সৎসঙ্গ ও আধ্যাত্মিক ধর্মীয় গ্রন্থ পাঠে মানসিক তৃপ্তি। কাজকর্মের ক্ষেত্রে নতুন কোনও যোগাযোগ থেকে উপকৃত ... বিশদ
অভিভাবকদের মনে ব্রহ্মচর্য্যের প্রয়োজনীয়তা বোধ জাগে নাই, শিক্ষকেরা দূর হইতে দুঃসাহস করিবেন কেন? কিন্তু এজন্য কি অভিভাবক, কি শিক্ষক, কাহাকেও তোমরা দোষ দিও না। দোষ প্রকৃত প্রস্তাবে আমাদের, যাঁহারা সমাজের মধ্যে ছোট-বড়-মাঝারী গুরু হইয়া সমাজের অধিকাংশ মানবকে ধর্ম্মাধর্ম্ম ও কতর্ব্যাকর্ত্তব্যের জ্ঞান বিতরণের ভান করিতেছি। অভিভাবক ও শিক্ষক-সম্প্রদায়ের মধ্যে সর্ব্বজনীন-ভাবে ব্রহ্মচর্য্য-পালনের উপকারিতা ও উপযোগিতা বুঝাইয়া দেওয়া আমাদেরই প্রথম কর্ত্তব্য ছিল। শিক্ষকেরা নিজেরা অন্ধতা বশতঃ, অজ্ঞতা বশতঃ, চিন্তার দৈন্য বশতঃ, যে বিষয় বুঝিবার কোনও চেষ্টাই করিতেছেন না, সেই বিষয় সকলকে বুঝাইবার দায়িত্ব যে আমাদের স্কন্ধে ন্যস্ত হইয়া রহিয়াছে। মেধাবী পুত্র পড়ায় খারাপ হইয়া গেলে পিতা-মাতারা পাড়ার অন্য ছেলেকে দোষ দেন, নিজের বাঁশের ঝাড়ে যে ঘুণ ধরিয়াছে, তাহা একবার অনুমান করিয়াও দেখিতে চাহেন না।
ইহাঁদের সতর্কতার অভাব তোমাদের অনেকের পদস্খলনের জন্য দায়ী। কিন্তু কে কিসের জন্য বেশী দায়ী আর কম দায়ী, সেই বিচারের মধ্যে প্রবেশ না করিয়া তোমরা প্রতিজনে নিজ নিজ আত্ম-সম্মানবোধের অভাবকেই দায়ী কর। যাহার আত্ম-সম্মান-জ্ঞান আছে, সে কখনও পাপ-কার্য্যে আসক্ত হয় না। ভুল সে কখনও হয়তো করিতে পারে, কিন্তু তাহার আত্ম-মর্য্যাদা-বোধ তাহাকে দিয়া দ্রুত আত্মসংশোধন করাইয়া লয়। তোমাদের লক্ষ্য হউক নিখিল মানব-জাতির দুঃখ বিদূরণ। তোমাদিগকে কখন স্বদেশ-সাধনার বিপ্লব-মন্ত্রে দীক্ষা নেই, তখনও আমার লক্ষ্য আসমুদ্র-হিমাচল-সীমিত ক্ষুদ্র ভারতবর্ষ-টুকুই নহে, পরন্তু সমগ্র জগৎ। একদিন এই পৃথিবীর মত আরও কত কোটি কোটি পৃথিবী বৈজ্ঞানিকদের জ্ঞানের পরিধিতে আসিবে, তাহাদের সকল অধিবাসীদের লইয়া যে বিরাট বিশাল বিপুলায়তন মনুষ্য-জাতি, তাহাদেরই সকলের দুঃখ-মুক্তি-কামনাকে পুরোভাগে রাখিয়া তোমাদের বলিতেছি,— ‘‘তোমার ব্রহ্মচারী হও, বীর্য্যশালী হও, বলীয়ান্ হও।’’