গৃহসুখ বৃদ্ধি ও সপরিবারে আনন্দ উপভোগ। অন্যের দোষের দায়বহন করতে হতে পারে। ... বিশদ
আরামবাগের হরিণখোলা এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, নদী ও গ্রাম মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছে। সাহান বাদশা, মইদুল শাহ বললেন, রাত কার্যত বিনিদ্র কেটেছে। ভোরের দিকে শ্যামগ্রাম সংলগ্ন জায়গায় মুণ্ডেশ্বরী নদীর বাঁধ ভেঙে যায়। তারজরে আমাদের ঘরবাড়ি সব ডুবে গিয়েছে। বিগতদিনে এই রকম অবস্থা আমরা দেখিনি। প্রশাসনের উচিত পর্যাপ্ত ত্রাণের ব্যবস্থা করা।
এদিন আরামবাগের আসনপুর এলাকাতেও নদীর বাঁধ ভেঙে গিয়ে হু হু করে জল ঢুকেছে। তারসঙ্গে খানাকুল ও পুরশুড়া ব্লকের বিভিন্ন জায়গাতেও বাঁধ ভেঙে এলাকা প্লাবিত হয়। পুরশুড়া থানা চত্বরে দামোদরের জল ঢুকে গিয়েছে। সেখানে পড়ে থাকা বহু বাইক জলের তলায়। এছাড়া পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলিও প্লাবিত হয়েছে। রাস্তার ধারে ত্রিপল খাটিয়ে বসবাস করছেন দুর্গতরা। সেখানেই কোনওভাবে পরিবার ও নানা সামগ্রী নিয়ে তাঁরা থাকছেন। পাশেই আঁকড়ি মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্রে খোলা হয়েছে ত্রাণ শিবির। এদিন ওই এলাকাতেই বন্যা পরিস্থিতিতে পরিদর্শনে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী চলে যাওয়ার পর এলাকার বাসিন্দারা সাময়িক রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। বাঁধের মেরামতি ও পর্যাপ্ত ত্রাণের দাবিতে তাঁরা বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। হরিহর এলাকার বাসিন্দা পম্পা সামন্ত বলেন, আমাদের ঘর বন্যার জলে ডুবে গিয়েছে। ত্রাণ সামগ্রী মিলছে না। এদিন ভেবেছিলাম মুখ্যমন্ত্রীকে দেখাব। কিন্তু, তা হল কই!
পরে অবশ্য ওই এলাকায় গিয়ে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দেয় হুগলি গ্রামীণ পুলিস। সেখানে হুগলির পুলিস সুপার কামনাশিস সেন সহ অন্যান্য পুলিস কর্তারা যান।
পুরশুড়ার পাশাপাশি খানাকুলের দু’টি ব্লকও ব্যাপকভাবে বিপর্যস্ত হয়েছে। সেখানেও বহু বাসিন্দা আটকে থাকেন। নৌকা ও বোটে করে অনেক দুর্গতকে উদ্ধার করে শিবিরে এনেছে প্রশাসন। কাজ করছে এনডিআরএফের দু’টি টিম। এছাড়া রাজ্যের বিভিন্ন শাখার টিমকেও নামানো হয়েছে। তবে ত্রাণের পাশাপাশি পানীয় জল নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাসিন্দারা। অনেকের দাবি, টিউবওয়েলগুলি জলের তলায় চলে গিয়েছে। অন্যান্য জলের উৎসগুলিও বিপর্যস্ত। এই অবস্থায় পর্যাপ্ত পানীয় জল পেতে সমস্যা হচ্ছে। প্রশাসনের অবশ্য দাবি, জলের পাউচ তৈরি করে তা দুর্গত এলাকায় সরবরাহ করা হচ্ছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, খানাকুল-১ ব্লকে ৩৫টি শিবির করা হয়েছে। সেখানে তিন হাজার দুর্গত রয়েছেন। খানাকুল-২ ব্লকে ১৬টি ত্রাণ শিবিরে প্রায় ৮০০জন বাসিন্দাকে আনা হয়েছে। মহকুমায় বহু কাঁচা ও পাকা বাড়ি ভেঙে পড়েছে। নদীগুলির জলস্তর নিয়ে প্রবল চিন্তায় রয়েছে সব মহলই। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে পুরশুড়ায় ত্রাণবিলি পুলিসের। নিজস্ব চিত্র