কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। উপার্জন ভাগ্য ভালো। কর্মে উন্নতির যোগ আছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা মিলবে। ব্যবসা ... বিশদ
প্রত্যাশা ছিল ‘স্বচ্ছ ভারত’-এ মুদ্রার ক্ষেত্রে অন্তত স্বচ্ছতা থাকবে। জাল নোটের রমরমায় সেই প্রত্যাশা দুরাশা মাত্র। দেশের শাসক আরও অনেক কিছুর মতোই এক্ষেত্রেও এমন কোনও নিশ্চয়তা দিতে পারেনি যাতে একেবারে চোখ বুজে নিশ্চিন্তে ২০০০ টাকা বা ৫০০ টাকা গ্রহণ করতে পারে ভারতবাসী। বিশেষত, ২০০০ টাকার নোট গ্রহণের ক্ষেত্রে তাঁদের ভাবনা চিন্তা করতে হচ্ছে—নোটটি জাল নয় তো? অনেক মানুষের কাছেই একটি ২০০০ টাকার নোটের মূল্য অনেকখানি। এখন এটিএম থেকে পাওয়া ২০০০ টাকার নোট নিয়েও সাধারণ মানুষ কিন্তু নিশ্চিন্ত থাকতে পারছেন না। কোনও অসাধু উপায়ে এটিএম-এ জাল নোট প্রবেশ করলে মানুষের হাতে সেই টাকাটি চলে যাওয়াও একেবারে অসম্ভব নয়। এমন নজির যে নেই তাও হলফ করে বলা যায় না। মানুষের এই দুশ্চিন্তা কাটানোর দায়িত্ব কিন্তু সরকারেরই। প্রয়োজন সরকারি তৎপরতা।
ভালো কথা যে, পশ্চিমবঙ্গে জাল নোট ছড়ানোর মূল মাথাসহ তার এক সহযোগী ধরা পড়েছে। উদ্ধার হয়েছে বিপুল অঙ্কের জাল নোট। একাধিক এজেন্টের মাধ্যমে তারা নকল নোট কলকাতাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাঠানোর কারবারে জড়িত ছিল বলে পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে। বিগত কয়েক দিনে কলকাতায় জাল নোট নিয়ে এসে একাধিক ব্যক্তি গ্রেপ্তার হয়েছে এসটিএফ-এর হাতে। নকল নোটের কারবারিদের সঙ্গে মুঙ্গেরের বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্রের কারবারিদের যোগ পাওয়া গিয়েছে বলে সংবাদে প্রকাশ। রাজ্যজুড়ে জাল নোটের নেটওয়ার্কটি কীভাবে চালানো হয় তা জানার চেষ্টা করছে পুলিস। এই কারণেই ধৃতদের হেপাজতে নেওয়ার জন্য পুলিস আদালতে আবেদন করে এবং বিচারক তা মঞ্জুর করেন। ইতিমধ্যেই যেসব তথ্য প্রকাশ পেয়েছে তাতে স্পষ্ট হয়েছে সমস্ত অপারেশন চলছে মালদহ থেকে। তাই, ওই জেলাটিকে বিশেষভাবে নজরদারির আওতায় আনা প্রয়োজন। প্রতিবেশী দেশের জাল নোটের কারবারিরা যাতে ঘুরপথে সীমান্ত দিয়ে এদেশের কোনও জায়গায় নকল নোট ছড়িয়ে দিতে না পারে সেই বিষয়ে কড়া পদক্ষেপ নিতে হবে প্রশাসনকে। ভুললে চলবে না, রাজ্যজুড়ে জাল নোটের কারবার চললেও সমস্যাটি শুধু রাজ্যের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে না, তা ছড়িয়ে পড়তে পারে অন্যত্রও। ভোটের মুখে এই সমস্যাটি মারাত্মক আকার যাতে নিতে না পারে তার জন্য প্রশাসনকে সদা সতর্কই থাকতে হবে। কারণ, জাল নোটের সঙ্গে অস্ত্র কারবারিদের যোগ থাকার বিষয়টিও যথেষ্ট চিন্তার কারণ। তাই, ধরপাকড় আর কড়া নজরদারির মাধ্যমে যে-কোনও মূল্যে জাল নোটের রমরমা আটকাতেই হবে। বাস্তব পরিস্থিতি হল—সাধারণ মানুষ অর্থাৎ ভোটারদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে এই বিষয়টি। ভোট এবং ভোটারের স্বার্থে কেন্দ্র এবং রাজ্যের প্রশাসনকে জাল নোটের রমরমা বন্ধে সদর্থক পদক্ষেপ গ্রহণ করতেই হবে।