সম্পত্তি সংক্রান্ত আইনি প্রচেষ্টায় সাফল্যের সম্ভাবনা। ন্যায্য অর্থ সঠিক সময়ে নাও পেতে পারেন। অর্থপ্রাপ্তির যোগ ... বিশদ
শতবর্ষে পৌঁছে ধর্মনিরপেক্ষ ভারতে নিজস্ব হিন্দুত্ব এজেন্ডার ফাঁস শক্ত করছে আরএসএস। অভিন্ন দেওয়ানি বিধি, এক দেশ এক নির্বাচন, মন্দির ও দেবত্র সম্পত্তির জন্য সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে হিন্দু বোর্ড... নরেন্দ্র মোদির তৃতীয় ইনিংসে পৌঁছে একের পর এক এজেন্ডায় শান দিচ্ছে সঙ্ঘ। যে রাম রাজত্বের ডাক প্রধানমন্ত্রী এবং আরএসএস প্রধান পাশাপাশি দাঁড়িয়ে এক বছর আগে দিয়েছিলেন, তারই রূপদান হচ্ছে প্রতিটি মন্তব্যে। ঘোষণায়। রামমন্দির উদ্বোধনের দিনই নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন, ‘নতুন এক ভারতের সূচনা হল। এই ভারত চলবে রামের নীতিতে, রামের পথে। আজ নতুন কালচক্র বদলের পর্ব শুরু হল। আসছে নতুন এক ভারত।’ মোদির ইঙ্গিত যে হিন্দুরাষ্ট্রের দিকেই ছিল, তা পরিষ্কার। এবার সেই রামমন্দির নিয়ে সঙ্ঘ প্রধানের বক্তব্য কি হিন্দুরাষ্ট্রের পরের ধাপ? সে জন্য ভারতের স্বাধীনতা দিবসকেই অস্বীকার করলেন ভাগবত? তাঁর দাবি, ‘১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট ভারত রাজনৈতিক স্বাধীনতা পেয়েছিল মাত্র। বহুশতাব্দী ধরে নিপীড়নের শিকার ভারতে প্রকৃত স্বাধীনতা এসেছে গত বছর। অযোধ্যায় রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠার দিন।’
২০২৪ সালের ২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধন হলেও হিন্দু পঞ্জিকার তিথি অনুযায়ী চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি ছিল তার বর্ষপূর্তি। বিশেষ এই দিনটিকে ‘প্রতিষ্ঠা দ্বাদশী’ হিসেবে পালনেরও ডাক দিয়েছেন সঙ্ঘ প্রধান। সোমবার ইন্দোরের এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, ‘শতকের পর পর শতক ধরে পরচক্রের (বিদেশি আক্রমণ) পর ওই দিনটি ভারতের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার প্রতীক। ভারতের স্বাধীনতা ছিল, কিন্তু তা প্রতিষ্ঠিত হয়নি।’ এই মন্তব্যে বহু শহিদের রক্তে রাঙা স্বাধীনতাকে সঙ্ঘ প্রধান খাটো করে দেখাতে চাইলেন বলে বিরোধীদের দাবি।
১৯৫০ সালে প্রথম সাধারণতন্ত্র দিবসের পর সঙ্ঘের সদর দপ্তরে কখনও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়নি। তারা বরাবর তাদের গেরুয়া পতাকা তুলে এসেছে। অটলবিহারী বাজপেয়ি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ২০০২ সালে এর বদল হয়। কিন্ত পরিস্থিতির চাপে বহিরঙ্গে বদল আনলেও তেরঙ্গা সম্পর্কে তাদের বহুলালিত ধারণাই অটল বলে অভিযোগ বিরোধীদের। সেই পথেই নয়া স্বাধীনতা দিবসের তত্ত্ব ভাগবত খাড়া করেছেন।
স্বাধীনতা নিয়ে সঙ্ঘ পরিবারে ভিন্ন ধারণা তৈরির চেষ্টা অবশ্য নতুন কিছু নয়। কয়েক বছর আগে বর্তমান বিজেপি সাংসদ কঙ্গনা রানাওয়াত ১৯৪৭ সালের স্বাধীনতাকে ‘ভিক্ষা’ বলে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন। ২০২০ সালে রামমন্দিরের শিলান্যাসের দিন বেছে নেওয়া হয়েছিল ৫ আগস্ট। এর এক বছর আগে এই দিনটিতেই সংবিধানে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদার ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলুপ্তির ঘোষণা হয়েছিল। সেই পথে হেঁটেই এবার স্বাধীনতা দিবস নিয়ে আরএসএস হিন্দুরাষ্ট্রের ধাঁচে নিজস্ব একটা ভাষ্য গড়ে তুলতে চাইছে বলে মনে করা হচ্ছে। আর তা এই রামমন্দির ঘিরেই।