বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
আপাতত আর মাত্র দু’সপ্তাহ। কিন্তু তারপর! এই আগামীর চিন্তা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা এখন মাথা কুটে মরছেন। কারণ, এই মারণ এই ভাইরাসের শেষটুকুও ফের বিধ্বংসী হয়ে উঠতে পারে। তাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে এ নিয়েই আলোচনা করেছেন। লকডাউনকে দেশবাসী যেভাবে অবজ্ঞা করেছে, সেখানে এটা উঠে গেলে কী ঘটতে পারে, তা ভাবলেও শিউরে উঠতে হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো বারবার বলছেন, একমাস পরেও এই ভাইরাস আবার মাথাচাড়া দিতে পারে। তাহলে? আমাদের ভবিষ্যৎ কী হতে চলেছে, সেকথা নিয়ে সত্যিকারের ভাবনা এই মুহূর্তে প্রয়োজন। এটাও ঠিক যে, অনির্দিষ্টকালের জন্য লকডাউন করে দেশকে বসিয়ে রাখা যায় না। উৎপাদন, অর্থনীতি, সামাজিক ভারসাম্য সবই প্রভাবিত হচ্ছে এর জেরে। কিন্তু, উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে পা ফেলতে গেলে, এছাড়াও বিকল্প পথ নেই। শুধুমাত্র সরকারি নির্দেশটুকু মেনে চললেই হবে।
যদি অমান্য করি তাহলে কী হবে, সেকথা মোটের উপর অনেকেই জানেন। পৃথিবীর উন্নত দেশ বলে এত যুগ ধরে কলার উঁচু করে চলা আমেরিকার ‘দাদাগিরি’ ঘুচিয়ে দিয়েছে আণুবীক্ষণিক ‘মৃত্যুদূত’ করোনা। ১৯৪৫ সালে যারা বিজ্ঞানের বলে বলীয়ান হয়ে জাপানের দু’টো শহর ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছিল, আজ ২০২০ সালে তারাই দেশরক্ষার মরিয়া চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। অথচ, ভারতের তুলনায় তাদের লোকসংখ্যা কত কম! একটি সমীক্ষার হিসেবে দেখা যাচ্ছে—আমেরিকার জনঘনত্ব প্রতি বর্গকিমিতে মাত্র ৩৬। সেখানে ভারতের জনঘনত্ব প্রতি বর্গকিমিতে ৪২০-র মতো। আর ইতালির ২০৬, চীনের ১৪৫, জার্মানির ২৪০, স্পেনের ৯৪। চোখ কপালে উঠলেও সমীক্ষার রিপোর্ট বলছে, সেখানে কলকাতায় প্রতি বর্গকিমিতে ২৪ হাজার ও প্রতি বর্গমাইলে ৬৩ হাজার মানুষ বসবাস করেন। অতএব, বোঝার কোনও অসুবিধা নিশ্চয় নেই যে, ফের একবার সংক্রমণ ঘটলে কলকাতা ভুষণ্ডীর মাঠ হতে ক’দিন সময় নেবে? ফলে, লকডাউনের শেষে কী করণীয়, তা এখন থেকেই ভেবে উপায় বের করতে হবে। ‘বেঁচে’ থাকলে সমালোচনা, রাজনীতি, বিরুদ্ধাচারণের সময় পাওয়া যাবে। দেখা যাচ্ছে, এখনও একদিকে নরেন্দ্র মোদি, অন্যদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভুল ধরে চলেছেন কংগ্রেস ও সিপিএমের মতো ‘চোখে আঙুল দাদা’রা। সমালোচনা-নিন্দার কী এটাই সময়! কাজ করলেই ভুল হবে—আর ঠান্ডা ঘরে বসে সংবাদমাধ্যমের সামনে বাক্যবাণ বর্ষণ করায় কোনও ঝুঁকি নেই। কিন্তু, যাঁরা এটা করছেন, তাঁরা বুঝতে পারছেন না, এর ফলে তাঁরাও মানুষের কাছ থেকে আরও বেশি করে সামাজিক দূরত্বে চলে যাচ্ছেন। করোনার প্রাদুর্ভাবের মতো এরাও একদিন মানুষের মন থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।