বিদ্যার্থীরা মাঝে মধ্যে মানসিক উদ্বেগের জন্য শিক্ষায় অমনোযোগী হয়ে পড়বে। কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে নানা সুযোগ আসবে। ... বিশদ
এ না হয় গেল দলের অন্দরের চ্যালেঞ্জ... যোগী প্রকাশ্যে, অন্তরালেও কয়েকজন আছেন... সুযোগের অপেক্ষায়... প্রতিপত্তির বেলুন থেকে গ্যাস একটু একটু বাইরে আসবে, আর ধীরে ধীরে বেরবে দাঁত নখ। মোদিজি সেটা জানেন। তাই মরিয়া তিনি। যেখানে যা লিকেজ আছে, প্রাণপণে এম সিল মারছেন।
অপেক্ষায় আছেন আরও একজন। তিনি অবশ্য দলের বাইরে। প্রতিপত্তির তিনি ধার ধারেন না, মোদিজির জনপ্রিয়তাই টার্গেট তাঁর। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একের পর এক বিধানসভা ভোটে বিজেপি বেআব্রু হয়ে যাওয়ার পর বাংলা ছিল শেষ সুযোগ। এই পরীক্ষায় পাশ করলে ৩০ নম্বর হাতে নিয়ে উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনে নামতে পারতেন
নরেন্দ্র মোদি। সেই লক্ষ্যে সব অস্ত্র ব্যবহার করে ফেলেছিলেন তিনি। কাজ হয়নি। কারণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোনও একটি স্ট্র্যাটেজি আঁকড়ে ধরে ভোটের ময়দানে নামেননি। সময় এবং পরিস্থিতি পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বদলেছে তাঁর কৌশল। একদিকে সমানে চলেছে দুয়ারে সরকার, স্বাস্থ্যসাথী... অন্যদিকে প্রচারে এসেছে বিজেপির মেরুকরণ, বহিরাগত, বাঙালি অস্মিতা। আর ওস্তাদের শেষ মার... নির্বাচন কমিশনের আট দফা সিদ্ধান্ত। যা বাড়িয়েছে সংক্রমণ। ফল? বিজেপি ৮০ পেরয়নি।
কাজেই এখন জোড়া ফলা মোদির সামনে... ২২ সালে যোগী, আর তিন বছর পরের পরীক্ষার জন্যে প্রস্তুতি শুরু করে দেওয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে হ্যাঁ, তৃণমূল কিন্তু এখনও বাংলা নির্ভর পার্টি। বাইরের রাজ্যের কিছু আসনে প্রার্থী দিলেও খুব একটা দাঁত ফোটাতে পারছে না। এই একই অবস্থা বাকি আঞ্চলিক দলগুলির। অর্থাৎ, নিজ নিজ রাজ্যে বাঘ হলেও জাতীয় রাজনীতির মঞ্চে এই দলগুলি সীমাবদ্ধ। এক্ষেত্রে একটা যোগসূত্র প্রয়োজন, যা দেশের সব আঞ্চলিক শক্তিকে নিঃশব্দে বেঁধে ফেলবে। সেই যোগসূত্র নিজে এই রাজনৈতিক বিক্রিয়ায় অংশ নেবে কি না, পরের কথা। কিন্তু তাকে অনুঘটকের কাজটা করতেই হবে। হতে হবে মহাজোটের চালিকাশক্তি। এই কাজটা কংগ্রেস ছাড়া আর কারও নয়।
