বিমল বন্দ্যোপাধ্যায়, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: লকডাউনের জেরে বাজারে এখন মাছের আকাল। বাঙালির পাত থেকে উধাও হরেক স্বাদের মাছ। অন্ধ্রের বরফের মাছই এখন ভরসা। আর খালবিল, ভেড়ির কিছু মাছ দিয়ে কোনওরকমে চলছে। হবেই তো, ট্রলার যে বন্ধ! গত মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে সমুদ্রে ও সুন্দরবনের নদী-খাঁড়িতে মাছ ধরা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে সামুদ্রিক মাছের জোগান একেবারে তলানিতে এসে ঠেকেছে। তাতে জেলা এবং কলকাতার বাজারগুলি থেকে উধাও হয়ে গিয়েছে হরেক রকমের সামুদ্রিক মাছ। যেমন ভোলা, পমফ্রেট, চিংড়ি, আমোদি, ভেটকি, আড়মাছ, কাজলগৌরী, ম্যাকরোল, সার্টিন, লোটে, গুরজালি সহ কমবেশি ত্রিশ রকমের সুস্বাদু মাছ। সেই জায়গাতে বাজারে স্থানীয় পুকুর ও ভেড়ির চালানি মাছ থাকলেও চাহিদার তুলনায় জোগান এতটাই কম যে প্রতিদিন তার দাম একেবারে উর্ধ্বমুখী। এমনিতে লকডাউনে মানুষে পকেটে ভয়ঙ্কর টানাটানি চলছে। তারমধ্যে মাছের দাম নাগালের বাইরে চলে যাওয়াতে নিম্ন থেকে মধ্যবিত্ত সকলের মাথায় হাত। চলতি ১৫ এপ্রিল থেকে ১৪ জুন সমুদ্রে মাছ ধরা উপর সরকারি নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়ে যাচ্ছে। তার ফলে আগামী আরও দু’ মাস সামুদ্রিক মাছের এই হাহাকার থাকবে বলে জানিয়েছেন মৎস্যজীবীরা। মাছ ধরা বন্ধ হয়ে যাওয়াতে এর সঙ্গে যুক্ত জেলার দশ হাজারের বেশি মৎস্যজীবীও আর্থিক সঙ্কেটে পড়েছেন।
কলকাতা সহ জেলাগুলিতে হরেক রকমের সামুদ্রিক মাছের পর্যাপ্ত জোগান থাকায় স্থানীয় পুকুর ও ভেড়ির মাছের দাম সেভাবে বাড়তে পারে না। ফলে মাছের দাম নাগালের মধ্যে থাকে। একমাত্র বছরের এপ্রিল থেকে জুনের মাঝামাঝি সময় মোট ৬১ দিন সমুদ্রে মাছ ধরা বন্ধের জন্য এর জোগান কমে যায়। তখন অগ্নিমূল্য হয়ে যায় বাটা, পোনা, রুই, কাতলার। ফের জুলাই মাস থেকে সাগরের ইলিশ থেকে হরেক মাছ বাজারে আসার পর দাম এক ধাক্কায় নেমে যায়। গত বছর জুলাই থেকে সাগরে ইলিশ মরশুমে জোর ধাক্কা খান হাজার হাজার মৎস্যজীবী। ইলিশের খরায় একেবারে খালি হাতে ফিরতে হয়েছে। তারমধ্যে বুলবুল ঝড় ও ধারাবাহিক খারাপ আবহাওয়াতে পুজো পর্যন্ত সেভাবে ট্রলার যেতে পারেনি সমুদ্রে। ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনাইটেড ফিসারম্যান অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক জয়কৃষ্ণ হালদার ও কাকদ্বীপ ফিসারম্যান অ্যাসোসিয়েশনের এক কর্তা বিজন মাইতি বলেন, করোনা ও লকডাউন একেবারে পথে বসিয়ে দিয়েছে।