বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
গোড়া থেকেই মোদি সরকার কর্পোরেট স্বার্থবাহী। সাধারণ মানুষ বিশেষত গরিব মানুষের কথা তারা ভাবে না। সরকারের প্রতিটি কার্যকলাপে তার একাধিক প্রমাণ মিলেছে। করোনাকালেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। শিল্পপতি বন্ধুদের খুশি করতে ঢাকঢোল পিটিয়ে ঋণসর্বস্ব প্যাকেজের টোপ দিয়েছিল কেন্দ্র। অর্থনীতির হাল ফেরাতে ওই প্যাকেজ যে ব্যর্থ হয়েছে তা এক বছরের মধ্যেই স্পষ্ট হয়ে গেছে। আয়কর আদায়ে লক্ষ কোটি টাকা ঘাটতির ধাক্কা এবার সরকারকে সামাল দিতে হবে। গোড়াতেই গলদ থাকায় প্যাকেজ ফ্লপ করেছে। শিল্পপতিদের তুষ্ট করার বাসনায় সরকার একবারও ভেবে দেখেনি সাধারণ মানুষের হাতে যদি টাকাই না থাকে তাহলে তাঁরা উৎপাদিত সামগ্রী কিনবেন কীভাবে? স্বাভাবিক কারণেই পণ্য যদি বিক্রিই না হয় শিল্প সংস্থার পক্ষে উৎপাদন কমিয়ে দেওয়া ছাড়া উপায় নেই। তাহলে শিল্প সংস্থারই বা ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন পড়বে কেন? সাধারণ সহজ বুদ্ধিতে যে সত্যিটা ধরা পড়ে তা সরকারের উর্বর মস্তিষ্ক সম্পন্ন নীতিনির্ধারকদের মাথায় যে আসেনি তা ভাবাটা মুর্খামি। আসলে কোটি কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণার বিষয়টিও ছিল মোদি সরকারের একটি বড় চমক। সরকারের ব্যর্থতা ঢাকতে বারবার এই চমক দেখিয়েই সরকার কিস্তিমাত করতে চেয়েছে। এবং বারবারই হোঁচট খেয়েছে।
এটা এখন স্পষ্ট হয়েছে মোদির প্যাকেজের চমকপ্রদ ঘোষণায় অর্থনীতির চাকা ঘোরেনি। কারণও খুব সহজবোধ্য। দেশ থেকে লকডাউন উঠে যাওয়ার পরও দফায় দফায় করোনা সংক্রমণে নাজেহাল মানুষ। গত বছরের মাঝামাঝিতে দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়ে দেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দিয়েছে করোনা। তার ধাক্কা সামলে ওঠার আগেই কোনও কোনও রাজ্যে তৃতীয় ঢেউ এসে পড়েছে। তথ্য বলছে, করোনাকালে কোনও বড় বিনিয়োগ আসেনি। এই সময়েও কিছু কিছু শিল্প সংস্থার দরজায় তালা পড়েছে। ফলে বেকারের সংখ্যা বেড়েছে। এই সময় বাজার সচল রাখতে মানুষের হাতে অর্থ তুলে দেওয়া জরুরি ছিল। তা হয়নি বলেই চাহিদায় টান পড়েছে। চাহিদা বাড়েনি বলেই সম্ভবত উৎপাদন বাড়ানোর পথে হাঁটেনি বহু শিল্প সংস্থা। এই কারণেই সরকারের দেওয়া ঋণ তাঁদের অনেকের প্রয়োজনই পড়েনি। এরই পরিণতিতে আয়কর বাবদ রাজস্ব আদায় কমেছে সরকারের। সরকারের ভুল নীতির জন্যই এমন বিপর্যয় বলে মনে করছেন অনেকে। যদিও এজন্য কেন্দ্রের কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই। তারা ব্যস্ত বাছাই করা কয়েকজন শিল্পপতিকে বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দিতে। এরই মধ্যে আয়কর আদায়ে কিছুটা হলেও আশার আলো দেখাতে পেরেছে বাংলা। চলতি অর্থবর্ষে আয়কর আদায়ে তার আগের বছরের তুলনায় সামান্য ঘাটতি থাকলেও বাংলার অবস্থান উপরের দিকেই। এক্ষেত্রেও মোদির গুজরাত, যোগীর উত্তরপ্রদেশকে পিছনে ফেলে দিয়েছে বাংলা। যা অবশ্যই একটি দৃষ্টান্ত।