কর্মপ্রার্থীদের কর্মলাভ কিছু বিলম্ব হবে। প্রেম-ভালোবাসায় সাফল্য লাভ ঘটবে। বিবাহযোগ আছে। উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় থেকে ... বিশদ
বায়োপিক নয় কেন? অজানা উত্তমকুমারকে কতখানি পাওয়া যাবে এই ডকু-ফিচারে? এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া গেল সম্প্রতি বাইপাসের ধারে একটি অভিজাত ক্লাবে। ‘যেতে নাহি দিব’র পরিচালক, অভিনেতা, কলাকুশলীদের সঙ্গে মুখোমুখি আড্ডায়। প্রবীরবাবু বললেন,‘আমি মহানায়ককে খুব কাছ থেকে দেখেছি। সেইসঙ্গে উত্তমযুগের বরেণ্য সাংবাদিক কালীশ মুখোপাধ্যায়ের লেখা থেকে যা পেয়েছি, তাই দিয়ে এই ডকু-ফিচারটা তৈরি করেছি। ছবিতে যা আছে, সব সত্যি ঘটনা। বেশিরভাগই আমার নিজের চোখে দেখা।’
উত্তম-ঘনিষ্ট প্রবীরবাবু যোগ করলেন,‘তবুও ছবিটাকে আমি ডকু-ফিচারই বলব, বায়োপিক বলব না। কারণ, কারও বায়োপিক করতে গেলে আলোচ্য ব্যক্তির জীবনের অনেক কিছুই যোগ করতে হয়। সেটা উত্তমকুমারের ক্ষেত্রে সম্ভব নয়। তাছাড়া তাতে অনেকের সহযোগিতাও দরকার। যেটা আমি পাব না। পাইওনি।’ নিজের চোখে তিনি যা দেখেছেন, কাউকে অসম্মানিত না করে মূলত সেটাই তিনি তুলে ধরেছেন ছবিতে, বলে দাবি করলেন পরিচালক। ছবির শুরু মহানায়কের জন্ম থেকে হলেও চিত্রনাট্যের বেশিরভাগটাই আবর্তীত হয়েছে ময়রা স্ট্রিটের বাড়ি ঘিরে আর মহানায়কের অভিনয় জীবনের নানা দিক নিয়ে। আর আছে উত্তম অভিনীত একাধিক ছবির ঝলক।
ছবিতে সুপ্রিয়াদেবীকে প্রবীরবাবু হাজির করেছেন দুই পর্বে। সেই দুই পর্বের অভিনেত্রীরা হলেন যথাক্রমে পিউ পল ও মল্লিকা সিংহ রায়। মাত্র একটি দৃশ্য আছে সুচিত্রা সেন ও সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে। মূলত উত্তমকুমারের সঙ্গে সুপ্রিয়াদেবীর সম্পর্ককে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে ছবিতে। এ ব্যাপারে প্রবীরবাবুর স্বীকারোক্তি, ‘সবটা দেখানো সম্ভব হয়নি। সেটা হয়তো উচিতও না। তবে সেটুকুও সম্ভব হয়েছে সুপ্রিয়াদেবীর সহযোগিতাতেই। মূলত মানুষ উত্তমকুমারকেই আমি তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।’
উত্তমকুমারের চরিত্রে অভিনয় করেছেন সুজন মুখোপাধ্যায়। সুজন শুরু করেছেন উত্তমকুমারের বয়স যখন চল্লিশ পেরিয়ে গিয়েছে, সেই সময় থেকে। এক কাপড়ে যখন উত্তমকুমার সুপ্রিয়াদেবীর বাড়িতে গিয়ে উঠছেন। ওই দৃশ্যটি দিয়েই উত্তমকুমারের চরিত্রে পর্দায় আসছেন সুজন।
এই ছবিতে সুপ্রিয়াদেবীর দ্বিতীয় পর্ব, অর্থাৎ ময়রা স্ট্রিটের বাড়িতে উত্তমকুমারের চলে আসার সময় থেকে সুপ্রিয়াদেবীর ভূমিকায় আছেন মল্লিকা সিংহ রায়। এই চরিত্রটায় অভিনয় করতে গিয়ে স্বয়ং সুপ্রিয়াদেবীর আশীর্বাদ পেয়েছেন তিনি। আপ্লুত মল্লিকা বলেন,‘চরিত্রের গঠনটাই উনি নিজে হাতে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন আমাকে। জানি না কতটা করতে পেরেছি। দুঃখ একটাই উনি নিজে দেখে যেতে পারলেন না।’ সুচিত্রা সেন সেজেছেন উজ্জয়িনী বন্দ্যোপাধ্যায়। মাধবী মুখোপাধ্যায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন শ্রাবণী ঘোষ। পায়েল বন্দ্যোপাধ্যায় অভিনয় করেছেন সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের চরিত্রে। উত্তমঘরণী গৌরীদেবীর চরিত্রে আছেন প্রিয়াঙ্কা ভট্টাচার্য।
সিনেমার জগতে যখন পা রাখেন, তখন কাননদেবীই ছিলেন শকুন্তলা বড়ুয়ার আইডল। কারণ, শকুন্তলাদেবীর ব্যাখ্যায়,‘আমিও গান গাইতাম। স্বপ্ন দেখতাম কাননদেবীর মতো অভিনয়ও করব, গানও গাইব।’ ঘটনাচক্রে এই ছবিতে কাননদেবীর চরিত্রেই অভিনয় করছেন শকুন্তলাদেবী। একদা যাঁর মতো হতে চেয়েছিলেন, আজ শিল্পী জীবনের সায়াহ্নে এসে সেই কাননদেবীর চরিত্রে অভিনয় করাটাকে ‘অপ্রত্যাশিত পাওয়া’ বলেই মনে করছেন অভিনেত্রী।
ছবির সংলাপ লিখেছেন চিত্রনাট্যকার অশোক রায়। ক্যামেরায় আছেন অরিন্দম ভট্টাচার্য। সঙ্গীত পরিচালক দীপ্তেশ-প্রদীপ্ত। গীতিকার শান্তিনাথ কুণ্ডু। গান গেয়েছেন সাগ্নিক সেন ও প্রীতি বসু। ছবিটিতে একটি বিশেষ চরিত্রে অভিনয় করেছেন স্বর্ণযুগের শিল্পী শ্যামল মিত্রর ছেলে সৈকত মিত্র। কালীশ মুখোপাধ্যায়ের চরিত্রে আছেন দুলাল লাহিড়ী। সম্ভবত ২২ নভেম্বর দর্শকের দরবারে আসবে ‘যেতে নাহি দিব’।