্যানার্জিবাবুর সঙ্গে দাঁড়িয়েছিলেন। রাত জ্যোৎস্নায় ভেসে যাচ্ছিল বিশ্ব চরাচর। বহুদূর আকাশে মিটমিট করছে তারা। ঠিক সেই সময়ে একটা উড়োজাহাজ মুহূর্তের জন্য দেখা দিয়ে কোথায় যেন মিলিয়ে গেল। সেই প্রথম ব্যানার্জিবাবু ওঁর স্ত্রীর হাতটা ধরে কেঁদেছিলেন। বলেছিলেন, হ্যাঁ গো ছেলেটা সত্যি আর ফিরবে না? ও যে এত দুর্ব্যবহার করবে ভাবতে পারিনি। কেন রে বাবা, বাবা-মা কি তোকে মানুষ করেনি! বুঝলে নীচের রায়বাবু একদিন প্রশ্ন করেছিলেন, ‘দাদা সত্যিই কি আপনার ছেলে মানুষ হয়েছে?’ আমি রেগে বলেছিলাম, ৫০ লক্ষ টাকার চাকরি, বাংলো সবই আছে। একে কী বলে? মানুষ হওয়া নয়? শুনে উনি আবার প্রশ্ন করেছিলেন,
—আর...
—আর আবার কী?
বুঝলে,আমার দুর্বলতা ধরা পড়ার ভয়ে আমার ছেলে যা নয় তা বাড়িয়ে বাড়িয়ে বলি। সেটা কেউ বোঝে না। আমি সেই সুখেই ছিলাম। কিন্তু আজকের উড়োজাহাজটা মনে হল আমার ছেলে! মনটাকে ভেঙে তছনছ করে দিয়ে— আকাশে মিলিয়ে গেল।
ডোরবেলের শব্দে মিসেস ব্যানার্জির সংবিৎ ফিরল। উনি দরজা খুলে দিলেন। ব্যানার্জিবাবুর সেই কালসিটে মুখ উধাও। হাল্কা শরতের মেঘ যেন উড়ছে। লোকটা ওইরকমই। এই রাগ, এই অভিমান, আবার হিমশীতল, ফুরফুরে শরতের বাতাস!
‘কী গো, দেবুর সঙ্গে কথা বলেছ?’
‘হ্যাঁ! ও আসবে।’
‘তাহলে ফর্দটা নিয়ে বাজারটা করে আনলে না কেন?’
ইতিমধ্যে মিসেস গরম চা নিয়ে এসেছেন। ব্যানার্জিবাবু চুমুক মেরে বললেন, ‘বাজারের দিকে গিয়েও কেনা হলো না। কারণ...’
মোবাইল হোয়াটসঅ্যাপের ম্যাসেজটা মেলে ধরলেন।
‘কাকু, অপরাধ নেবেন না। কাকিমার হাতে একটু ভোগ আর পায়েস খাবার ইচ্ছে হয়েছিল, তাই এই দুষ্কর্মটি করে ফেলেছি। বিনীত— পুকুর পাড়ের আড্ডাবাজরা।’
মিসেস ব্যানার্জি হেসে ফেললেন। ‘পাগল ছেলে সব। ওরা বলতেই পারত। মিছিমিছি কার্তিক ফেলার কী দরকার ছিল?’
‘এই প্রথম ওই হাসিখুশি, আড্ডামারা ছেলেগুলোর মুখের মধ্যে আমার প্রকৃত সন্তান খুঁজে পেলাম। ওরাই তো যত্ন করে পিকনিকে নিয়ে যায়, হঠাৎ ইলিশ উৎসব করে ডাক দেয়। সেবার ঠিক পুজোর একাদশীর দিন আমার বুকে ব্যথা হয়েছিল, ওরা কাল বিলম্ব না করে নার্সিংহোমে নিয়ে গিয়েছিল। মনে আছে?’
‘তবে—’
‘তবে আর কী? একটা ভালো করে লিস্ট করে দাও। আমি উত্তরে ওদের আসার কথা বলে দিই।’
মিসেসের মুখে এক তৃপ্তির হাসি ফুটে উঠল।
ঠিক তখনই প্রেসিডেন্ট সাহেবের ফোন।
‘হারামজাদারা আমার ফ্ল্যাটের সামনেও কার্তিক ফেলেছে। আসলে গতকাল মেয়ের ফ্ল্যাটে ছিলাম। সকালে ওখান থেকেই মর্নিংওয়াকে গিয়েছিলাম। তাই জানতাম না। এখন আমার গিন্নির কড়া আদেশ পুজো করতে হবে। কী ফ্যাসাদ বল তো। আমার ছেলেও তো বিদেশে। যদিও সে এ দেশের মুখ দর্শন করে না। বলে ওখানে কী আছে? একটা মৃত শহর।’
ব্যানার্জিবাবু হেসে বললেন, ‘ওরা একটা মেসেজ দিতে চাইছে, বিশেষ করে ছেলে বিদেশে থাকা বাপেদের কাছে।’
‘বুঝলাম না। কী মেসেজ।’
বলতে চাইছে, ‘আমারও তোমাদের দেশি ছেলেপুলে। হা হা হা...’ 
28th  February, 2021
পিশাচ সাধু

 

হঠাৎ বর্ণিনীর সঙ্গে রাস্তায় দেখা হয়ে যায় সহজের। বনির গন্তব্য বিচিত্রদার বাড়ি। সহজকে সঙ্গী করে বনি। জনগণের স্বার্থে লড়াই করতে গিয়ে বহুবার পেটানি খাওয়া বিচিত্র ঘোষাল বিশ্বাস করে, এ দেশে একদিন বিপ্লব হবেই। কথায় কথায় বিচিত্রদাও সহজকে সাবধান করে দেয়, সে যেন পিশাচ সাধুর পাল্লায় না পড়ে। বিশদ

18th  April, 2021
মিষ্টু
উৎপল দাস

রিমা ভিতরে ভিতরে জ্বলে পুড়ে মরে। এ পৃথিবীতে কেউ নেই যে তার অবস্থা বোঝে। মিষ্টুকে বিদায় না করতে পারলে যেন ওর শান্তি নেই।  বিশদ

11th  April, 2021
পিশাচ সাধু
জয়ন্ত দে
ধারাবাহিক উপন্যাস, পর্ব   ৮

সহজের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার সময় পরমেশ্বর শান্ত গলায় বলেছিল— বিচিত্রদা সেই বিরল মানুষ যারা এখনও মনে করে বিপ্লব হবে। কখন হবে, কীভাবে হবে কেউ জানে না, শুধুমাত্র একটা স্ফুলিঙ্গ। সেই স্ফুলিঙ্গ থেকে দাবানল হয়ে যাবে। বিশদ

11th  April, 2021
বিদিশা কি ভানুমতী?
আশিস ঘোষ

বেশি কথা বা শব্দ, আলো এখন ভালো লাগছে না। বিদিশাকে বলতেই, ও টিউব লাইট নিভিয়ে জিরো পাওয়ারের নীল আলো জ্বালিয়ে দিল। জানলার পর্দা হাওয়ায় উড়ছে। বাইরের রাস্তায় গাড়ির শব্দ। বিদিশা আমার দিকে চেয়ে আছে। কিছুই বলছে না। বিশদ

04th  April, 2021
পিশাচ সাধু
ধারাবাহিক উপন্যাস, পর্ব   ৭
জয়ন্ত দে

দারোগা বাড়ির নিমন্ত্রণে ক্যাপ্টেন হঠাৎ উদয় হল কেন? এ প্রশ্ন সহজের মনে অবিরাম ঘুরপাক খাচ্ছে। নচের সঙ্গে কথা বলে মনে হল, ক্যাপ্টেনকে সেদিন দারোগা বাড়িতে পাঠিয়েছিল পরমেশ্বরের পার্টনার শঙ্কর। সহজের কাছে আস্তে আস্তে পরিষ্কার হতে থাকে পুরো স্কিমটা। এদিকে, ক্যাপ্টেনের ভবিষ্যদ্বাণীর আতঙ্ক থেকে কিছুতেই বেরিয়ে আসতে পারছে না নচে। তারপর... বিশদ

04th  April, 2021
দহ
হামিরউদ্দিন মিদ্যা

ঘুম-জড়ানো চোখেই ধড়ফড় করে উঠে দাঁড়াল নুরু। মাটি থেকে গামছাটা তুলে, ধুলো ঝেড়ে কোমরে বাঁধল। বাঁ-হাতে নিল পাচন লাঠিটা। গোরু-মোষের দলটা সামনেই চড়ছে। মোষগুলোর দিকে চেয়ে দেখল, নিবারণ ঘোষের লেজকাটা মোষটা নেই। বুকটা ছ্যাঁৎ করে উঠল নুরুর। পাগলের মতো ছুটতে লাগল দহের দিকে। বিশদ

28th  March, 2021
পিশাচ সাধু
ধারাবাহিক উপন্যাস  পর্ব   ৬
জয়ন্ত দে

সহজের একটিমাত্র টিউশন টিকে আছে। মনোতোষ স্যারের কোচিং ক্লাস সে ছেড়ে দিয়েছে। সৃজনীকে পড়ানোর সময় মুখ ফস্কে সহজ বলে ফেলে, তার ভাগ্য খুলতে আর ঊনত্রিশ দিন বাকি। অথচ, প্রেমিকা বর্ণিনীকেও সে ক্যাপ্টেনের ভবিষ্যদ্বাণী নিয়ে কিছু বলেনি। এদিকে, সহজকে পরমেশ্বর সাবধান করে, ‘পিশাচের ফাঁদের পড়িসনি।’ তারপর... বিশদ

