শেয়ার প্রভৃতি ক্ষেত্র থেকে অর্থাগমের সম্ভাবনা। সন্তানের কর্ম প্রাপ্তির সুখবর পেতে পারেন। কর্মক্ষেত্রে জটিলতা কিছুটা ... বিশদ
বিশেষজ্ঞদের মতে, আধুনিক জীবনযাপনে স্ট্রেস, সারাদিন এক জায়গায় বসে কাজ, সিঁড়ির চেয়ে লিফটের ব্যবহার বেশি, কায়িক শ্রম কম, জাঙ্ক ফুড খাওয়া ইত্যাদি নানা কারণে এই ধরনের ব্যথা বাড়ে। তাছাড়া এখন অনেকেই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন না। ফলে শরীরের যাবতীয় ওজন গিয়ে চাপ দেয় হাঁটু ও কোমরে। জুতো ও ওয়ার্কিং পশ্চার ঠিক না হলেও এমন ব্যথা বাড়ে। মাত্রাছাড়া ধূমপান করলেও এই ধরনের সমস্যা হতে পারে। ব্যথার সবচেয়ে বড় কারণ লাইফস্টাইলের জটিলতা। তাই হাঁটু, কোমর ও পিঠের ব্যথা থেকে স্বস্তি পেতে বদল আনুন নিজের দিনযাপনে। কী কী করবেন, আর কী কী বাদ দিতে হবে রুটিন থেকে? রইল বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ।
পদ্ধতিতে জোর: অফিসের কাজ যদি বসে বা দাঁড়িয়ে হয়, তাহলে সেই অনুযায়ী নিজের কাজের পদ্ধতি বাছতে হবে। রাতারাতি অফিস বদল কখনওই সম্ভব নয়। তাই চেষ্টা করুন দৈহিক গঠন ঠিক রাখার। যখন বসে কাজ করছেন, তখন চেয়ারের হেলান দেওয়ার জায়গায় কোমরের কাছে যেন ফাঁক না থাকে। যদি ফাঁক থাকে তাহলে চেয়ার বদল করুন কিংবা কোমরের কাছে কুশন ব্যবহার করুন। কোমরকে সাপোর্ট দিতে হবে। চেয়ারে হাতল থাকাটা অবশ্যই প্রয়োজনীয়। দীর্ঘক্ষণ কম্পিউটার বা ল্যাপটপে বসে কাজ হলে মেশিনের মনিটরের আপার বর্ডার যেন চোখের সঙ্গে একই সরলরেখায় থাকে। ঘাড় উঁচু করে বা ঘাড় গুঁজে কাজ করা যাবে না। চেয়ার ও টেবিলের দূরত্ব যতটা সম্ভব কমিয়ে আনুন। শিরদাঁড়া যাতে মোটামুটি সোজা থাকে, সেই দিকে নজর রাখুন।
একটানা বসে বা এক জায়গায় দাঁড়িয়ে কাজ হলে প্রতি আধ ঘণ্টা অন্তর অফিসের মধ্যেই কয়েক কদম হেঁটে আসুন। সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করে আসুন। কোমর, পায়ের স্ট্রেচিং করুন। এতে পায়ের পেশির নাড়াচাড়া হয়। ব্যথাবেদনার ভয় কমে।
শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ: হাঁটু ব্যথা ও কোমরে বেদনার অন্যতম কারণ অতিরিক্ত ওজন। অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মেনে ডায়েট, শরীরচর্চা করুন। ওজন বাড়তে দেওয়া যাবে না কিছুতেই। শরীরচর্চায় জোর দিন। প্রতিদিন নিয়ম করে অন্তত ৪০ মিনিট হাঁটাহাঁটি, সাইকেল চালানো, সাঁতার, ব্যায়ামের মধ্যে যে কোনও একটি রুটিনে রাখুন। ব্যথার জন্য নির্দিষ্ট কিছু যোগাসন হয়। প্রশিক্ষকের নির্দেশ অনুসারে সেগুলো অভ্যাস করুন।
লিফট ব্যবহারে রাশ: অফিসে বা ফ্ল্যাটে ওঠানামার সময় লিফটের বদলে সিঁড়ি ব্যবহার করুন। যাঁদের অনেক উঁচু তলায় উঠতে হয় তাঁরা অন্তত চার তলা অবধি হেঁটে বাকিটা লিফট ব্যবহার করতে পারেন।
জুতোয় নজর: জুতোর সঙ্গে কোমর-হাঁটুর ব্যাথার যোগ রয়েছে। তাই জুতো কেনার সময় সতর্ক হোন। ভালো মানের ঠিক মাপের জুতো কিনুন। নরম কুশনযুক্ত সোল কিনুন। আর তারপরেও ব্যথা না কমলে প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
ডায়েট: ব্যথা-বেদনার জন্য খাবারের পাতেও বদল আনতে হবে। খাবারের পাতে রাখুন প্রচুর শাক-সব্জি ও ফল। আয়রন ও ক্যালশিয়াম বেশি আছে, এমন খাবার যেমন: দুধ সহ্য করতে পারলে রোজ খান টোনড মিল্ক। তাছাড়া পনির, ছানা রাখুন পাতে। ব্রকোলি, গাজর, অঙ্কুরিত ছোলা, সবেদা, বেদানা, বিনস বেশি পরিমাণে খান। ডিম খান নিয়মিত। মোট কথা এমন খাবার রোজ খান যা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি ক্যালশিয়ামের চাহিদাও মেটাবে।
গরম জলে স্নান: ব্যথা-বেদনায় ভুগলে সারা বছর ঈষৎ উষ্ণ জলে স্নান করুন। ঠান্ডা জলে হাড়ের কষ্ট বাড়ে। ব্যথা বাড়লে কখনওসখনও শুকনো সেঁকও নিতে পারেন। হটব্যাগ এক্ষেত্রে খুব কাজে আসে। ঠান্ডা লাগার প্রবণতা থাকলেও সতর্ক হবেন। স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায় ব্যথার কামড় বাড়ে। ভিটামিন ডি-র খোঁজ: ভিটামিন ডি-র সবচেয়ে ভালো উৎস সূর্যের নরম আলো। অস্থিসন্ধির বেদনা কমাতে ও হাড়ের জোর বাড়াতে শীতে প্রতিদিন সকাল ৭টা-৮টার মধ্যে বা বিকেল ৩টে-৪টের মধ্যে সূর্যের আলোয় থাকুন। খোলা জায়গা যেমন: ছাদ, বাগান, মাঠ বা পার্কে বসে গায়ে সূর্যের আলো লাগাতে পারেন, আবার বারান্দায় বসেও গায়ে আলো লাগানো যায়। গরমকাল হলে এমন সময় রোদে বসুন, যখন রোদের তেজ কম। ভিটামিন ডি পেলে হাড়ের জোরও কিছুটা বাড়বে।