নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বাগরির আতঙ্ক আবার ফিরে এল রবিবার রাতে। দগ্ধ বাগরির থেকে কিছুটা দূরে অবস্থিত বড়বাজারের আর্মেনিয়ান স্ট্রিটের একটি কাপড়ের গুদামে অগ্নিকাণ্ডের জেরে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়াল। তবে এবার বাগরির মতো বাড়বাড়ন্তের আগেই ব্যবসায়ীরা আগুন নেভানোর কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েন। খবর পেয়ে পর পর প্রায় পাঁচটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে চলে আসে। প্রায় দেড়-দু’ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন দমকলের কর্মী-আধিকারিকরা। এদিকে, খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে চলে আসেন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু। তিনি বলেন, ঘিঞ্জি এলাকা হলেও দমকল কর্মীরা দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছেন। শহরের সাধারণ মানুষ এবং ব্যবসায়ীদের অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়ে ইতিমধ্যেই সতর্ক করা হয়েছে। সচেতনতা বাড়ানোর কাজও চলছে। দমকলের শীর্ষকর্তারা ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে বলেন, ওই মার্কেটের অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা পর্যাপ্ত ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে। তবে কী কারণে এই আগুন লেগেছিল, তা সবকিছু খতিয়ে দেখার পরই জানা যাবে। যদিও প্রাথমিক কারণ হিসেবে শর্ট সার্কিটের কথাই বলেছেন তাঁরা। এদিকে, অগ্নিদগ্ধ গুদামের মালপত্র বের করা হয়। রাত পর্যন্ত সেই কাজ করেন মার্কেটের অন্যান্য ব্যবসায়ী। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাত আটটা-সাড়ে আটটা নাগাদ ওই মার্কেটের একটি কাপড়ের গুদাম থেকে আচমকাই আগুন বেরতে দেখেন ব্যবসায়ীরা। তাঁদের কথায়, আগুনের ফুলকি প্রথমে দেখা যায়। তারপরই আগুনের বড় লেলিহান শিখা দেখতে পেতেই আতঙ্ক তৈরি হয়। রবিবার সন্ধ্যায় ছুটির দিন থাকায় মার্কেটের প্রায় সব দোকানই বন্ধ ছিল। কিন্তু অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে প্রত্যেকেই ছুটে আসেন। তাঁরাও আগুন নেভানোর কাজে হাত লাগান। তাঁরা প্রথমে ওই গুদাম থেকে মালপত্র সরাতে থাকেন। তারপর গুদামের আশপাশের দোকান থেকে মালপত্র সরিয়ে আনেন। তাঁদের কথায়, প্রথম দিকে আগুন ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। কারণ, সেখানে দাহ্য বস্তু ঠাসা অবস্থায় ছিল। একবার ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ন্ত্রণে আনা অসম্ভব হত। তাই কাপড় সরানোর কাজ চলতে থাকে।
দমকলের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, রাস্তা থেকে অনেকটা দূরেই ওই গুদাম। গলির ভিতরে থাকায় সমস্যা হয়েছিল জলের পাইপ নিয়ে যেতে। রাস্তাও সঙ্কীর্ণ। সব অবরুদ্ধ হয়ে রয়েছে। যেকারণে পাইপ নিয়ে যেতে গিয়ে সমস্যার মুখে পড়তে হয়। দমকলমন্ত্রী জানিয়েছেন, অগ্নি নির্বাপণ যন্ত্র কী অবস্থায় রয়েছে, তা খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দিয়েছি। তবে আগুন দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভবপর হয়েছে। যদিও আতঙ্ক থেকে বেরতে পারেননি ব্যবসায়ীরা। তাঁদের কথায়, তাঁরা অনেক সতর্ক রয়েছেন। বাগরিতে কী ঘটেছিল, প্রত্যেকেই জানেন। তাই তাঁরাও যথেষ্ট ব্যবস্থা নিয়েছেন।