সব কর্মেই অর্থকড়ি উপার্জন বাড়বে। কর্মের পরিবেশে জটিলতা। মানসিক উত্তেজনা কমাতে চেষ্টা করুন। ... বিশদ
একটি হল—দু’পক্ষের ভিতরে মধ্যস্থতা করতে সম্প্রতি একটি নাগরিক কমিশন গঠিত হয়েছে। দি এডুকেশনিস্টস ফোরামের উদ্যোগে গত সোমবার আত্মপ্রকাশ করেছে সিটিজেন্স কমিশন অন হায়ার এডুকেশন ম্যানেজমেন্ট। এই কমিশন ইউজিসির বিভিন্ন রেগুলেশন, উচ্চশিক্ষা দপ্তরের আইন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিগুলি খতিয়ে দেখে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করবে। কমিশনের চেয়ারম্যান হয়েছেন ইউজিসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুখদেও থোরাট। দু’জন সদস্য জোস পি ভার্গিস এবং সুধাংশু ভূষণ। অধ্যাপক ভার্গিস সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট এবং সেন্ট্রাল
অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালের প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান (জুডিশিয়ারি)। আর ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব এডুকেশনাল প্ল্যানিং অ্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে (নিয়েপা) অধ্যাপক হিসেবে রয়েছেন মিঃ ভূষণ। সদস্য-সচিব করা হয়েছে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য শিবাজিপ্রতিম বসুকে। কমিশন প্রসঙ্গে এডুকেশনিস্টস ফোরামের আহ্বায়ক ওমপ্রকাশ মিশ্রের দাবি, একটি রাজ্য থেকে এই ধরনের সর্বভারতীয় কমিশন গঠনের উদ্যোগ এই প্রথম। সকলে জানেন, উচ্চশিক্ষায় অচলাবস্থার কারণ নিয়ে রাজ্যপাল এবং উচ্চশিক্ষা দপ্তরের ভিন্ন মত। এই কমিটি সেসবই নিরপেক্ষভাবে বিচার করবে। অনেক সময়ই অভিযোগ ওঠে, রাজ্য সরকার ইউজিসির নিয়ম মানে না। তাই, সেই দিকটি নিরপেক্ষভাবে দেখার জন্য এই কমিশনের শীর্ষপদে আনা হয়েছে ইউজিসিরই প্রাক্তন চেয়ারম্যানকে। ফোরামের ধারণা, রাজ্যপাল এবং আচার্য পদটি কোনোভাবে গুলিয়ে যাচ্ছে বলেই বাংলার উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে ইদানীং এত সমস্যা।
দ্বিতীয় আশার আলো দেখিয়েছে শীর্ষ আদালত। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, রাজ্যের ছ’টি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য এক সপ্তাহের মধ্যেই নিয়োগ করতে হবে রাজ্য সরকারের তালিকা মেনে। নির্দেশটি মেনেও নিয়েছেন আচার্য তথা রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের আইনজীবী জয়দীপ মজুমদার। এরপরও অবশ্য ২৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ বাকি থাকছে। সেক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের তালিকার অন্য নামগুলিও বিবেচনা করতে পারবেন রাজ্যপাল। সেই নির্দেশও এদিন দিয়েছে দুই বিচারপতির বেঞ্চ। তবে নাম নিয়ে এরপরও রাজভবনের আপত্তি থাকলে শীর্ষ আদালত একটি বিশেষ সার্চ কমিটি গড়ে দেবে। রাজ্যের ৩১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে টানাপোড়েন চলছে। রাজ্যের পাঠানো নাম আচার্যের পছন্দ হচ্ছে না বলেই অভিযোগ। সেই সংঘাত সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়ায়। মধ্যস্থতায় নামেন অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেঙ্কটরামানি। তিনি সম্প্রতি কলকাতায় এসে বিষয়টি নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে আলোচনা করেন। প্রয়োজনে ফের আসবেন বলেও তিনি কোর্টকে জানিয়েছেন। রাজ্যের আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভির অভিযোগ, রাজ্যের পাস করা উপাচার্য সংক্রান্ত বিলে রাজ্যপাল সই করছেন না বলেই যত সমস্যা। তখন আচার্যের আইনজীবী জানান, রাজ্যের তালিকা থেকেই কয়েকজন উপাচার্য নিযুক্ত হবেন। এই প্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশ, উপাচার্যদের নিয়োগ করতে হবে এক সপ্তাহের মধ্যেই। মামলাটির পরবর্তী শুনানি ৩০ এপ্রিল। বাংলার শিক্ষানুরাগীরা আশা করেন, তার আগেই রাজভবন এবং রাজ্য সরকার উভয়েই রাজনৈতিক সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠতে আন্তরিক হবে। সহমতের ভিত্তিতেই দ্রুত পূরণ হবে রাজ্যজুড়ে উপাচার্যের অনেকগুলি শূন্যপদ। এই তিক্ত অধ্যায়ের পুনরাবৃত্তি রাজ্যবাসী আর চান না।