যে কোনও ব্যবসায় শুভ ফল লাভ। বিশেষ কোনও ভুল বোঝাবুঝিতে পারিবারিক ক্ষেত্রে চাপ। অর্থপ্রাপ্তি হবে। ... বিশদ
‘পর্ণশবরীর শাপ’-এ অভিনয় করতে রাজি হওয়ার প্রাথমিক কারণ কী?
গল্পটা খুব ইন্টারেস্টিং লেগেছিল। আসলে আমি হরর কখনও করিনি। সারা পৃথিবী জুড়ে খুব কম হরর ছবি আছে, যেটা ভালো লেগেছে। যেমন গ্রেগরি পেকের ছবি ‘দ্য ওমেন’ খুব প্রিয়। এখনও দেখালে দেখব বসে। তার থেকে আর একটু ভালগার ‘এক্সঅরসিস্ট’ দেখেছিলাম। সেটাও ভালো লেগেছিল। বিদেশে একটু অন্যভাবে করতে পারে। অনেক বাজেটও থাকে। তবে হরর তৈরি করা খুব শক্ত।
তাই?
অবশ্যই। ভূতের গল্পগুলো নিয়ে সিনেমা করতে গেলে অন্ধকার করতে হয়। কারণ যাকে দেখাতে চাইছে, তাকে দেখতে পেয়ে গেলে আর ভূত মনে হবে না। পরিস্থিতিটা ভয়ের মনে হবে না। শব্দ দিয়েও হরর খুব ভালো কানেক্ট করা যায় না বোধহয়। এটা অভিজ্ঞতার ব্যাপার। ধরুন, তরুণ মজুমদারের সেই অর্থে যদি সবচেয়ে খারাপ ছবি কিছু হয়, সেটা ‘কুহেলি’। অন্য ছবিগুলোর মধ্যে যে সুইটংনেস, ম্যাচিওরিটি দেখেছি, আমরা যেজন্য তাঁকে চিনি, ‘কুহেলি’ সেই স্তরে পড়ছেই না।
ভূতের ছবিতে কি দর্শক যুক্তি খোঁজেন, যেটা গল্পে পাঠক খোঁজেন না?
আসলে পাঠক ভূতের গল্প পড়তে গিয়ে মনে মনে যে জঙ্গলটা ভাবছেন, দেখার সঙ্গে তা নাও মিলতে পারে। লেখা থেকে তো পাঠক কল্পনা করছে। কল্পনায় একটা জঙ্গল যতটা ভয়ের, যতটা ঘন, গাছগুলো যেমন ভাবছেন, সেটা তো সিনেমায় আনা যায় না। পরিচালক যখন জঙ্গল দেখাচ্ছেন, সেটা দর্শকের কাছে অনেক পাতলা লাগতে পারে। ফলে ভয়টা ভাবনায় অনেক বেশি আসে।
আপনি এবং প্রায় সমসাময়িক প্রসেনজিত চট্টোপাধ্যায়, দেবশ্রী রায়, ইন্দ্রাণী হালদার— সকলেই এখন ওটিটি করছেন। এটা কি বাধ্যবাধকতা?
না, বাধ্যবাধকতা নয়। তবে কাজ তো কমে গিয়েছে। সিনেমা কম হয়। ফলে আলাদা জায়গায় সকলকেই কাজ করতে হবে।
নতুনদের সঙ্গে কাজ করে কেমন লাগল?
নতুনরা খুব বুদ্ধিমান। শুধু একটাই জিনিস মনে হয়, আগের টিমগুলোর মধ্যে সিনেমা সম্বন্ধে প্রচণ্ড ভালোবাসা ছিল। দর্শককে খুব ভালোবাসতেন তাঁরা। এখন এঁরা পুরোটাই টেকনিক্যালি ভাবেন। একজন টেকনিশিয়ান তিনি সহকারী পরিচালক হতে পারেন, লাইট বিভাগের অথবা ক্যামেরা বিভাগের, যে কেউ হতে পারেন— নিজে যে ছবিটা করতেন, সেটা দেখতে দেখতে কেঁদে ফেলতেন। আমি নিশ্চিত, এখন কোনও সহকারী পরিচালক নিজের ছবি দেখে কাঁদবেন না। হয়তো ছবিটা দেখার সময়ই হবে না তাঁর।
এর ভালো এবং খারাপ দিক কী?
ভালো, খারাপ দু’টো দিকই আছে। দেখুন, বেঁচে থাকতে হবে তো। বাংলা ছবি মারা যাচ্ছে। এটা ফ্যাক্ট, আমি বলবই। আবার বাঁচাতে হবে সেটাও বলব।
ওটিটি বাঁচাবে?
বাঁচানোর জায়গা একমাত্র সিনেমা হল। বাংলা ছবি দেখার যে দর্শক তাঁদের কিন্তু অ্যান্ড্রয়েড ফোন থাকে না। তাঁরা এত বড়লোক নন, এত আপডেটেডও নন। তাঁরা নেটফ্লিক্স দেখেন না। তাঁদের ছোট নয়, বড় স্ক্রিন দেখতে ভালো লাগে। কিন্তু গত ২০ বছর ধরে বড় স্ক্রিনে আমরা তাঁদের যে ছবি দিয়ে এলাম, তাতে আমার বলতে খারাপ লাগলেও সত্যিটা হল, সিনেমা হল থেকে বের করে দিয়েছি তাঁদের। ‘এখন দর্শক পাল্টে গিয়েছে, অঞ্জন চৌধুরী , স্বপন সাহা দেখেন না, আমাদের দেখেন’— বলে আমরা যে ছবি দিয়েছি তার পরিণতি এটাই। সাধারণ দর্শককে এখন আর কেউ ভালোবাসেন না। আমাদের সময় সাধারণ দর্শককে ভালোবাসতেন। দর্শক বলতে এখন যাঁদের মনে করা হচ্ছে তাঁরা ১০ শতাংশ। যাঁরা ওঁদের প্রশংসা করেন। আসলে ওঁদের চারপাশের লোক। তার বাইরে কেউ নেই।
‘পর্ণশবরীর শাপ’ যাঁরা আপনার জন্য দেখতে চান, তাঁরা কী আশা নিয়ে দেখবেন?
আমার চরিত্র এক অধ্যাপকের। সেই ডিগনিটি পাবেন আমার মধ্যে। আর সুরঙ্গনাও (বন্দ্যোপাধ্যায়) অসাধারণ অভিনয় করেছে।
ছবি: দীপেশ মুখোপাধ্যায়