সম্পত্তি সংক্রান্ত আইনি প্রচেষ্টায় সাফল্যের সম্ভাবনা। ন্যায্য অর্থ সঠিক সময়ে নাও পেতে পারেন। অর্থপ্রাপ্তির যোগ ... বিশদ
প্রতি বছর মকর সংক্রান্তির দিন গোপীবল্লভপুরের রাধাগোবিন্দ জিউ মন্দিরে বুলবুলি পাখির লড়াই অনুষ্ঠিত হতো। এবছর মন্দিরের গেটে এই লড়াই বন্ধের নোটিস ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানেও লেখা—গোপীবল্লভপুরের ৪৫১ বছরের ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় পরম্পরা ও রাঢ় বঙ্গীয় সংস্কৃতির এই অনুষ্ঠান আইনি জটিলতার কারণে বন্ধ থাকছে।
এতকাল গোপীবল্লভপুরের বাজারপাড়া ও দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দারা দু’টি পক্ষ ভাগ হয়ে রাধাগোবিন্দ জীউ মন্দির প্রাঙ্গণে প্রশিক্ষিত বুলবুলি পাখির লড়াইয়ের অনুষ্ঠান করতেন। লড়াই দেখতে হাজার মানুষের ভিড় জমত। একটি খাটিয়া বা টেবিলের উপর দু’পক্ষের বুলবুলিকে নিরস্ত্র অবস্থায় লড়াই লাগানো হতো। তবে, পরাজিত বুলবুলিটির ঝুঁটি কেটে দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। ফলে এই বুলবুলি লড়াই নিয়ে স্থানীয় বন্যপ্রাণী প্রেমী সংগঠনগুলি আগে থেকেই অসন্তুষ্ট ছিল। যারা পাখিদের পুষে প্রতিপালন করতেন তাদের ‘হাউসি’ ও যারা লড়াই লাগাতেন তাদের বলা হতো সেনাপতি।
‘হাউসি’ স্বরূপ দাস বলেন, ‘খেলার ছলে বুলবুলি পাখির এই লড়াই হয়। এটি আমাদের বৈষ্ণব পীঠস্থান। এলাকার সুখ-শান্তি বজায় রাখার জন্য সাড়ে চারশো বছর আগের থেকে ধর্মীয় রীতি মেনে এই বুলবুলির খেলা চালু হয়েছিল। এতে বুলবুলি পাখি আঘাতপ্রাপ্ত হয় না। চিহ্ন রাখার জন্য পরাজিত পাখিটির ছোট্ট কাঁচি দিয়ে একটু ঝুটি কেটে দেওয়া হতো। তার ঝুঁটি ১০-১৫ দিনের মধ্যে পুনরায় আগের মত হয়ে যেত। পাখিটিকে ছেড়ে দেওয়ার পর অন্য পাখি যে আক্রমণ করত, সেরকম ঘটনাও ঘটেনি। এই লড়াইয়ের পরে সব পাখিকে মুক্ত করে ছেড়ে দেওয়া হয়। এবার এটি বন্ধ রাখার জন্য বনবিভাগ থেকে নোটিস দেওয়া হয়েছে। আমরা মর্মাহত। আমাদের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত হল। আমরা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে বিষয়টি জানিয়েছি। প্রশাসনের গাইড লাইন মেনে যদি এটা চালু রাখা যায়।’
মহান্ত শ্রীকৃষ্ণকেশবানন্দ দেবগোস্বামী বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করব সরকারের নিয়মাবলী ও আইন মেনে যে টুকু করা যায়, সেটাই যেন হয়।’ নিজস্ব চিত্র