আর্থিক উন্নতি ও গৃহসুখ বৃদ্ধি। বস্ত্রাদি ও বিবিধ অলঙ্কারাদি ব্যবসার গতি বৃদ্ধি ও মানসিক তৃপ্তি। ... বিশদ
আমসত্ত্ব তৈরি মালদহের অন্যতম কুটির শিল্প। এজেলার ইংলিশবাজার ও আশপাশের এলাকায় কার্যত বাড়ি বাড়ি আমসত্ত্ব তৈরি হয়। সরকারের সহায়তায় বর্তমানে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারাও আমসত্ত্ব তৈরি করছেন। আমের তৈরি ওই সুস্বাদু এবং উপাদেয় খাবারের চাহিদাও রয়েছে। তবে আমসত্ত্ব তৈরি করতে কারিগর তথা শিল্পীদের অনেক হ্যাপা পোহাতে হয়। বাগান মালিক বা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রথমে তাঁরা আম সংগ্রহ করেন। পরে সেই আমের শাঁস বের করা হয়। পরে ওই শাঁস পাতলা করে মেলে দেওয়া হয়। তা রোদে শুকাতে হয়। পরে তা আমসত্ত্ব হিসাবে বাজারজাত করা হয়। আবহাওয়া খারাপ হলে আমের শাঁস শুকাতে দেরি হয়। একটানা খারাপ আবহাওয়ায় তা নষ্টও হয়ে যেতে পারে। ফলে সেক্ষেত্রে শিল্পীদের অনেক ক্ষতি হয়।
এদিকে, এবার শুরু থেকেই আবহাওয়া আম চাষিদের প্রতি বিরূপ আচরণ করছে। আমের ফলনও কম হয়েছে। বাজারে এবার তুলনামূলকভাবে আমের জোগানও কম রয়েছে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। জোগান কম থাকায় আমের মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কা করা হচ্ছে। আমসত্ত্ব শিল্পীরা বাজার থেকে আম কেনেন। ফলে তাঁদেরও চড়া দামে তা কিনতে হচ্ছে। সেই কারণে সমস্যা আরও বেড়েছে। কীভাবে এই পরিস্থিতি তাঁরা সামাল দেবেন তা নিয়ে ভাবছেন।
ইংলিশবাজারের কোতোয়ালির বাসিন্দা যোগমায়া দাস সহ পরিবারের অন্যান্যরা বংশ পরম্পরায় আমসত্ত্ব তৈরি করছেন। বর্তমানে এলাকার মহিলাদের নিয়ে তিনি স্বনির্ভর গোষ্ঠীও গড়ে তুলেছেন। যোগমায়াদেবী বলেন, গতবার আমরা অনেক কম দামে আম কিনেছিলাম। এবার ফলন কমে যাওয়ায় দ্বিগুণ দামে আম কিনতে হচ্ছে। এবার সেভাবে আম পাওয়া যাচ্ছে না। তীব্র গরমে আম নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমসত্ত্ব তৈরির অনুকূল পরিবেশ না থাকায় আম কিনে আনার পর বাড়িতে রেখে দিতে হচ্ছে। ফলে তা পচে যাচ্ছে।
যোগমায়ার সংযোজন, আমরা হিমসাগর, ল্যাংড়া, আম্রপালি, গোপালভোগ, ফজলি, আশ্বিনা সহ সব ধরনের আম থেকেই আমসত্ত্ব তৈরি হয়। রাজ্য সরকার আমাদের আর্থিকভাবে সাহায্য করছে। শিল্পে টাকার কোনও অভাব নেই। প্রাকৃতিক কারণে আমের জোগান কমে যাওয়ায় এবার সমস্যা হচ্ছে। গতবারের তুলনায় এবার আমসত্ত্ব ও আচার পাইকারি বাজারে দেড়গুণ এবং খুচরো বাজারে প্রায় দ্বিগুণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।