সংবাদদাতা, কৃষ্ণনগর: ‘ডানা’র প্রভাবে কৃষ্ণগঞ্জ ব্লকে ব্যাপক বৃষ্টি হওয়ায় ফুল ও সব্জি চাষে ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পুজোয় ফুল বিক্রি করে লক্ষ্মী লাভের আশা করেছিলেন চাষিরা। বৃষ্টির জেরে তাঁদের মাথায় হাত পড়েছে।
চাষিরা জানিয়েছে, বৃষ্টির জেরে ফুল, সব্জি জমিতে জল দাঁড়িয়েছে। পুঁটিখালি, কুমারপুর, বাবলাবন,, ধরমপুর, নিধিপোতা, আদিত্যপুর, গোয়াড়িপাড়া, মালিঘাটা, মথুরাপুর, বানপুর, শিবনিবাস সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের মাঠে শনিবারও জল দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। ফলে বেগুন, উচ্ছে, করলা, ঝিঙে, পটল, পালংশাক, মুলো, লঙ্কা চাষে ক্ষতির আশঙ্কা করছেন চাষিরা।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার জেলায় গড় বৃষ্টি হয়েছে ৬৬.৯৫ মিলি মিটার। কৃষ্ণগঞ্জ ব্লকে বৃষ্টি হয়েছে ৫৭.২ মিলিমিটার। এই মুহূর্তে জেলায় সব্জি চাষের ৩২০০ হেক্টর জমি জলমগ্ন। এর মধ্যে কৃষ্ণগঞ্জ ব্লকে সব্জি চাষের প্রায় ১৫০ হেক্টর জমি জলমগ্ন। জেলায় ফুল চাষের ৫৫০ হেক্টর জমি জলমগ্ন। এর মধ্যে কৃষ্ণগঞ্জ ব্লকে ৫০ হেক্টরের বেশি জলমগ্ন। সব্জি চাষী দীপেন বিশ্বাস বলেন, আড়াই বিঘা জমিতে বেগুন, ঝিঙে, পটল চাষ করেছিলাম। মাঠে যেভাবে জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে তাতে গাছ পচে যাবে। আমাদের খুব ক্ষতি হয়ে গেল। বিষ্ণু বিশ্বাস বলেন, চাষ করার জন্য ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়েছি। সেই টাকায় মাঠে সর্ষে চাষ করেছিলাম। এখন কীভাবে সেই টাকা শোধ করব বুঝতে পারছি না।
কৃষ্ণগঞ্জ ব্লকে ফুল চাষ ভালো হয়। কালীপুজোর আর মাত্র কয়েক দিন বাকি। এই সময় রজনীগন্ধা, গাঁদা ফুল বিক্রি করে দু’টো পয়সা ঘরে আসবে বলে মনে করেছিলেন ফুলচাষিরা। কিন্তু, গাছের গোড়ায় জল দাঁড়িয়ে যাওয়ায় তাঁদের কার্যত দিশেহারা অবস্থা। রমেন বিশ্বাস বলেন, কালীপুজোয় রজনীগন্ধা, গাঁদা ফুল বিক্রি করে লাভের মুখ দেখব ভেবেছিলাম। ‘ডানা’র তাণ্ডবে বৃষ্টির জল গাছের গোড়ায় দাঁড়িয়ে গিয়েছে। জল বের করা যায়নি। গাছ পচে যাবে।
উদ্যান পালন দপ্তরের আধিকারিক ঋষিকেশ খাঁড়া বলেন, মাঠ থেকে জল বের করে দিতে পারলে ক্ষতি হবে না। আমরা মাঠ থেকে জল বের করে দেওয়ার পরামর্শ চাষিদের দিচ্ছি। কীটনাশকও দিতে হবে। তবে মাঠ থেকে জল বের করতে না পারলে ক্ষতির সম্ভাবনা থেকে যাবে।