হায়দরাবাদ: চারদিক অন্ধকার। জল-কাদায় এদিক-ওদিক ছড়িয়ে রয়েছে ভেঙে যাওয়া বোরিং মেশিনের ভারী ভারী যন্ত্রাংশ। আর সেই ধ্বংসস্তূপ ঠেলে এগিয়ে চলেছে উদ্ধারকারী দল। তেলেঙ্গানায় সুড়ঙ্গের ছাদ ভেঙে পড়ার ঘটনায় এখনও ভিতরে আটকে রয়েছেন আট জন। রবিবার লাগাতার প্রচেষ্টার পরও সাফল্য মেলেনি। প্রায় ৩০ ঘণ্টা পেরিয়েছে। উদ্ধারকারী দল টানেলের ১৩.৫ কিলোমিটার ভিতরেও পৌঁছে গিয়েছেন। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে জল-কাদা, সিমেন্ট আর নষ্ট হয়ে যাওয়া যন্ত্রাংশ। উদ্ধারকারীদের কথায়, যতক্ষণ না এগুলি বের করা হচ্ছে ততক্ষণ কিছুই স্পষ্ট নয়। এমনকী আটকে থাকা ব্যক্তিদের সঠিক অবস্থানও জানা যাচ্ছে না। যতটা সম্ভব কাছাকাছি পৌঁছে তাঁদের নাম ধরে ডাকা হয়েছে, কিন্তু কোনও সাড়া মেলেনি। শনিবার সকালে জলসেচের জন্য নাগারকুর্নুলের শ্রীশৈলম বাঁধের কাছে সুড়ঙ্গ নির্মাণের কাজ চলছিল। সুড়ঙ্গের ভিতরে প্রায় ৫০ জন ঢুকেছিলেন। সঙ্গে ছিল ২০০ মিটার দীর্ঘ বোরিং মেশিন। তখনই সুড়ঙ্গটির বাঁ দিকের ছাদের প্রায় তিন মিটার অংশ ভেঙে পড়ে। বাকি ৪২ জন ছুটে বেরিয়ে গেলেও মেশিনের সামনের দিকে থাকা আটজন আটকে পড়েন। ভেঙে যায় ওই বিশালাকার মেশিনটিও। এমনকী সুড়ঙ্গের এয়ার চেম্বার ও কনভেয়ার বেল্টও নষ্ট হয়ে যায়। এরপর তাঁদের সঙ্গে আর যোগাযোগ করা যায়নি। তড়িঘড়ি শুরু হয় উদ্ধার কাজ। উত্তরাখণ্ডের সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গের ক্ষেত্রেও প্রায়ই একই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। তাই এদিন সকালেই উত্তরাখণ্ডের সুড়ঙ্গ বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তাদের আনার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। ঘটনাস্থলে রয়েছে ভারতীয় সেনা, নৌসেনা ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যরা। রাত পর্যন্ত খবর, সুড়ঙ্গের ভিতরে প্রায় ১৩.৫ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছেছে উদ্ধারকারী দল। আরও ২০০ মিটার এগতে পারলে পৌঁছনো যাবে কেন্দ্রস্থলে। কিন্তু ওই জায়গাটি পুরোপুরি অবরুদ্ধ। প্রথমে জল বার করতে হবে। তারপর ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করতে হবে। তবেই আসল পরিস্থিতি বোঝা যাবে।
পরিস্থিতির উপর নজর রেখেছেন সেচমন্ত্রী এন উত্তম কুমার রেড্ডি। ইতিমধ্যেই তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডির সঙ্গে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। উদ্ধার কার্যে সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।