28th  March, 2021
ভুল ফোন
কৌশানী মিত্র

ছেলেটি নরম। মেয়েটি কঠিন। ছেলেটির চোখে সারাক্ষণ জল টলটল করছে। আসলে জন্মানোর পর শুধু লড়াই করতে করতে দু-দণ্ড বসে কাঁদতে পারেনি কোনওদিন। এখন যেটুকু যা আছে তাইই ইমনের সামনে উপুড় করে দিতে পারলে যেন বেঁচে যায়। বিশদ

21st  March, 2021
পিশাচ সাধু
ধারাবাহিক উপন্যাস, পর্ব   ৫
জয়ন্ত দে

নচে রেগে গিয়ে ক্যাপ্টেনকে রিকশসুদ্ধু খালে ফেলে দেওয়ার সুপারি দিল নেত্রকে। স্ত্রীকে নিয়ে নেত্রর রিকশয় উঠলেন ক্যাপ্টেন। রিকশ এগতে থাকে আর স্বামীকে একের পর এক অনুযোগ করতে থাকে বঁড়শি। তারপর... বিশদ

21st  March, 2021
পিশাচ সাধু
জয়ন্ত দে

পিশাচ সাধু ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন সহজের। নচেও তার ভবিষ্যৎ জানতে চায়। সাধু বলেন, ‘তুই অপঘাতে মরবি।’ শুনে প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত নচে। তারপর... বিশদ

14th  March, 2021
তন্ত্রমন্ত্র
সৌমিত্র চৌধুরী

ঠক ঠক ঠক। অন্ধকার ঘর। মিনিট পাঁচেক হল কারেন্ট চলে গিয়েছে। নিজের বিছানায় চাদর মুড়ি দিয়ে বসে আছি। তবুও মশার কামড়। স্বস্তিতে বসতেও পারছি না। তার মধ্যে দরজায় টোকা।  বিশদ

14th  March, 2021
পিশাচ সাধু
জয়ন্ত দে 

দারোগাবাড়ির ঠেকে সহজকে দেখে হঠাৎই ক্যাপ্টেন বেমক্কা বলে বসলেন— ‘তুই ভুল করেছিস পরি! এ ছেলে সহজ নয়, এ ছেলে কেন তোর এখানে? বড্ড ভুল করছিস!’ পরমেশ্বর অবাক হয়ে জানতে চাইল, ‘কেন, কী ভুল করলাম ক্যাপ্টেন?’ তারপর... 
বিশদ

07th  March, 2021
পিশাচ সাধু 
জয়ন্ত দে

পরমেশ্বরের সঙ্গে দারোগা বাড়ির ভূতুড়ে ঠেকে এসেছিল সহজ। হুল্লোড়ের মাঝে সেখানে হঠাৎই হাজির হলেন ক্যাপ্টেন। যিনি নিজেকে পিশাচ সাধু বলেন। তিনি সহজকে দেখে বললেন, তুই এখানে কেন? তারপর... 
বিশদ

28th  February, 2021
ভাষা ও ভালোবাসা 
ছন্দা বিশ্বাস

অহর্নিশকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। দুপুরে খাওয়ার পর দোতলার ঘরে শুয়েছিল অহর্নিশ। শুয়ে শুয়ে একটা কমিক্সের বইয়ের পাতা ওল্টাচ্ছিল। অবন্তিকা দেখে এসেছে। ভেবেছে গল্প পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে পড়বে। ছেলের মাথার হাত বুলিয়ে বলে এসেছে, ‘তাড়াতাড়ি একটু ঘুমিয়ে নাও, চারটের সময়ে কিন্তু আমাদের বেরতে হবে।  
বিশদ

21st  February, 2021
একনজরে
সেঞ্চুরি পাননি ঠিকই। তবে শিখর ধাওয়ানের আক্রমণাত্মক ইনিংসই পাঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে ৬ উইকেটে জেতাল দিল্লি  ক্যাপিটালসকে। রবিবার জয়ের লক্ষ্যে ১৯৬ রান তাড়া করতে নেমে ১০ ...

বারবার প্রস্তাব ছিল স্বয়ং পিনারাই বিজয়নের বিরুদ্ধে লড়ার। কিন্তু জাতীয় রাজনীতিতে বিজেপির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের মঞ্চে এক সঙ্গে কাঁধে কাঁধ দিয়ে চলার কারণে সেই প্রস্তাবে ...