প্রশ্ন উঠতেই পারে, এই মুহূর্তে দেশে কংগ্রেসের রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্যতা কি আদৌ আছে? সংখ্যার দিক থেকে অবশ্যই নেই। মোদি-যুগ শুরুর সময় থেকেই কংগ্রেস দুধ-ভাতের পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। সোনিয়া গান্ধী অসুস্থ এবং চেয়ারপার্সন হওয়া সত্ত্বেও দল চালাতে অপারগ। রাহুল মাঝে মাঝে যাত্রার বিবেকের মতো উদয় হন, আর আড়াল থেকে কেন্দ্রীয় সরকারকে খোঁচা দিয়ে হারিয়ে যান। তারপরও দলের নাম কংগ্রেস। শতাব্দী প্রাচীন... এবং অতীত সাক্ষী, বারবার তারা হারিয়ে গিয়েছে, আবার ফিরেও এসেছে বারে বারে। শরিক নিয়ে ঘর করা যে কী কঠিন বিষয়বস্তু, তা জানেন সোনিয়া গান্ধী। এই হ্যাপা তিনি আগে সামলেছেন। ইউপিএ’র প্রথম এবং দ্বিতীয় ইনিংসে। ২০০৪ সালে যখন ইউপিএ ক্ষমতায় আসে, তখন কংগ্রেসের ঝুলিতে ছিল মাত্র ১৪৫টি আসন। আর শরিক হিসেবে কাদের সামাল দিতে হয়েছে? একদিকে এলটিটিএ’র আন্দোলনে প্রচ্ছন্ন সমর্থন পোষণ করা ডিএমকে... অন্যদিকে, বামফ্রন্ট। রাজীব গান্ধীর মৃত্যুর কারণ তামিল জঙ্গি, আর তাকেই সমর্থন? তা সত্ত্বেও কিন্তু ইউপিএ সরকারের স্বার্থে সোনিয়া ডিএমকের হাত ধরেছিলেন। উল্টোদিকে বামফ্রন্ট... যারা বারবার এই সরকারকে ব্ল্যাকমেল করে গিয়েছে। তাও পিছু হটেনি কংগ্রেস। পিছু হটেননি সোনিয়া। কারণ একটাই, বিজেপিকে সরাতে হবে। তখন তো গেরুয়া শিবিরের মুখ ছিলেন অটলবিহারী বাজপেয়ি। যাঁর প্রশাসনিক দক্ষতা এবং নিরপেক্ষতা ছিল প্রশ্নাতীত। তাও সব দল একজোট হয়েছিল। সাম্প্রদায়িকতার বীজ যাতে গভীরে না যায়, সেই লক্ষ্যে। আর এখন তো জল মাথার উপরে উঠে গিয়েছে। তারপরও কি সব অবিজেপি দল একজোট হবে না?
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কিন্তু গত কয়েক বছরে একটা কাজ সাফল্যের সঙ্গে করতে পেরেছেন... কার্যত বিরোধী শূন্য জাতীয় রাজনীতি। একা কংগ্রেস বা একাকভাবে কোনও আঞ্চলিক দল এই কাঠামো ভাঙতে পারবে না। এর জন্যে দরকার মহাজোট। অবিজেপি অবশ্যই, কিন্তু অকংগ্রেসি নয়। শারদ পাওয়ার সেটা বিলক্ষণ জানেন... আর তাই আলোচনায় সে কথা বলেও দিয়েছেন। তিনি পোড় খাওয়া রাজনীতিক। জানেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
এই মুহূর্তে মোদি বিরোধী প্রধান মুখ হতে পারেন, কিন্তু তাঁর নামে দেশজুড়ে মানুষ ভোট দেবে না। কংগ্রেস সহ সব অবিজেপি দল একজোট হলে দেশবাসী ভাববে, এইবার এদের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। তখন ঝুলিতে আসবে ভোট। নিজেদের মধ্যে ঠান্ডা-গরম লড়াই আসলে তিন বছর পরের ধর্মযুদ্ধের আয়োজনেই জল ঢালবে। অথচ, আজও অখিলেশ যাদব বলছেন কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়ে লড়বেন না... মায়াবতী কাউকে ডাক দেবেন না, কিন্তু একলা চলবেন। শারদ পাওয়ার মেয়ে সুপ্রিয়া সুলেকে মহারাষ্ট্রের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী করার চেষ্টা চালাবেন... তাতে গোঁসা হবে অজিত পাওয়ারের।