কর্মে কিছুটা শুভ। খেলাধূলায় বিশেষ নৈপুণ্য প্রদর্শন। মানসিক দিকটি বিক্ষিপ্ত থাকবে। ... বিশদ
মুর্শিদাবাদ শহরে কিল্লা নিজামতে অবস্থিত নবাবি স্থাপত্যের শ্রেষ্ঠ নিদর্শন হাজারদুয়ারি প্যালেস মিউজিয়ামের পিছনেই রয়েছে ওয়াসেফ মঞ্জিল বা নিউ প্যালেস । মুর্শিদাবাদের নবাবি ইতিহাস থেকে জানা যায়, প্রথম নবাব বাহাদুর অব মুর্শিদাবাদ ফেরাদুন জাঁর নাতি ওয়াসেফ আলি মির্জা প্রাসাদটি নির্মাণ করান। তার নামানুসারে প্রাসাদটি ওয়াসেফ মঞ্জিল নামে পরিচিত। ওয়াসেফ আলি মির্জার মৃত্যুর পরে তার পুত্র ওয়ারেশ আলি মির্জা প্রাসাদটিতে বসবাস শুরু করেন। ওয়ারেশ আলি মির্জা মারা গেলে মুর্শিদাবাদ এস্টেট প্রাসাদটি অধিগ্রহণ করে। পরে টিকিটের বিনিময়ে প্রাসাদটি পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়। স্বাভাবিকভাবেই হাজারদুয়ারি প্যালেস মিউজিয়ামের পাশাপাশি ওয়াসেফ মঞ্জিল পর্যটকদের আকর্ষণের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছিল। ২০১০ সালের শেষ দিকে রাজ্য পর্যটন দপ্তর প্রাসাদটি অধিগ্রহণ করে। তারপরে থেকে তালা বন্ধ হয়ে পড়ে ছিল নবাবি স্থাপত্যের অন্যতম নিদর্শনটি।
হাজারদুয়ারি প্যালেস মিউজিয়াম চত্বরে দীর্ঘদিন ধরে গাইডের পেশার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন গোপাল দাস, পোখরাজ শেখ। পোখরাজ শেখ বলেন, দশ বছরের বেশি সময় ধরে ওয়াসেফ মঞ্জিল বন্ধ হয়ে পড়েছিল। পর্যটকরা প্রাসাদটির বিষয়ে খোঁজখবর নিতেন। বন্ধ রয়েছে শুনে অনেকেই ক্ষুণ্ণ হতেন। সংস্কার না করে তড়িঘড়ি খুলে দেওয়ায় সেভাবে পর্যটক হচ্ছিল না। এবার একেবারে নতুনভাবে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। আশা করছি, পর্যটকরা মুখ ফিরিয়ে নেবেন না। মুর্শিদাবাদ হেরিটেজ অ্যান্ড কালচারাল ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির সম্পাদক স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, প্রাসাদটি নবাবি স্থাপত্যের অন্যতম নিদর্শন। প্রাসাদের ভিতরে সিঁড়িটি বেলজিয়াম পাথরের তৈরি। সিঁড়ির পাশেই ব্লুর্ডাসের শ্বেত পাথরের মর্মর মূর্তি রয়েছে। বিভিন্ন ঘরে রয়েছে নবাবদের ব্যবহৃত খাট, আসবাবপত্র, দলিল, দস্তাবেজ, চিঠি, পোশাক পরিচ্ছেদ সহ বহু গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র। দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকার পাশাপাশি নজরদারি এবং অবহেলার কারণে নবাবি ইতিহাসের নিদর্শনটি নষ্ট হতে বসেছিল। সেই সঙ্গে পর্যটকরা নবাবদের বিভিন্ন নিদর্শন থেকে বঞ্চিত হচ্ছিলেন। এই নিয়ে তাদের মধ্যে বিস্তর ক্ষোভ ছিল। জেলা পর্যটনকে চাঙ্গা করতে ওয়াসিফ মঞ্জিল খুলে দেওয়া রাজ্য সরকারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল। এবার নিউ প্যালেসকে সাজিয়ে তুলতে সাংসদ আবু তাহের খানের ভূমিকা প্রশংসনীয়। ইতিহাসের শিক্ষক ও গবেষক অনাদি মিত্র বলেন, নবাবি ইতিহাসের অনেক নিদর্শন প্রাসাদের অন্ধকার ঘরে পড়েছিল। দোতলার গ্যালারি প্রদর্শিত হলে ইতিহাসের ছাত্র থেকে গবেষকরা উপকৃত হবেন।