জমি, গৃহাদি বা যানবাহনাদি ক্রয়-বিক্রয়ে লাভ ভালো হবে। কাজকর্মে সুনাম। আর্থিকভাব শুভ। ... বিশদ
কেতুগ্রাম-২ ব্লকের মৌগ্রাম অঞ্চলের নতুনগ্রামটি পূর্ব বর্ধমান জেলার হলেও মূল ভূখণ্ড জেলা থেকে বিচ্ছিন্ন। ভৌগোলিক অবস্থান অনুযায়ী চারিদিক দিয়ে দুই নদী ঘিরে রেখেছে গ্রামটিকে। বাবলা ও ভাগীরথী নদীর নতুনগ্রামের কাছে মিলন ঘটেছে। ফলে নদীপাড়ে এখন ভয়াবহ ভাঙন শুরু হয়েছে।
গ্রামের বাসিন্দারা জানান, বাবলা নদীর ধারে বিঘার পর বিঘা চাষের জমি একটু একটু করে ভেঙে যাচ্ছে। মাঠের ফসল নষ্ট হচ্ছে ভাঙনের জেরে। কখন কার জমির অংশ ঝুপ করে বাবলার জলে পড়ে, সেই আতঙ্কেই দিন কাটছে বাসিন্দাদের। একই চিত্র ভাগীরথীতেও। ভাগীরথীতে বহু মানুষ তাঁদের বাড়ি হারিয়েছেন। এখনও বেশ কয়েকটি বাড়ি ভাগীরথীতে ঝুলছে। নতুনগ্রামের বাসিন্দা ইয়াসমিন বিবি বলেন, স্বামী ভিন রাজ্যে কাজে গিয়েছে। ছেলেপুলে নিয়ে নদীর ধারে খুব ভয়ে ভয়ে থাকি। রাতে ঘুম আসে না। যেকোনও মুহূর্তে আমরা নদীতে তলিয়ে যেতে পারি। গ্রামের বাসিন্দা আবু তালেব শেখ বলেন, ভাগীরথীতে আমার দশ কাঠা জমি চলে গিয়েছে। এখন নদীতেই মাছ ধরে সংসার চালাই। পাথর দিয়ে না কাজ করলে বাবলা আর ভাগীরথীকে রোখা যাবে না। গ্রামের আরেক বাসিন্দা লতিব শেখ বলেন, বাবলা নদীতে আমাদেরও অনেক জমি চলে গিয়েছে। আমরা প্রশাসনকে বার বার জানিয়েও কোনও ফল পাইনি।
নতুনগ্রামে তিনটি বুথে ভোটার রয়েছে প্রায় তিন হাজার। আর গ্রামে প্রায় সাড়ে চার হাজার মানুষ বসবাস করেন। এরমধ্যে তিনশো পরিবার দুই নদীর ভাঙনের কবলে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সারাদিন নদীপাড়ে কান পাতলেই ঝুপঝাপ করে পাড়ের মাটি ধসে যাওয়ার শব্দ শোনা যাচ্ছে। বাড়িগুলি বিপজ্জনকভাবে নদীতে ঝুলছে। গ্রামের ১১১ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের পাকা ভবনের একাংশ বিপজ্জনকভাবে নদীতে ঝুলছে। যেকোনও মুহূর্তে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটির চিহ্ন শেষ হতে বসেছে। সেচদপ্তরের কোনও হেলদোল নেই বলে ক্ষোভে ফুঁসছেন বাসিন্দারা। নতুনগ্রামে ভাগীরথীর জল পাড়ে ধাক্কা খাচ্ছে। ফলে নরম মাটি অবিরত ধসে পড়ছে। গ্রামের বাসিন্দারা আরও বলেন, গ্রামে বাবলা নদী ভাগীরথীতে এসে মিশেছে। ফলে ভাঙনটা বেশিই হচ্ছে। একসময় গ্রামে বহু পরিবার বাস করত। এখন অর্ধেকে এসে ঠেকেছে। আমাদের পৈতৃক ভিটে ছেড়ে যেতে মন চায় না। তাছাড়া গ্রামের বেশির ভাগ বাসিন্দা কৃষিকাজের উপর নির্ভরশীল। আর্থিকভাবে দুর্বল তাঁরা। তাই অন্তত কিছু বালির বস্তা দিয়ে যদি কিছুটা ভাঙন রোধ করা যায়, তাহলে গ্রামটা বাঁচবে।