পুরনো সঞ্চয় ও শেয়ার প্রভৃতি ক্ষেত্র থেকে অর্থ লাভের যোগ প্রবল। মানসিক অস্থিরতা থাকবে। সন্তানের ... বিশদ
ছোট্ট বন্ধুরা, তোমরা হয়তো অনেকেই সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা কাকাবাবু সিরিজের ‘সবুজ দ্বীপের রাজা’ বইটি পড়েছ। সেখানে লেখক সন্তু ও কাকাবাবুর আন্দামান অভিযানের কথা বলেছেন। লেখায় উঠে এসেছে আন্দামানের দ্বীপে বসবাসকারী জারোয়া, সেন্টিনেলিজদের মতো উপজাতিদের কথা। বঙ্গোপসাগরের বুকে পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ। তারই মধ্যে অন্যতম হল নর্থ সেন্টিনেল দ্বীপ। চারদিক সমুদ্রে ঘেরা এই দ্বীপের বাসিন্দাদের ‘সেন্টিনেলিজ’ নামে ডাকা হয়। তবে এই দ্বীপের ভিতরে কী রয়েছে, গোটা পৃথিবীর কাছে তা আজও অজানা। কারণ তথাকথিত সভ্য সমাজের থেকে নিজেদের বরাবর সরিয়ে রেখেছেন তাঁরা। এমনকী বাইরের মানুষকে এই দ্বীপের মধ্যে ঢুকতে দেওয়া হয় না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, নর্থ সেন্টিনেল দ্বীপে থাকে সম্ভবত বিশ্বের শেষ উপজাতি সম্প্রদায়ের মানুষ। যাদের উপরে এতটুকু ছাপ ফেলতে পারেনি আধুনিক সভ্যতা। সেন্টিনেলিজ উপজাতিদের জীবনযাত্রা ঠিক কীরকম তা কারও জানা নেই। কারণ তারা নিজেদের রাজ্যে বাইরের জগতের নাক গলানো একেবারেই পছন্দ করে না। এখনও পর্যন্ত সেন্টিনেল দ্বীপের জনসংখ্যার কোনও সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে ধারণা করা হয়, সেখানকার জনসংখ্যা ৪০০ জনের কাছাকাছি। হাজার হাজার বছর ধরে সেন্টিনেলিজদের বসবাস এই দ্বীপে। এখানে রয়েছে ঘন সবুজ বনভূমি, বাসিন্দাদের জন্য ছোট ছোট কুঁড়েঘর। এদের পেশা মূলত শিকার করা। মৃত পশুপাখির মাংস ও ফলমূল তাদের প্রধান খাবার। অদ্ভুত ব্যাপার হল তারা আগুনের ব্যবহার জানে না, চাষাবাদ করতেও শেখেনি। বস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে গাছের ছাল-বাকল এবং পশুর চামড়া। গবেষকদের ধারণা, হাজার হাজার বছর আগে সেন্টিনেলিজরা আফ্রিকা থেকে এসেছিল এই দ্বীপে।
তাদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা করা হয়ে আসছে। ১৮৮০ সালে ব্রিটিশ নৃতত্ত্ববিদ এম ভি পোর্টম্যান একটি দল নিয়ে নর্থ সেন্টিনেল দ্বীপে গিয়ে উপজাতিদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করেন। দলটি দ্বীপের দু’জন বয়স্ক মানুষসহ চারজন শিশুকে নিয়ে আসে পরীক্ষা করার জন্য। তাদের নতুন পোশাক ও খাবার দেওয়া হয়, যত্ন করা হয়। কিন্তু তারা আমাদের সমাজে মানিয়ে নিতে পারেনি। কিছুদিন পরেই অজানা রোগে আক্রান্ত হয়ে সবাই মারা যায়। এই ঘটনার পর সভ্য সমাজের মানুষদের প্রতি সেন্টিনেলিজরা আরও উগ্র ও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। পরবর্তীতে ভারত সরকারও দ্বীপে লোক পাঠিয়ে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা করে। কিন্তু লাভের লাভ কিছুই হয়নি। কারণ এই চেষ্টার পরও ওই উপজাতিরা আধুনিক মানুষকে তাঁদের রাজ্যে প্রবেশের অনুমতি দেয়নি। বারবারই তাঁদের আক্রমণের শিকার হতে হয়েছে আধুনিক মানুষকে। মৃত্যুও হয়েছে অনেকের। এসব ঘটনার পর তাঁদের বিরক্ত না করার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় সরকার। ওই দ্বীপ এবং তার চারপাশে ৩ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত সীমানা নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়।