বদমেজাজ ও কঠিন ব্যবহারে ঘরে-বাইরে অশান্তি ও শত্রুতা। পেট ও বুকের সংক্রমণে দেহসুখের অভাব। কর্মে ... বিশদ
এব্যাপারে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম মুখোপাধ্যায় বলেন, আমাদের হাসপাতালে প্রতীক্ষালয় নেই। তবে ভবন না থাকলেও কিছু অস্থায়ী ছাউনি রয়েছে। সেখানে হয়তো স্থান সঙ্কুলান হচ্ছে না। তাই খোলা আকাশের নীচে রোগীর আত্মীয়দের থাকতে হচ্ছে। বিষয়টি আমরা রোগী কল্যাণ সমিতির আগামী বৈঠকে উত্থাপন করব। সরকার অর্থ মঞ্জুর করলে প্রতীক্ষালয়ের জন্য ভবন নির্মাণ করা যাবে।
উল্লেখ্য, রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালগুলি দীর্ঘদিন ধরেই অবহেলিত ছিল। গত ২০ বছরে একাধিক সদর হাসপাতাল মেডিক্যাল কলেজ স্তরে উন্নীত হয়। তখন সামগ্রিকভাবে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালগুলির পরিকাঠামো উন্নয়নে নজর দেওয়া হয়। বর্তমান সরকার স্বাস্থ্য ব্যবস্থার খোলনোলচে পাল্টে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। আগের তুলনায় মেডিক্যালের হতশ্রী চেহারার বদল ঘটেছে। একাধিক নতুন নতুন ভবন হয়েছে। কেন্দ্রের সঙ্গে হাত মিলিয়ে অনেক জায়গায় মেডিক্যাল চত্বরে সুপার স্পেশালিটি ব্লক তৈরি হয়েছে। রাজ্যের অন্যান্য মেডিক্যালের মতো মালদহেও বর্তমান সরকারের আমলে একাধিক উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে। তবে রোগীর আত্মীয়দের বিশ্রাম নেওয়ার মতো কোনও ভবন তৈরি হয়নি। এর আগে রাজ্যের কয়েকটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জন্য সরকার ওই ধরনের বহুতল নির্মাণের জন্য অর্থ বরাদ্দ করেছে। তবে মালদহ মেডিক্যালের সমস্যা এখনও মেটেনি।
বর্তমানে মালদহ মেডিক্যালে বিভিন্ন ওয়ার্ডে হাজারেরও বেশি রোগী ভর্তি থাকেন। মালদহের পাশাপাশি গৌড়বঙ্গের বাকি দুই জেলা উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, মুর্শিদাবাদের কিছু অংশের রোগীরাও মেডিক্যালে ভর্তি হন। প্রতিবেশী রাজ্য বিহার এবং ঝাড়খণ্ডের অনেক রোগীও চিকিৎসার জন্য মালদহ মেডিক্যালে আসেন। রোগীর সঙ্গে এক বা একাধিক পরিজনও মেডিক্যালে আসেন। দূরে বাড়ি হওয়ার কারণে তাঁরা দিনের দিন ফিরে যেতে পারেন না। রোগীর শারীরিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে অনেককে রাতে হাসপাতালে থাকতে হয়। কারণ হঠাৎ করে রোগীর অবস্থার অবনতি হলে অন্যত্র স্থানান্তর বা জরুরি ওষুধ ওয়ার্ডে পৌঁছে দেওয়ার জন্য রোগীর পরিজনদের অপেক্ষা করতে হয়। ফলে তাঁরা বাধ্য হয়ে হাসপাতাল চত্বরে রাত কাটিয়ে থাকেন।
রোগীর আত্মীয়দের মধ্যে পাকুড়ের বাসিন্দা সুনীল কুমার শাহ, হরিশ্চন্দ্রপুরের বাসিন্দা পরিতোষ মণ্ডল বলেন, মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে থাকা শেড সন্ধ্যা নামার আগেই ভর্তি হয়ে যায়। সেখানে গুটিকয় লোক থাকতে পারে। হাসপাতালের বারান্দাগুলিতেও রোগীর পরিজনরা থাকেন। স্থান সঙ্কুলান না হওয়ায় আমরা হাসপাতাল প্রাঙ্গণে পলিথিন পেতে বিছানা করি। মশারি থাকলে তা টাঙিয়ে অনেকে শুয়ে পড়েন। সারারাতই হাসপাতাল চত্বরে অ্যাম্বুলেন্স সহ অন্যান্য রোগী বহনকারী চারচাকা গাড়ির আনাগোনা লেগে থাকে। ফলে রাতে দু-চোখের পাতা এক করতে পারি না। শীতে যদিও বা কম্বল ঢাকা নিয়ে শুয়ে থাকা যায়, বর্ষায় হাসপাতালের বারান্দায় দাঁড়িয়ে রাত কাটাতে হয়। হাসপাতালের আশাপাশে কিছু বাড়ি রয়েছে। তবে চড়া ভাড়া দিয়ে সেখানে রাত্রিযাপন করতে হয়। মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ পৃথক প্রতীক্ষালয় নির্মাণ করলে সকলের সুবিধা হবে। নিজস্ব চিত্র