উচ্চশিক্ষা ও বৃত্তিমূলক শিক্ষায় দিনটি শুভ। কর্মস্থলে বড় কোনও পরিবর্তন নেই। আর্থিক দিক অপেক্ষাকৃত শুভ। ... বিশদ
সোমবার বারাসতে জেলাশাসকের অফিসের সামনে একটি চায়ের দোকানে বসেছিলেন ত্রিলোচন আঢ্য। সঙ্গে ছিলেন ছেলে। বললেন, কাগজে দেখলাম, বাড়ির একটি দেওয়াল পাকা থাকলে আবাসের টাকা পেতে অসুবিধা হবে না। তাই ছেলেকে নিয়ে ডিএম অফিসে এসেছি নিয়ম জানতে। তাঁর ছেলে অনিরুদ্ধ নিউটাউনে একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। ত্রিলোচনবাবুর কথায়, ছেলে যা রোজগার করে তাতে করে টেনেটুনে সংসার চলে যায়। আমি রাজ্য সরকারের বার্ধক্য ভাতা পাই, বউমা পায় লক্ষ্মীর ভাণ্ডার। ওই টাকা বাঁচিয়ে সামনের দিকটা পাকা করেছি। যাতে ঘরে জল না ঢোকে। এবার আবাস প্রকল্পে পাকা বাড়ি পেলে দুর্যোগের সময় আর চিন্তা থাকবে না।
হিঙ্গলগঞ্জের ইন্দিরা মাইতি (৫৮) এসেছিলেন জেলা পরিষদে। উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সভাধিপতির সঙ্গে কাজের বিষয়ে কথা বলতেই তাঁর আসা। অফিস চত্বরেই বসেছিলেন তিনি। পাশেই কয়েকজন আবাস যোজনা নিয়ে আলোচনা করছিলেন। তাঁদের থামিয়ে ইন্দিরাদেবী জানতে চাইলেন, আমার বাড়ি দেওয়াল কিছুটা পাকা। সেটা করেছি লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের জমানো টাকায়। স্বামী বাইরে দিনমজুরের কাজ করেন। একমাত্র মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। একচিলতে জীর্ণ বাড়ির একাংশ লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকায় মেরামত করে পাকা দেওয়াল দিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম, পাকা দেওয়াল থাকায় আবাসের আওতায় হয়তো আসব না। কিন্তু নতুন নিয়ম চালু হওয়ায় টাকা পাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এ ব্যাপারে নিশ্চিত হতেই সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামীর কাছে আসা। শেষমেশ তিনি আশ্বাস পাওয়ার পর স্বস্তি নিয়ে পা বাড়ালেন বাড়ির দিকে। যাওয়ার সময় বলে গেলেন, কেন্দ্র দেয়নি তো কী হয়েছে, রাজ্য সরকার তো দেবে।
এ নিয়ে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী বলেন, কোনও গরিব মানুষের বাড়ির একটি দেওয়াল পাকা থাকলেও তিনি আবাসের উপযুক্ত উপভোক্তা। জেলায় এমন অনেক বাড়ি আছে, যেখানে প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশঙ্কায় মানুষ কষ্ট করে হলেও সামনের দিকটি পাকা করেন। প্রথমে নিয়মে ছিল, এঁরা আবাসের আওতায় আসবেন না। সেকারণে আমাদের জেলার প্রায় অর্ধেকই গরিব মানুষ এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছিলেন। আমি এই অসহায় মানুষের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আর্জি জানিয়েছিলাম। তিনি আমার অনুরোধ রেখেছেন। মানবিক কারণেই এমন সিদ্ধান্ত। সেই মতো আবার সমীক্ষার কাজ চলছে।