কাজ পাগল কাজল! শ্যামসুন্দর-নিত্যানন্দের পুণ্যভূমিতে কাজল সিনহাকে চিনতে ‘রাজনৈতিক পরিচয়’ লাগে না। কর্মেই তিনি বেশি পরিচিত। তাঁর অতিবড় নিন্দুকেরাও নাকি এমন কথা বলে থাকেন!  ...

রবিবার সকাল থেকে ভোট-পরবর্তী হিংসায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে চাকদহ থানার রাউতাড়ী পঞ্চায়েতের উত্তর এনায়েতপুরের মণ্ডলপাড়া। বাড়ির সামনে থেকে দেহ উদ্ধার হয় এক বিজেপি কর্মীর। মৃতের নাম দিলীপ কীর্তনীয়া (৩১)।   ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

অত্যধিক পরিশ্রমে শারীরিক দুর্বলতা। বাহন বিষয়ে সতর্কতা প্রয়োজন। সন্তানের বিদ্যা-শিক্ষায় অগ্রগতি বিষয়ে সংশয় বৃদ্ধি। আধ্যাত্মিক ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৮৮২: বিবর্তনবাদের স্রষ্টা চার্লস ডারউইনের মৃত্যু
১৯৫৫: শিকারি ও লেখক জিম করবেটের মৃত্যু
১৯৫৭: শিল্পপতি মুকেশ আম্বানির জন্ম
১৯৫৮: সাহিত্যিক অনুরূপা দেবীর মৃত্যু
১৯৮৭: রুশ টেনিস খেলোয়াড় মারিয়া শারাপোভার জন্ম  



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৭৩.৬৯ টাকা ৭৫.৪১ টাকা
পাউন্ড ১০১.৩৬ টাকা ১০৪.৯০ টাকা
ইউরো ৮৭.৭৬ টাকা ৯০.৯৪ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
18th  April, 2021
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৪৮,০৫০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৪৫,৬০০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৪৬,৩০০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৬৯,২০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৬৯,৩০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]
18th  April, 2021

দিন পঞ্জিকা

৫ বৈশাখ ১৪২৮, সোমবার, ১৯ এপ্রিল ২০২১। সপ্তমী ৪৬/৫২ রাত্রি ১২/২। পুনর্বসু নক্ষত্র অহোরাত্র। সূর্যোদয় ৫/১৭/৭, সূর্যাস্ত ৫/৫৪/৩৫। অমৃতযোগ দিবা ৬/৫৯ মধ্যে পুনঃ ১০/২০ গতে ১২/৫২ মধ্যে। রাত্রি ৬/৪০ গতে ৮/৫৬ মধ্যে পুনঃ ১১/১২ গতে ২/১৬ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ দিবা ৩/২৩ গতে ৫/৪ মধ্যে। বারবেলা ৬/৫১ গতে ৮/২৬ মধ্যে পুনঃ ২/৪৫ গতে ৪/২০ মধ্যে। কালরাত্রি ১০/১০ গতে ১১/৩৫ মধ্যে।  
৫ বৈশাখ ১৪২৮, সোমবার, ১৯ এপ্রিল ২০২১। সপ্তমী রাত্রি ৬/৫৭। পুনর্বসু নক্ষত্র রাত্রি ২/১৬। সূর্যোদয় ৫/১৭, সূর্যাস্ত ৫/৫৬। অমৃতযোগ দিবা ৬/৫৮ মধ্যে ও ১০/১৫ গতে ১২/৫১ মধ্যে এবং রাত্রি ৬/৪৬ গতে ৯/০ মধ্যে ও ১১/১১ গতে ২/৭ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ দিবা ৩/২৭ গতে ৫/১০ মধ্যে। কালবেলা ৬/৫২ গতে ৮/২৭ মধ্যে ও ২/৪৬ গতে ৪/২১ মধ্যে। কালরাত্রি ১০/১২ গতে ১১/৩৭ মধ্যে।  
৬ রমজান। 

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
আইপিএল: রাজস্থান রয়্যালস-এর বিরুদ্ধে ৪৫ রানে জিতল চেন্নাই সুপার কিংস 

11:29:00 PM

আইপিএল: রাজস্থান ৯৭/৭(১৫ ওভার)

11:00:41 PM

আইপিএল: রাজস্থান ৮১/২(১০ ওভার)

10:32:46 PM

আইপিএল: রাজস্থানকে ১৮৯ রানের টার্গেট দিল চেন্নাই

09:37:20 PM

আইপিএল: চেন্নাই ১৩৩/৫ (১৬ ওভার) 

09:02:32 PM

আইপিএল: চেন্নাই ৯৮/৩ (১১ ওভার) 

08:34:07 PM