সৎসঙ্গ ও আধ্যাত্মিক ধর্মীয় গ্রন্থ পাঠে মানসিক তৃপ্তি। কাজকর্মের ক্ষেত্রে নতুন কোনও যোগাযোগ থেকে উপকৃত ... বিশদ
বৃষ্টি ধরতেই সে এদিক ওদিক তাকাতে লাগল। উদ্দেশ্য, দেখা, যে পথে লোকজন বেরোয় কি না। কিন্তু না, ভগবান বৃষ্টি ধরালেও লোকদের মনে সুবুদ্ধির উদয় করালেন না। দু’চার জন ছাড়া বিশেষ কাউকেই পথে চলতে দেখা গেলো না। অগত্যা চোরটী কখনো বৃষ্টি, কখনো খরার মধ্যেই এদিক ওদিক ঘুরতে লাগল, সুযোগের অপেক্ষায়। কিন্তু হায়! সকাল গিয়ে দুপুর হ’ল, দুপুর গিয়ে বিকেল গড়াল, ক্রমে সন্ধ্যাও হয়ে এল, কিন্তু চুরি করার সুযোগ তার আর মিলল না। সারা দিন পথে পথে ঘোরাই তার সার হ’ল। ক্রমে সন্ধ্যা ঘনিয়ে এল। দিনমান গেছে অনাহারে অবিশ্রামে। তাই চোরটি ঘরে ফেরার উদ্দেশ্যে ঘরের পথে পা বাড়াল। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গেই আবার ঘনিয়ে উঠল দুর্যোগ। তীব্র বেগে বাতাস বইতে আরম্ভ করল, মুশল ধারায় নামল বৃষ্টি, আর আকাশ চীরে বিদ্যুৎ গর্জাতে লাগল, কানের পর্দা ফাটিয়ে দিয়ে কড়্কড়্ করে বাজ পড়তে লাগল। এ অবস্থায় কি আর বাইরে থাকা যায়। তাই চোরটী আশ্রয় খুঁজতে লাগল। এদিক ওদিক তাকাতেই সে দেখতে পেল অদূরেই একটি মন্দির। নিরুপায় হয়ে চোরটী দৌড়ে মন্দিরে গিয়ে আশ্রয় নিল।
তখন অন্ধকার বেশ ঘনিয়ে গেছে। রাতের অন্ধকারও। আর চতুর্দিকে সমানে চলছে ঘনঘোর দুর্যোগ।
লোকটীর সামনে আর কোন উপায়ই রইল না বাড়ী ফেরার। তাই মন্দিরেই তাকে রাত কাটাতে হবে।
কিন্তু মন্দিরের মেঝে তখন জলে জলময় হয়ে গেছে, বৃষ্টির ছাঁটে। চোরটী একটি কাপড় দিয়ে সব জল মুছে মুছে মন্দিরটি শুকাতে লাগল তার রাত্রিবাসের উদ্দেশ্যে। মন্দির মুছে ক্লান্ত চোরটী শুয়ে পড়ল। সারাদিনের ক্ষুধা, তৃষ্ণা ও ক্লান্তিতে সে ঘুমিয়ে পড়ল। শোবার আগে ঠাকুরের দিকে পা না পড়ে তা দেখতে গিয়ে সে দেখল মন্দিরটি বিষ্ণু-মন্দির।
লোকটী ঘুমিয়ে আছে। তখন মধ্যরাত্রি। হঠাৎ আকাশ চৌচির করে ফাটিয়ে দিয়ে নেমে এল বজ্র। লোকটী জাগতে গিয়েও জাগতে পারল না। ঘুমের মধ্যেই তার মৃত্যু ঘটল।