বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
কলকাতা

ট্যাংরা কাণ্ড: হুঁশ ফিরতেই পুলিসকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা, ‘ও খুনি’, পরস্পরকে দুষছে দুই ভাই

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: তিনজনকে খুন করল কে? তদন্তকারীদের এই প্রশ্নের জবাবে একে অপরের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছেন ট্যাংরার লেদার ব্যবসায়ী প্রণয় ও প্রসূন দে। হুঁশ ফিরতেই হাসপাতালের বেডে শুয়ে তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন দুই ভাই। যদিও অফিসাররা তাঁদের কথায় ভরসা করছেন না। তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে তাঁরা নিশ্চিত, প্রণয় ও প্রসূন রীতিমতো পরিকল্পনা করেই খুন করেছে নিজেদের বউ-মেয়েকে। সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেই দু’জনকে গ্রেপ্তার করবে পুলিস। আর তারপর জেরার মুখেই সামনে আসবে, ট্যাংরাকাণ্ডে কার কী ভূমিকা ছিল!
দুই গৃহবধূ ও কিশোরীকে কে খুন করল? কেনই বা ১৪ বছরের কিশোরকে নিয়ে গাড়িতে গোটা শহর চক্কর দিচ্ছিলেন প্রণয়-প্রসূন? দে পরিবারের খুনের ঘটনায় এই দু’টি প্রশ্নকে ঘিরেই বাড়ছে রহস্য। যদিও সেই প্রশ্নের জট তদন্তকারীরা অনেকটাই খুলতে পেরেছেন বলে জানা যাচ্ছে। তদন্তে উঠে এসেছে, একদিকে ব্যবসায় ক্ষতি, অন্যদিকে পাওনাদারের চাপ— কোনওটাই সামাল দিতে পারছিলেন না দুই ভাই। বাজারে ঋণ ছিল প্রায় ২০ কোটি টাকা। কিন্তু অ্যাকাউন্টে গচ্ছিত অর্থ তখন প্রায় তলানিতে। প্রণয় পুলিসের কাছে দাবি করেছেন, পাওনদাররা বারবার ফোন করে তাগাদা দিচ্ছিল। সকলকেই ১৮ ফেব্রুয়ারি আসতে বলেন তিনি। কিন্তু ১১ তারিখ অবধি টাকা জোগাড় করে উঠতে না পারায় বুঝে যান, নির্ধারিত দিনে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা যাবে না। তাই ১২ ফেব্রুয়ারি ভাই প্রসূনকে সঙ্গে নিয়ে পরিকল্পনা করেন আত্মহত্যার। পরদিন বিষয়টি নিয়ে স্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনা করেন দু’জনে। কিন্তু স্ত্রীরা চিন্তিত হয়ে পড়েন, স্বামীরা না থাকলে তাঁদের কী হবে? পাওনাদাররা তো তাঁদের উপর চাপ বাড়াবে। ফলে শেষপর্যন্ত সিদ্ধান্ত হয়, সকলে মিলেই আত্মহত্যা করবেন। মাঝে আর একবার শেষ চেষ্টা করেও টাকা জোগাড়ে ব্যর্থ হন দু’ভাই। ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স প্রায় শূন্য হয়ে যায়। এরপর ১৭ তারিখ ফ্যাক্টরি থেকে ফিরে বাড়ির সমস্ত দরজা জানালা বন্ধ করে দেন প্রসূন। ওইদিন এক পাওনাদার বাড়িতে এসে ফোন করলে তিনি জানান, আয়কর হানা হতে পারে। তাই দরজা-জানলা বন্ধ। পাওনাদারের ফোনটি কেটে দিয়ে নিজের মোবাইলটি ‘সুইচড অফ’ করে দিয়েছিলেন তিনি। 
দে পরিবারের বড় ছেলে প্রণয়। তদন্তকারীদের কাছে নিজেদের প্ল্যানিং তিনি বিস্তারিতভাবেই তুলে ধরেছেন বলে খবর। জানিয়েছেন, ঘুমের ওষুধ অনলাইনে অর্ডার করিয়ে আনা হয়েছিল আগেই। ১৭ তারিখ রাতে পায়েসের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে নিজের মেয়ে প্রিয়ংবদাকে খাওয়াতে যান প্রসূন। কিন্তু ওষুধের গন্ধ পেয়ে সে খেতে রাজি হয়নি। ওই কিশোরীকে কার্যত মারধর করে, মুখ টিপে জোর করে পায়েস খাওয়ানো হয়। এরপর সস্ত্রীক দুই ভাই ও প্রণয়ের ছেলেও পায়েস খায়। পরদিন সকালে উঠে মেয়ের মৃতদেহ দেখে আসেন প্রসূন। এরপর বাকিদের খুন করা হয়। প্রসূন তদন্তকারীদের কাছে দাবি করেছেন, ‘দাদার স্ত্রী ঘরে ঘুমিয়ে ছিল। দাদা গিয়ে তাঁর হাতের শিরা কেটে দেন। মায়ের পাশে ঘুমোচ্ছিল ছেলে। তার ঘুম ভেঙে যায়। সেই সময় ছুরি দিয়ে ছেলের হাতে আঘাত করে প্রণয়। এরপর নিজের স্ত্রী রোমির গলায় ছুরি চালায় প্রণয়। নেতিয়ে পড়া রোমির হাতের শিরাও কেটে দেওয়া হয়।’
যদিও প্রণয়ের বক্তব্য এর ঠিক উল্টো। তাঁর দাবি, ‘ঘুম ভাঙার পর আমি উপরে চলে গিয়েছিলাম। ভাই প্রথমে রোমিকে খুন করে, তারপর আমার স্ত্রী সুদেষ্ণাকে খুন করেছে। আমার ছেলে চিৎকার করে ওঠায় তাকেও আঘাত করেছিল। এরপর আমার ছেলেকে নিয়ে তিনতলায় চলে আসে।’ তদন্তকারীদের কাছে প্রণয় আরও জানিয়েছেন, এরপর তাঁরা দু’ভাই মিলে প্রচুর মদ খান। রাত ১টা নাগাদ বের হন গাড়ি নিয়ে। শহরের বিভিন্ন প্রান্তে চক্কর কাটার সময়েও মদ খাচ্ছিলেন তাঁরা। ওই রাতের সিসি ক্যামেরার ফুটেজেও দেখা গিয়েছে, বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় প্রণয়ের হাতে দু’টি মদের বোতল। পুলিসের কাছে তাঁর দাবি, প্রথমে উলুবেড়িয়া গিয়ে তিনজনে মিলে আত্মহত্যা করার প্ল্যান ছিল। পরে সিদ্ধান্ত বদলে বাইপাসে এসে দুর্ঘটনা ঘটায় ভাই প্রসূন। 
(ছবি: দে বাড়িতে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা)
12h 12m ago
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

বিশেষ কোনও কর্মের আর্থিক সংস্থান নিয়ে মানসিক চিন্তা বৃদ্ধি পাবে। আর্থিক ঝুঁকি নেবার আগে দুবার...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার ৮৫.৮৮ টাকা ৮৭.৬২ টাকা
পাউন্ড ১০৭.৮৬ টাকা ১১১.৬২ টাকা
ইউরো ৮৯.১৯ টাকা ৯২.৫৮ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা