সম্পত্তি সংক্রান্ত আইনি প্রচেষ্টায় সাফল্যের সম্ভাবনা। ন্যায্য অর্থ সঠিক সময়ে নাও পেতে পারেন। অর্থপ্রাপ্তির যোগ ... বিশদ
অরণ্যবেষ্টিত এই সব জায়গায় রয়েছে প্রচুর চা বাগান। জঙ্গল ঘেরা এই অঞ্চলের নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক শোভার মধ্যে লুকিয়ে আছে চা বাগানের শ্রমিক লাইন, গ্রাম।
নিকষ অন্ধকার। শ্রমিক লাইনের আলো প্রায় নিভে গিয়েছে। সারাদিনের হাড়ভাঙা খাটুনির পর শ্রমিকেরা সবে ঘুমিয়েছেন। ঠিক সেই সময় পাতা ভাঙতে ভাঙতে মড়মড় শব্দ করে অথবা প্রায় নিঃশব্দে চলে আসে হাতির দল। এক্ষেত্রে তাদের খাবারের খোঁজই মুখ্য। শ্রমিক লাইনের ধারে থাকা জমিতে ধান, গম, ভুট্টা, অন্যান্য সব্জি যেমন রয়েছে, ঘরে থাকা চাল, ডাল, গম, আটা কোনও কিছুই হাতির খাদ্য তালিকা থেকে বাদ যায় না। মিড ডে মিলের মজুত চাল, রেশন দোকানের সামগ্রী খেয়ে ফেলা এমনকী আর্মি ক্যাম্পের রেশন হাতির খেয়ে ফেলার উদাহরণ ভুরি ভুরি পাওয়া যায়। হাতির হাঁড়িয়া খাওয়ার গল্প তো ডুয়ার্সের বাতাসে কান পাতলেই শোনা যায়। কিন্তু দূর থেকে এসব শুনতে যতটা মজাদার মনে হয়, বাস্তবে মোটেও তেমনটা নয়! হাতির করিডর, রুটে যাতায়াতের পথে বসবাসকারী সাধারণ মানুষ, বনদপ্তরের কর্মী, আধিকারিকদের মধ্যে যাঁরা এই সমস্ত পরিস্থিতির মোকাবিলা করেন, তাঁরা জানেন কুনকি হাতির পিঠে চড়ে অরণ্য ভ্রমণ আর এলাকায় ঢুকে পড়া দামাল দাঁতালকে ঘরে ফেরানো এক নয়।
অরণ্যচারী হাতি আপাত শান্ত, ধীর, স্থির। যুগ যুগ ধরে পূজনীয়। কিন্তু সেই হাতিই গত কয়েক দশক ধরে ক্রমাগত জঙ্গল থেকে এদিক ওদিকে বেরিয়ে আসছে! আসলে মানুষের বসতি বেড়ে চলায় জঙ্গল কমে রাস্তার সংখ্যাও বাড়ছে দিনদিন। আর ক্রমাগত বাড়ছে হাতি-মানুষের সংঘাত!
ডুয়ার্সের আলিপুরদুয়ার জেলার কালচিনি ব্লকের পানা নদী সংলগ্ন রাঙামাটি, রাধারানি, চুয়াপাড়া, মেচপাড়া প্রভৃতি চা বাগানগুলির বাসিন্দারা গত ৫০ বছরের বেশি সময় হাতির আক্রমণের মুখোমুখি হচ্ছেন। একই সমস্যা মাল, মেটেলি, ক্রান্তি, গোরুমারা সংলগ্ন বহু এলাকায়। শ্রমিক লাইন, স্টাফ কোয়ার্টারে হাতির হানা যেন গা সওয়া হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন জায়গা ডুয়ার্সের বিস্তীর্ণ এলাকায় অসংখ্য।
ড়ুয়ার্সের রাজাভাতখাওয়ার বাসিন্দা লোকসংস্কৃতি জগতের রামকুমার লামার কথায়, ছোটবেলা থেকেই দেখছি হাতির দল আসছে। আগে মশাল জ্বালালেই চলে যেত। কিন্তু এখন বনদপ্তর ফায়ার করলেও হাতি নড়তে চায় না। মানুষকে আক্রমণ, ফসল নষ্ট আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। - ফাইল চিত্র।