বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
ঠিক সময়ে ঠিক বার্তাই দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও অনেক দিন যাবৎ একই অভিপ্রায় ব্যক্ত করে আসছেন। সত্যিই তো অর্থনীতির চাকা সচল রাখার বিকল্প তো কিছু হবে না। মানুষের হাতে টাকা চাই। টাকা-পয়সা হাতে না-পেলে মানুষ কিনবে কী করে? প্রয়োজনের পরিষেবা নিয়ে দাম মেটাবে কীভাবে? এই যে পণ্য, পরিষেবা ও অর্থের কথা আমরা ভাবছি, সবাই মিলে অনন্তকাল ঘরে বসে থাকলে সেসব জুটবে না। তার জন্য মানুষকে পথে বেরতে হবে, কাজে যেতে হবে। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষণা সংস্থা সবেতেই তালা ঝুলছে। শিক্ষা এবং গবেষণা অনির্দিষ্টকাল থমকে রেখে কোনও সভ্য সমাজের পক্ষে এগনো অসম্ভব। আমাদের সভ্যতা এসেছে চাকায় ভর করে, চাকায় ভর দিয়েই এগচ্ছে। সহজ করে বলা যায়, যানবাহন বা পরিবহণ ব্যবস্থাই হল আজকের সমাজ-অর্থনীতির জিয়নকাঠি। সুতরাং সবকিছু ঠিক রাখতে হলে পরিবহণের চাকা সামনের দিকে গড়িয়ে নিয়ে যেতেই হবে। পরিবহণের চাকা যত গড়াবে, তাতে যত বেশি গতি আসবে, সমাজ-অর্থনীতি তত সচল এবং স্বাভাবিক হবে।
আমাদের গরিব দেশ। পশ্চিমবঙ্গও ব্যতিক্রম নয়। গণপরিবহণই বেশিরভাগ মানুষের ভরসা। সরকারি বেসরকারি বাস, ট্যাক্সি, অটোরিকশ, ফেরিসার্ভিস প্রভৃতির ভরসাতেই মানুষ কর্মস্থলে যায় এবং অন্যান্য প্রয়োজন মেটায়। তাই রাজ্য সরকার ধীরে ধীরে পরিবহণ ব্যবস্থাকে স্বাভাবিক করার উপর গুরুত্ব দিয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতির সীমাবদ্ধতার কারণ দেখিয়ে বেসরকারি পরিবহণ মালিকরা বাড়তি ভাড়া দাবি করেছিলেন। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার তাতে রাজি হয়নি—পুরনো ভাড়াতেই গাড়ি চালাতে বলেছে। সরকার ঠিকই করেছে। কারণ, এমনিতেই গরিব ও মধ্যবিত্ত শ্রেণী চরম অর্থসঙ্কটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এইসময় গাড়ি চড়ার খরচ বাড়িয়ে দিলে সেটা হতো মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা! সুখের কথা, সরকারের আন্তরিক তৎপরতায় বৃহস্পতিবার থেকে কিছু রুটে পুরনো ভাড়াতেই বেসরকারি বাস নেমেছে। কিছু সরকারি বাস আগেই চালু হয়ে গিয়েছে। চালু হয়েছে ফেরিসার্ভিসও। স্বাভাবিক জীবনে ফেরার আশাই তৈরি হচ্ছে। এবার আমাদের সকলের দায়িত্ব হল, এইসময়ের জন্য নির্দিষ্ট বিশেষ স্বাস্থ্যবিধি সকলকেই মানতে হবে এবং আরও কঠোরভাবে। না-হলে বিপরীত ফল হতে পারে। তখন ফিরতে থাকা এই ছন্দ রক্ষা করা সরকারের পক্ষেও কঠিন হবে।