কর্মলাভের যোগ রয়েছে। ব্যবসায়ী যুক্ত হওয়া যেতে পারে। কর্মক্ষেত্রে সাফল্য আসবে। বুদ্ধিমত্তার জন্য প্রশংসা দুযবে। ... বিশদ
করোনার থাবায় ইতিমধ্যেই উত্তরবঙ্গে মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছেন ১১ জন। এ নিয়ে শিলিগুড়ি সহ উত্তরবঙ্গজুড়ে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়েছে। অনেকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিকাঠামো নিয়ে বিস্তর প্রশ্নও তুলেছেন। এমন প্রেক্ষাপটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৈরি কমিটির এক সদস্য সহ একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কলকাতা থেকে হেলিকপ্টারে চেপে শিলিগুড়িতে আসেন। তাঁদের মধ্যে একজন অভিজিৎ চৌধুরী। করোনা পরিস্থিতির মোকাবিলায় রাজ্য সরকারের গঠিত বিশ্ব উপদেষ্টা পর্ষদের সদস্য তিনি। আরএকজন এসএসকেএমের অভিজ্ঞ চিকিৎসক গোপালকৃষ্ণ ঢালি। এদিন প্রথমে তাঁরা উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যান। সেখানে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করেন। বৈঠকের পর অভিজিৎবাবু বলেন, এখানে পরিকাঠামোর কোনও অভাব নেই। পরিকাঠামো নেই বলে যে আতঙ্ক তৈরি করা হয়েছে, সেটির বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।
অভিজিৎবাবু বলেন, শুধুমাত্র করোনার চিকিৎসার জন্য শিলিগুড়ির মাটিগাড়ায় একটি নার্সিংহোম অধিগ্রহণ করা হয়েছে। আপাতত গোটা উত্তরবঙ্গের করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা এই হাসপাতালে রেখে করা হবে। শিলিগুড়ির প্রধাননগরে আরও একটি নার্সিংহোম নেওয়া হয়েছে। মারাত্মকভাবে শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত রোগীদের প্রথমে ওই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে। এরপর তাঁদের সোয়াব টেস্ট করা হবে। তাতে করোনা পজিটিভ মিললে ওই রোগীকে করোনা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে। আর রিপোর্টে নেগেটিভ এলে, যে হাসপাতাল থেকে পাঠানো হয়েছিল, সেখানে আবার পাঠানো হবে। এ জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের চিকিৎসকদের নিয়ে একটি টিম গঠন হয়েছে। এই রোগের মোকাবিলায় তাঁরা হোয়াটসঅ্যাপে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রাখবেন। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে আর করোনার চিকিৎসা করা হবে না।
এদিন বিকেলে উত্তরবঙ্গের মিনি সচিবালয় উত্তরকন্যায় দার্জিলিং ও জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্যদপ্তরের আধিকারিকদের নিয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন অভিজ্ঞ দুই চিকিৎসক। বৈঠকে ওই চিকিৎসকরা ছাড়াও জলপাইগুড়ির ডিভিশনাল কমিশনার অজিতরঞ্জন বর্ধন, দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক দীপাপ প্রিয়া পি, জলপাইগুড়ির জেলাশাসক অভিষেক তেওয়ারি, দার্জিলিংয়ের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ প্রলয় আচার্য, জলপাইগুড়ির মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ রমেন্দ্রনাথ প্রামাণিক সহ আধিকারিকরা হাজির ছিলেন। প্রশাসন সূত্রের খবর, দীর্ঘক্ষণ ধরে চলা বৈঠকে করোনার বিরুদ্ধে চলা যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়ে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পর্যালোচনা করা হয়েছে।
বৈঠকের পর অভিজিৎবাবু বলেন, এখানে এক-দু’জন মারা গিয়েছেন। সেটা দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেশি নেই। শুধু গুজব ও আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। এখানে পরিকাঠামোর অভাব নেই। শিলিগুড়ি সহ রাজ্যের প্রতিটি করোনা হাসপাতালে চারটি করে ভেন্টিলেটর, দু’টি করে ডায়ালিসিস মেশিন সহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম পাঠিয়েছে রাজ্য সরকার। তা হলেও করোনায় আক্রান্ত অধিকাংশ রোগীর জন্য ভেন্টিলেটরের প্রয়োজন হয় না। কলকাতার একটি হাসপাতালের যে ক’জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন, তাঁরা সকলেই সুস্থ আছেন। তাঁদের অধিকাংশের ক্ষেত্রে ভেন্টিলেটরের প্রয়োজন হয়নি।
প্রসঙ্গত, শিলিগুড়ির করোনা হাসপাতালে ৯৫টি এবং গুরুতর শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্তদের জন্য হাসপাতালে ১৪০টি বেড রয়েছে। অভিজিৎবাবু বলেন, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক গোপালকৃষ্ণ ঢালি এখানে দু’সপ্তাহ থাকবেন। কোচবিহার থেকে মালদহ পর্যন্ত প্রতিটি জেলার সঙ্গে তিনি নিয়মিত যোগাযোগ রাখবেন। সমন্বয় রক্ষার কাজ করবেন।