সৎসঙ্গ ও আধ্যাত্মিক ধর্মীয় গ্রন্থ পাঠে মানসিক তৃপ্তি। কাজকর্মের ক্ষেত্রে নতুন কোনও যোগাযোগ থেকে উপকৃত ... বিশদ
স্মৃতি সাধনার মত নিদ্রারও সাধনা করা হয়। অভাবপ্রত্যয়ের অবলম্বন করে নিদ্রা আগমন করা হল এই পর্যায়ভুক্ত। নিদ্রা কিসের দেহের না মনের? সমাধি এক অর্থে জাগ্রত নিদ্রা। নিদ্রার দুটি স্তর—স্বপ্ন আর সুষুপ্তি। বলা হয় স্বপ্ন আর স্মৃতি একই প্রকার। জাগ্রত অবস্থার অনুভবগুলিকে নিদ্রাবস্থায় অন্তরে অনুভব করা হল স্বপ্ন জাগ্রতের স্মৃতিকে পরিশুদ্ধ করলে স্বপ্ন বন্ধ হয়ে যাবে। নিদ্রা নিঃস্বপ্ন হয়ে যাবে। কিন্তু এর উপরন্তু বিজ্ঞানভূমির স্বপ্ন আসতে পারে। মনোভূমির স্বপ্ন হল বাইরের অনুভবগুলিকে স্বপ্নে দেখা। বিজ্ঞানভূমি যখন জাগ্রত হয় তখন স্বপ্ন অন্যরকম রূপ ধারণ করে। যেমন কি নিদ্রায় জপ ও ইষ্টদর্শন হওয়া ইত্যাদি। কিন্তু ব্যক্তির সাধনা চলে স্বপ্নরাজ্যে। বিজ্ঞানময় বা ভাবময় স্বপ্ন অথবা সুষুপ্তিতে যদি জাগ্রত থাকা যায় তবে নিদ্রা যোগনিদ্রা হয়ে ওঠে। নিদ্রাও তখন অক্লিষ্ট হয়ে যায়। সাত্ত্বিক নিদ্রা হল নিঃস্বপ্ন, রাজসিক নিদ্রা স্বপ্নবহুল আর তামসিক নিদ্রায় প্রমাদ, ক্লান্তি, জড়তার প্রাধান্য থাকে।
“অভাব-প্রত্যয়ালম্বনা বৃত্তির্নিদ্রা।”—যে বৃত্তি অভাব, শূন্যভাবের উপর আধারিত তাকেই নিদ্রা বলে।
“শব্দজ্ঞানানুপাতী বস্তুশূন্যো বিকল্প।”—যেখানে কেবল শব্দজ্ঞান আছে, বস্তুজ্ঞানের ধারণা হয়না, বাস্তব অনুভব হয় না, কেবল শব্দজাল রয়ে যায়, তাকে বিকল্প বলে। যতক্ষণ পর্য্যন্ত সত্য অনুভব না হয়, ততক্ষণ পর্য্যন্ত আত্মা ইত্যাদি বিষয়ে যে বিবাদ করা হয় তা হল বিকল্পজনিত। এইরকম মানসিক তর্ক-বিতর্ক হল যোগের পথে এক বড় বিঘ্ন। এই কারণেই সাধনার সময়ে বহু গ্রন্থের পরিত্যাগ করবার উপদেশ দেওয়া হয়। এই বিকল্পের অন্ত ঘটানো দরকার। এর সাধনা হল বেদান্তের শ্রবণ, মনন আর নিদিধ্যাসনের। “আত্মাবারে দ্রষ্টব্যঃ শাতব্যো মন্তব্যো।”