সৎসঙ্গ ও আধ্যাত্মিক ধর্মীয় গ্রন্থ পাঠে মানসিক তৃপ্তি। কাজকর্মের ক্ষেত্রে নতুন কোনও যোগাযোগ থেকে উপকৃত ... বিশদ
আমাদের সব সময় মনে রাখতে হবে যে, সম্পূর্ণভাবে জড় কলুষ থেকে মুক্ত না হলে, এইভাবে ব্রজবাসীদের পদাঙ্ক অনুসরণ করার আকাঙ্ক্ষা লাভ করা যায় না। বৈধীভক্তি অনুশীলনের একটি স্তর হচ্ছে অনর্থ-নিবৃত্তি, অর্থাৎ সেই স্তরে সব রকমের জড়-জাগতিক অনর্থগুলি দূর হয়ে যায়। কখনও কখনও দেখা যায় কেউ কেউ ভগবদ্ভক্তির অনুকরণ করছে, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তারা অনর্থ থেকে মুক্ত হয় না। অনেক সময় দেখা যায় যে, এই সমস্ত তথাকথিত ভক্তরা নন্দ মহারাজ, যশোদা মা অথবা ব্রজগোপিকাদের অনুগামী বলে নিজেদের পরিচয় দেন। আবার সেই সঙ্গে দেখা যায় যে, তারা অবৈধ স্ত্রীসঙ্গ করার প্রতি অত্যন্ত আসক্ত। ভগবৎ-প্রেমের এই অনুকরণের কোন মূল্য নেই। কেউ যখন স্বতঃস্ফূর্তভাবে ব্রজগোপিকাদের ভগবৎ-প্রেমের প্রতি আকৃষ্ট হন, তখন দেখা যাবে যে, তাঁর চরিত্রে কোন রকম জড়-জাগতিক কলুষ নেই। তাই প্রথমে সকলেরই উচিত শ্রীগুরুদেবের নির্দেশ ও শাস্ত্রের নির্দেশ অনুসারে বৈধীভক্তি অনুশীলন করা। সব রকম জড় কলুষ থেকে সম্পূর্ণরূপে মুক্ত হওয়ার পরই কেবল বৃন্দাবনের ভগবৎ-পার্ষদদের পদাঙ্ক অনুসরণ করা সম্ভব।
শ্রীল রূপ গোস্বামী বলেছেন, “কেউ যখন সম্পূর্ণভাবে জড় জগতের কলুষ থেকে মুক্ত হন, তিনি তখন নিরন্তর বৃন্দাবনে শ্রীকৃষ্ণের কোন নিত্য পার্ষদের কথা স্মরণ করে তাঁর মতো কৃষ্ণভক্তি পরায়ণ হতে পারেন। এই ধরনের প্রবণতা প্রকাশিত হলে, নিরন্তর মানসেও বৃন্দাবনে বাস করা যায়।” অর্থাৎ, যদি সম্ভব হয় তা হলে ব্রজভূমি বৃন্দাবনে গিয়ে সেই চিন্ময় ব্রজধামে ভগবানের নিত্য পার্ষদদের অনুগামী হয়ে ভগবানের সেবায় যুক্ত হওয়া উচিত। কিন্তু তা যদি সম্ভব না হয়, তা হলে মানসে অর্থাৎ, সেই অবস্থায় অধিষ্ঠিত হওয়ার ধ্যান করে নিরন্তর ভগবানের সেবায় যুক্ত হওয়া যেতে পারে। যেখানেই থাকা হোক না কেন, সর্বক্ষণ ব্রজধামের দিব্য জীবনের কথা চিন্তা করা উচিত এবং কোন বিশেষ ভগবৎ-পার্ষদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে ভগবানের সেবায় যুক্ত হওয়ার ধ্যান করা উচিত। যে ভক্ত কৃষ্ণভাবনামৃতে যথার্থই উন্নতি লাভ করেছেন, যিনি নিরন্তর ভগবানের সেবায় যুক্ত হয়েছেন, তিনি পূর্ণরূপে সিদ্ধিলাভ করলেও নিজেকে প্রকাশ করা উচিত নয়। অর্থাৎ, যতক্ষণ পর্যন্ত তাঁর প্রাকৃত দেহ থাকে, ততক্ষণ তিনি নিরন্তর কনিষ্ঠ ভক্তের মতো আচরণ করবেন।