বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
সবাই বুঝে গিয়েছেন, করোনার বিরুদ্ধে লড়াইতে আত্মতুষ্টির কোনও জায়গা নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশমতো বিভিন্ন দেশের সরকার এই বিষয়ে যেসব পরামর্শ দিচ্ছে সেগুলি গুরুত্ব দিয়ে মান্য করা শুধু উচিত নয়, অবশ্যকর্তব্য জ্ঞান করতে হবে। ধনী গরিব, শিক্ষিত অশিক্ষিত প্রভৃতি কারও ক্ষেত্রেই অন্যথা করার সুযোগ নেই। ব্যাপারটিকে হালকাভাবে নেওয়ার পরিণাম করোনা ভাইরাস সবচেয়ে বেশি টের পাইয়ে দিয়েছে ইউরোপ এবং আমেরিকাকে। ‘দিল্লি ব্লান্ডার’ বাদ দিলে এই লড়াইতে তুলনায় ভারতের ভূমিকা বেশ ভালো। সবচেয়ে প্রশংসা প্রাপ্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পশ্চিমবঙ্গের। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী এই প্রশ্নে নিরলস ও আপসহীন। তাঁর প্রতিটি বার্তা এবং পদক্ষেপের ভিতরে দূরদর্শিতার ছাপ রয়েছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেবল রোগ নিয়ন্ত্রণেই তাঁর উদ্যোগ সীমায়িত করেননি। তিনি বিশেষভাবে উদ্যোগী হয়েছেন অর্থনৈতিক সঙ্কট কাটিয়ে ওঠার ব্যাপারেও। এটি একজন যথার্থ নেতার মতোই ভাবনা। কারণ, করোনা রোগ থেকে আমরা মুক্ত অবশ্যই হব। কিন্তু ঠিক কবে, সেই উত্তর কারও কাছে নেই। অথচ, এই অনির্দিষ্টকাল আমাদের সকলের ক্ষুধার জোগান দিয়ে যেতে হবে সরকারকে। দেখতে হবে বাকি অনেক সুবিধা-অসুবিধাও। তার জন্য প্রয়োজন বিপুল অর্থের। আর বিরাট বিজয়ের পর আমাদের খাদ্যভাণ্ডার থেকে অর্থভাণ্ডার—অনেককিছুই কাঁকড়ার খোলার মতো শূন্যগর্ভ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। কিন্তু সে তো কোনও কাম্য পরিস্থিতি বা চিত্র নয়। মুখ্যমন্ত্রী চাইছেন বাংলাসহ সারা ভারতকে এই সম্ভাব্য হতাশা থেকে দ্রুত বের করে আনার উপায় সন্ধান করতে। সেটা করতে হলে যে আর এক মুহূর্তও হাত গুটিয়ে বসে থাকা চলে না। এজন্য স্ব স্ব ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে এগনোই হল সেরা পথ। মঙ্গলবার তাই তিনি একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে দিয়েছেন। কমিটিতে উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি থাকছে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রাক্তন আঞ্চলিক অধিকর্তা স্বরূপ সরকারের। তাঁদের সহায়তা করবেন রাজ্যের দুই প্রখ্যাত চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরী ও সুকুমার মুখোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে আরও যেসব কৃতী বাঙালি রয়েছেন এই কমিটিতে পরে তাঁদের মধ্যে থেকেও অনেককে রাখা হবে। উদ্যোগটি শুধু প্রশংসনীয় নয়, সারা পৃথিবীর কাছে মডেল হওয়ারও যোগ্য। মোদি সরকারের উচিত, মুখ্যমন্ত্রীর এই ভাবনাটিকে উদার মনে গ্রহণ করা। অন্য রাজ্যগুলিকেও তাতে অনুপ্রাণিত করা। প্রশ্ন যখন দেশকে বাঁচানো, তখন সবরকম সঙ্কীর্ণতাই বর্জনীয়। দেশ যদি আন্তরিকভাবে এই সঙ্কল্প নিতে পারে তবে করোনা-পরবর্তী ভারতের পুনর্গঠন খুব কঠিন হবে না। ইউরোপ, আমেরিকাসহ সারা পৃথিবীর কাছেই দৃষ্টান্তস্বরূপ হয়ে উঠতে পারে ভারত।