সৎসঙ্গ ও আধ্যাত্মিক ধর্মীয় গ্রন্থ পাঠে মানসিক তৃপ্তি। কাজকর্মের ক্ষেত্রে নতুন কোনও যোগাযোগ থেকে উপকৃত ... বিশদ
এই সম্পর্কে স্কন্দ-পুরাণে একটি ব্যাধের কাহিনী বর্ণিত হয়েছে, যিনি নারদ মুনির সংস্পর্শে আসার ফলে মহাভাগবতে পরিণত হয়েছিলেন। সেই ব্যাধ যখন শুদ্ধ ভক্তে পরিণত হলেন, তখন তিনি একটি পিপীলিকাকে পর্যন্ত মারতে চাইতেন না। নারদ মুনির সখা পর্বত মুনি ভগবদ্ভক্তির প্রভাবে সেই ব্যাধের এই আশ্চর্যজনক পরিবর্তন দেখে মন্তব্য করেছিলেন, “হে ব্যাধ! একটি পিপীলিকাকে পর্যন্ত হত্যা করতে তোমার এই অনিচ্ছা আশ্চর্যের বিষয় নয়, কেন না, যে মানুষের হৃদয়ে ভগবদ্ভক্তির উদয় হয়েছে, তাঁর মধ্যে সমস্ত সদ্গুণাবলী আপনা থেকেই প্রকাশিত হয়। ভক্ত কখনও কাউকে কোন রকম কষ্ট দেন না।”
শ্রীল রূপ গোস্বামী এখানে বলেছেন যে, অন্তঃকরণ ও কার্যকলাপের পবিত্রতা, শম, দম, আদি সমস্ত সদ্গুণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভক্তিপরায়ণ পুরুষে প্রকাশিত হয়। শ্রীল রূপ গোস্বামী ভক্তির নয়টি কৃত্য বা অঙ্গের কথা উল্লেখ করেছেন। সেগুলি হচ্ছে শ্রবণ, কীর্তন, স্মরণ, পাদসেবন, অর্চন, বন্দন, দাস্য, সখ্য ও আত্মনিবেদন। ভক্তির এই নয়টি সাধন-অঙ্গের প্রতিটি এতই শক্তিশালী যে, যদি কেউ এর একটিরও অনুশীলন করেন, তবে তিনি অবশ্যই সিদ্ধিলাভ করবেন। যেমন, কেউ যদি ভগবানের কথা শ্রবণের প্রতি অনুরক্ত হন অথবা কেউ যদি ভগবানের নাম কীর্তনের প্রতি অনুরক্ত হন, তা হলে উভয়েই ভগবদ্ভক্তির চরম সিদ্ধি লাভ করবেন। সেই কথা শ্রীচৈতন্য-চরিতামৃতে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। কেউ ভক্তি সাধনের একটি, দুটি, তিনটি অথবা সব কয়টি অঙ্গেরই অনুশীলন করতে পারেন এবং পরিণামে ভগবদ্ভক্তির চরম লক্ষ্য শুদ্ধ ভগবৎ-প্রেম লাভ করতে পারেন।